প্রাচীন কাল থেকেই ১৩ সংখ্যাটিকে নিয়ে নানা মিথ প্রচলিত আছে। তবে এ মিথ যতটা না ইতিবাচক তার চেয়ে অনেক বেশি নেতিবাচক। রোমানরা ১৩ সংখ্যাটিকে মৃত্যু এবং ধ্বংসের প্রতীক বলেই মনে করত। বর্তমানেও এটা সাধারণ মানুষের কাছে আনলাকি ১৩ হিসেবেই পরিচিত। তবে জ্যোতিষশাস্ত্রে ১৩ একটি রহস্যময় সংখ্যা। এর সাথেও আধ্যাত্মিকতার যোগসূত্রও আছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। যাইহোক, আমাদের প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ জন্মেছিলেন এই ১৩ তারিখেই। তাঁর লেখা, জীবনাচার এবং তাঁকে ঘিরে আবর্তিত ঘটনাবলীর মধ্যেও এক ধরনের রহস্যময়তা বিরাজমান। তাঁর সৃষ্ট চরিত্র বিশেষ করে বাকের ভাই, মিসির আলী এবং হিমু সহ অসংখ্য চরিত্র আছে যাদের জীবনাচার এক রহস্যময়তায় আচ্ছন্ন। তাঁর প্রিয় জায়গা নুহাশ পল্লীকে ঘিরেও কম রহস্য তৈরি হয়নি। এমনকি তাঁর মৃত্যুর মধ্যেও রহস্যময়তা আছে। এসবের কিছু তিনি নিজেই তৈরি করেছেন, আর কিছু তাঁকে ঘিরে তৈরি হয়েছে। অন্য অনেক কারণের পাশাপাশি তাঁর জনপ্রিয়তার পেছনে এই রহস্যময়তাও একটা কারণ। (ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁকে খুব একটা পছন্দ করি না। কারণ সে আমার জীবনের অনেক অনেক সময় কেড়ে নিয়েছে। অনেক অনেক রাত আমাকে নির্ঘৃম কাটাতে হয়েছে তাঁর বই পড়ে। তিনি যদি এই বইগুলো না লিখতেন তাহলে হয়ত এতগুলো রাত আমাকে নির্ঘুম কাটাতে হতো না। নিশ্চয়ই এব্যাপারে তাঁকে অপরাধী বলা যায়! কিন্তু এর পরেও আমার কেনা সর্ব শেষ ৩টি বইয়ের লেখকের নাম হুমায়ূন আহমেদ!!) হ্যাঁ, অন্তত আমার কাছে এই ১৩ সংখ্যাটির জন্যই তিনি অনেক বেশি প্রিয় মানুষ। কারণ এই সংখ্যাটির রহস্যময়তায় আমি আচ্ছন্ন। সবার কাছে আনলাকি হলেও তাতে কিছু যায় আসে-না আমার। হয়ত হুমায়ূন আহমেদের কাছেও এটি প্রিয় ছিল বলেই তিনি তাঁর চারপাশে রহস্য বিস্তার করতে পছন্দ করতেন, আনন্দ পেতেন। তাঁর দেহবিহীন আত্মার প্রতি আনলাকি থারটিনে জন্মদিনের শুভেচ্ছা রইল, অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:০৭