চীনে বাদুরের ভাইরাস করোনা এখন মানুষের শরীরে ভর করেছে তার প্রধান কারণ হচ্ছে তাদের খাদ্যাভাস। চীনাদের অনেক প্রধান খাবারই অল্প আঁচে রাননা করা হয় বা সিদ্ধ করে খাওয়া হয়। সাধারণত আমরা জানি যে পানিতে যতই তাপ দেওয়া হোক না কেন তার তাপমাত্রা কখনই ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশী বাড়ে না। তবে এর মধ্যে লবণ দ্রবিভূত হলে কিছুটা বাড়ে। যদিও পানি ফুটালে বেশীর ভাগ ব্যাকটেরিয়া মারা যায় তা কমপক্ষে ১০ মিনিট ফুটাতে হয়। তবে মাংস বা হাড়ের অভ্যান্তরের তাপমাত্রা অল্প আঁচে নাও বাড়তে পারে আর বেশিক্ষন রান্না না করায় কিছু জীবানু বেচে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু না। তবে আমরা যেভাবে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাবার খাই তাতে সেই সম্ভাবনা নাই বললেই চলে। একটাই সম্ভবনা শুধু হাচি, কাশি বা থুতু থেকে বা একই গ্লাসে পানি খেলে এই রোগ ছড়ানোর সম্ভবনা থেকেই যায়।
যাই হোক আমার উদ্দেশ্য এসব নিয়ে ঘ্যান ঘ্যান করা না, এগুলো সবাই আমার চেয়ে ভালোই জেনে গেছেন। আমি শুধু এখানে একটা সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। করোনার কারণে কিছুটা হলেও চীনের রফতানিতে টান পড়েছে আর চীনের কিছুটা মানেই বাংলাদেশের অনেক বিরাট কিছু। সেটা তৈরী পোষাক থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিকস বা খাদ্যপণ্য অনেক কিছুই হতে পারে। তবে খাদ্যপণ্যের সুযোগটা সবচেয়ে বেশী। বিশেষ করে লবণ, আলু, চিংড়ি, সামুদ্রিক মাছ, তেলাপিয়া আর পাংগাস। কানাডাতে দেখলাম চাইনীজ তেলাপিয়া দিয়ে সয়লাব, পাংগাসতো আমেরিকাতেও ভালো চাহিদা আছে। এগুলো বাংলাদেশে ব্যাপক হারে চাষ হয় কিন্তু চাহিদা নিতান্তই কম হওয়ায় দাম অনেক কম। আলুর মৌসুমে আলু পঁচে নষ্ট হয়। এছাড়াও পেট ফুডের সাপ্লাইও কিন্তু কম না, বাংলাদেশ থেকে গরু ছাগল, মুরগী এমন কি মাছের নাড়ি-ভুড়ি পর্যন্ত চীনে রফতানি হয় যা দিয়ে ওরা পেট ফুড বানািয়ে রফতানি করে। এটাও কিন্তু অনেক বড় অংকের বাণিজ্য যা সহযেই আমরা আয়ত্ত করতে পারি। মাছের আঁশ দিয়ে একধরণের রেজিন বানায় যা বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য আর আমাদের দেশের অধিকাংশ মাছেই আঁশ থাকে।
Bangladesh now world's 3rd inland fish producer - Daily Star
ডেইলি ষ্টার এর রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে বছরে মাছের উৎপাদন ৪১ লাখ টন যা থেকে অন্তত ১ লাখ টন আঁশ ও আরও ১ লাখ টন নাড়ি-ভূড়ি আমরা বর্জ্য আকারে পাই যা থেকে বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বাণিজ্য হতে পারে যা ইতিমধ্যে চীন করে যাচ্ছে। একই ভাবে পোল্ট্রির উৎপাদনও কিন্তু কম না। মুরগির নাড়ি-ভূড়ি পেট ফুড ও পালক থেকে কৃত্তিম তুলা ও তন্তু ও তাপ নিরোধক তৈরী হয় যা জ্যাকেটের ভেতরে ব্যাবহৃত হয়। পশু-পাখি ও মাছের নাড়ি-ভূড়ি থেকে কিন্তু সার্জিক্যাল সুতাও তৈরী হয় যেটাতে চীন এখন এক নম্বর রফতানিকারক। এটাও কিন্তু চায়নার একচেটিয়া বাণিজ্য। অতএব সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলে সম্ভাবনা অনেক।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৪