অনেক দিন পর এ শহরে ফেরা
তাই বুঝি নতুন বউয়ের মত লাজুক ঘোমটা
ঠিক চেনা চেনা কিছুটা অজানা বাতাস ওঠে
কিছু পুরনো পাতা ঝরে গেছে
কিছু ঝরে পরা পাতা উড়ছে
কয়েকটা বছর হুড়মুড় করে পিছিয়ে গিয়ে
বসে আছি জয়নালের টঙ দোকানের বেঞ্চিতে।
পৌষের সকাল
চাদর গায়ে লোকালয় ঘুমায়
দূরে শিউলী তলা ঝরে পড়া ফুল
রাতভর সুখ সুরভী ছড়ানো
এক মুঠো রঙীন স্বপ্ন।
দূরে
হারেছের মার মৃদু কন্ঠে আদুরে বারণ
বাছাধন এই ঠান্ডায় খালি পায়ে যাসনে
হারেছ তবু খালি পায়ে বের হয়, দৌঁড়ায়
মাঠে ঘাটে বনে বাদারে
সাত বেদেনীর ঘাটে
অবাক ময়ূরী পেখম তুলে নাচে
তার স্বপ্ন নাচে
আকাশে বাতাসে ঈষানে।
স্বপ্নের পিছুটানে
একদিন হারেছ হারায়
সাত বেদেনীর ঘাটে
তার স্বপ্ন হারায়
নদী থেকে সাগরে
জলের গভীরে অতল শরীরে
কোন এক বসন্তের
পাতা ঝরা দিনে
ফিরে আসে স্বপ্ন জাদুকরের
অবাক বাঁশিতে।
হারেছের স্বপ্ন বুকে নিয়ে
কেউ কেউ যৌবনে হারায়
কেউ হারায় যৌবনের সন্ধিক্ষণে
অলির গানে গানে
জীবন রবির মায়াকাননে।
হারেছের টুকরো স্বপ্ন বুকে ধারণ করে
একদিন এ শহরে অলির পথে নেমেছিলাম
সেদিন ফুলের বনে এক আস্ত অপ্সরা দেখে
আমার মাথা কয়েক ডিগ্রী ঘুরে গিয়েছিল
তারপর সেই অপ্সরার অন্বেষায়
ঘুরতে ঘুরতে এ পথ ও পথ করতে করতে
চারদেয়ালে ঘেরা এক কারাগারে
আটকে যাই।
অনেক তপস্যার পর মুক্তি মেলে
এরপর স্বেচ্ছা নির্বাসনে গেলে
যমদূত আমার পথ ছেড়ে ভিন্ন পথে পা বাড়ায়
এই নির্বাসন সে আর এক যাবজ্জীবন কারাদন্ড
সে আর এক বিদেশ বিভূঁই
মুক্তি যেখানে শুক্তি তলে চিরঘুমন্ত।
আজ এ শহরে ফিরে একটা দৃশ্যই চোখে ভাসছে
শহরে দেয়ালের পর দেয়াল বেড়েছে
সারিবদ্ধ বৃক্ষরাজি চলে গেছে দূর থেকে দূরে
কেউ গেছে আমার মত স্বেচ্ছা নির্বাসনে
কেউ গেছে জলের টানে মাটির ঘ্রানে।
আমার সেই চলে যাওয়া বা ফিরে আসা
বিস্ময় বিমূঢ় অপ্সরা কি জানে!