তখন বাংলাদেশে লুঙ্গি প্রায় ছিলই না। সবাই লেঙ্গি পরতো। লেঙ্গি হচ্ছে অনেকটা ধুতির মত। তবে ধুতি অনেক বড়। লেঙ্গী ছোট এক টুকরো কাপড়। কোনমতে মেইন জিনিষটা ঢেকে রাখা যেত!
পুরো গ্রামের মধ্যে দুই তিনটা লুঙ্গি ছিল। সাবুল দাদার একটা ছিল। সব সময় যত্ন করে রাখতেন। কোন অনুষ্ঠান হলে বা কোন মেহমান বাড়িতে যেতে গ্রামের লোকজন ভাড়া নিত।
লুঙ্গির অনেক সুবিধা আছে এই পোশাকটি একের ভিতরে অনেক। চাইলে একেবারে পায়ের পাতা পর্যন্ত ঝুলিয়ে জমিদার স্টাইলে হাটতে পারবেন। চাইলে মালকোচা মেরে প্যান্টের কাজ চালাতে পারবেন। মনে করুন আপনার শর্টপ্যান্ট থেকে সুরভী ছড়াচ্ছে। সেই সুরভী আপনি সহ্য করতে পারলেও আপনার আশেপাশের কেউ পারছে না। চিন্তা কী লুঙ্গিটাকে মালকোচা মেরে তার উপরে প্যান্ট পরুন। ভুড়িওয়ালাদের জন্য সুখবর। খাওয়ার পরে যাদের কোমর ৩৮ ইঞ্চি থেকে ৪৩ ইঞ্চি হয়ে যায় তাদের জন্য লুঙ্গি সবচেয়ে ভাল। ইচ্ছেমত খাইতে পারবেন। কোমর ৪৩ কেন? ৪৯ হয়ে যাক আপনি সহজে লুঙ্গি খুলে সাইজ মত করে নিতে পারবেন। প্যান্ট পরে এই সুবিধা পাবেন না।
পাশের বাড়ির রতন চাচা বিয়েতে যাবেন। সাবুল দাদার কাছে এসেছেন লুঙির জন্য। মেয়ের বাড়িতে পিঠা নিয়ে যাবেন। দাদা লুঙ্গি দিলেন এবং লুঙ্গি পরার নিয়ম বলে দিলেন। বললেন, রাতে ঘুমুতে যাওয়ার আগে খুব সাবধান। গিট্টু চেক করতে হবে কয়েকবার। রঁশি বা দড়ি দিয়ে কোমরে বেধে নিলে ভাল হয়।
রতন কাকা কয়েক রাউন্ড চক্কর দিলেন। লুঙ্গি পরে হাটা প্র্যাকটিস করলেন। এক হাতে পিঠার ব্যাগ অন্য হাতে তরকারীর হাঁড়ি নিয়ে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটতে লাগলেন।
মেয়ের ঘরের দরজায় পৌঁছতেই নাতি দৌড়ে এল। রতন চাচা হাতের পিঠার পোটলা নাতির দিকে বাড়িয়ে দিলেন। নাতি পোটলা হাতে নিয়ে তৎকালীন বিজ্ঞানের আশ্চর্য আবিষ্কার লুঙ্গির দিকে থাকিয়ে আছে। রতন চাচা খুব গর্ব করে দরজায় দাড়িয়েই লুঙ্গির উপকারিতা বর্ননা করতে লাগলেন। লেকচার শেষ করে নাতিকে জিজ্ঞেস করলেন “বুঝেছ?” নাতি বলল, “সব বুঝেছি নানা। কিন্তু লুঙ্গির ভিতরে ইঁদুর নড়াচড়া করে কেন? এটা বুঝি নাই।”
রতন চাচা নিচে থাকিয়ে দেখলেন আলোর সামনে দাড়ানোর কারনে পাতলা আরামদায়ক লুঙ্গিটা এক্সরে রিপোর্ট হয়ে গেছে। অন্দর মহলের সব কিছুর উপস্থিতি নিখুঁতভাবে দেখিয়ে দিচ্ছে। নাতি সেই রিপোর্ট নিয়েই গভেষণায় মগ্ন। ……
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৫