অফিসে আজ কাজের চাপ একটু কম। কাজের চাপ কম থাকলে আমার গান শোনতে ইচ্ছে হয়। হেডফোন লাগিয়ে মজা করে রোমান্টিক গান প্লে করে দিলাম।
গানের কথাগুলো হৃদয়ে শিহরণ জাগানো- "নীলাঞ্জনা, ঐ নীল নীল চোখে চেয়ে দেখ না"
এই গান একা শোনে মজা নাই। সামনে একটা নীলাঞ্জনা মেয়ে থাকা উচিৎ। কিন্তু এই বেলায় মেয়ে পাব কোথায়? অফিসের কলিগ একটাও নীলাঞ্জনা না। সব কয়টা ক্যাকটাস! আপাতত দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালে মন্দ হয় না। চোখ বন্ধ করে একটা মেয়ের কথা ভাবতে ভাবতে গানটা শোনা যায়।
চোখের পাতা মাত্র বন্ধ করেছি ধুম করে দরজা খুলে রুমে ঢুকলো শীলা। হাই-হেলো কিংবা কোন সৌজন্যতা-ভুমিকা ছাড়াই জিজ্ঞেস করলো,
"এই তোর কাছে লাইটার আছে?"
"লাইটার দিয়ে কী করবি?" অনেকটা শংকিত কন্ঠ আমার।
"সিগারেট ধরাব"
"তুই সিগারেট ধরলি কবে থেকে?"
"ধরিনি এখন ধরব, লাইটার দে"
"অফিসে স্মোক করা নিষেধ"
"তোর আইনের খেতাপুড়ি, লাইটার দে নইলে মাথা ভাঙ্গবো"
মহা মুশকিলে পড়লাম। শীলা একাধারে আমার বন্ধু এবং প্রেমিকা। প্রচণ্ড জেদি। হুটহাট আরো কয়েকবার আমার অফিসে এসেছে। এটা এমন কিছু না। কিন্তু হঠাৎ কী এমন হলো ওর সিগারেটের নেশা চাপল? ও তো সিগারেট দেখতেই পারে না। আপাতত কোন প্রশ্নের উত্তর পাব না। অপেক্ষা করতে হবে। ও নিজে থেকে বলা পর্যন্ত।
শীলা সিগারেট ধরালো। সিগারেটে আয়েশী টান দিয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোয়া উপরের দিকে ছাড়ছে। আমি চেয়ে চেয়ে দেখছি। সুন্দরী মেয়েদের সব কিছুই সুন্দর। শীলা কোনদিন সিগারেট খায় নি। আজ সিগারেট হাতে শীলাকে অপরুপা লাগছে। হঠাৎ উঠে দাড়াল। অর্ধেক খাওয়া সিগারেটের টুকরোটা পায়ের তলায় ফেলে জুতা দিয়ে পিস্ট করে একটা হুংকার দিল,
"এই শালা, বৃষ্টির মধ্যে মাথায় অন্য মেয়েদের ঢুকিয়ে রোমান্টিক গান শোনছিস কেন? আজ তোকে খুন করে ফেলব...!"
স্বপ্নটা এতটুকুই। শীলার হুংকারে ঘুম ভেঙ্গে গেছে। থরথর করে কাপছি। শীলা ভয়ংকর জানি। কিন্তু এতটা ভয়ংকর আগে জানতাম না! স্বপ্নের মধ্যেও একটা ভাবনায় আঘাত হানে তার ভালবাসার ছুরি! এক গ্লাস পানি খাওয়া দরকার। গলা শুকিয়ে গেছে।...
এক্ষুনি শীলার কাছে যেতে হবে...বাই!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:২৫