ফাসির মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে গণ আদালতে ।বিশাল মাঠ লোকে লোকারণ্য ।এই গণ ফাসি দেখবার অনুভুতি একটি বাঙালিও কোনভাবেই মিস করতে চায় না ।সারাদিন ব্যাপী চলবে।
কারণ রাজাকারের লম্বা লাইন । অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী উল্টোদিক থেকে আসামীদের ফাসি দেওয়া হবে যাতে সব চেয়ে বড় অপরাধী তার মৃত্যুর আগ মুহূর্ত গুলো আরও বেশি উপলব্ধি করতে পারে তার গোত্রীয় ভাইদের শাস্তি দেখে।
মৃত্যুর শেষ অনুরোধ হিসেবে কয়েকজন রাজাকার দেশবাসীর কাছে স্বীয় কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছে আর তাদেরই পরবর্তী প্রজন্ম এবং সহকর্মী যারা রাজাকার নয় শুধুই ধর্মীয় অনুভুতি থেকে এই রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ,তাদের কাছে বার্তা দিতে চাচ্ছে ধর্ম নিয়ে আর কোনো রাজনীতি যেন তারা না করে।তাদের মুখেও আজ এই বোল "ধর্ম যার যার ,দেশ সবার ।" জামাতের নব নিযুক্ত নেতারা ঘোষণা করসে জামাত আজ থেকে শুধুই ধর্ম ভিত্তিক দেশের স্বাধীনতার পক্ষের একটি রাজনৈতিক দল । তারাও আজ তাদের অন্ধ চেতনা থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে দেশের সার্বভোমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এই প্রশ্নে আপোষহীন ।
বিভিন্ন দলের এবং পেশাজীবির সুশীল সমাজ কে দেখা যাচ্ছে মঞ্চের পেছন দিকে ।
খালেদা - হাসিনা আজ এক সাথে অনেক দিন পর এই মঞ্চের অন্য দিকে ।এক সাথে বলে উঠেছে " জাতীয় স্বার্থে আমরা এক এবং অনন্য বাংলাদেশী ..আমরাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ।"
তারাও আজ বলছে "দল যার যার ,দেশ সবার ।"দেশের মানুষের কাছে আকুতি করছে আরেকটি বার তাদের সুযোগ দেবার ।তারা সন্ত্রাস আর দুর্নীতির মহামারী থেকে দেশকে এবার বাচাবেই বাচাবে ।
লেজুরভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি থেকে সব শিক্ষাঙ্গনকে মুক্ত করবে ।
তারা ঘোষণা করছে আজ থেকে রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ ।রাজাকার শব্দটা এখন থেকে আমাদের ইতিহাসের পাতায়ই থাকবে ।কোনো অবুঝ শিশুও আর কখনো কাউকে গালি দিবে না "তুই রাজাকার " বলে । কারণ তারা বুঝে গিয়েছে এটা খুব বাজে রকমের একটা গালি । খালেদা - হাসিনার আকুতির প্রতিধ্বনিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে ।
জনগণ এক সাথে বলে উঠেছে "বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা এই জনতা ।"
ঘুম ভাঙ্গার পর বুঝলাম এটা নিছকই স্বপ্ন ছিল ।
কিন্তু একটা কল্পকাহিনী নয় , স্বপ্ন । গণ জাগরণের স্বপ্ন ।জানি এধরনের স্বপ্ন অযৌক্তিক কিন্তু স্বপ্ন দেখা তো অন্যায়ের কিছু নয় ।
গণ জাগরণ থেকে আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল এটাও আমাদের অন্যায়ের কিছুই নয় ।এখনো আশা ছাড়ি নাই । সত্য হতেও পারে ।।
ঘুম থেকে উঠেই বিএনপি নেত্রীর হতাশাজনক বক্তব্য আমার স্বপ্নে পানি ঢাললেও জামাতীদের সংগ্রামী আগুনে ঘি ঢাললো ।নোংরা রাজনীতি থেকে বের হবার মত আতবিশ্বাস যেমন নেই ,তেমনি সরকারকে বিশ্বাস করার মত কারণ ও হয়ত বা তাদের কাছে নেই ।
অন্যদিকে গণজাগরণে প্রথম দিকে জাগরণের নেতার মুখ দেখা না গেলেও পরের দিকে ডাক্তার ইমরানকেই মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে দেখা গেল । কিন্তু আজকের প্রথম আলো তে ডাক্তার ইমরানের পাশে নেতৃত্বের কাতারে যাদের দেখা গেল সেটাও আরও হতাশাজনক ।প্রথম আলোর নিউজ "পতাকা উত্তোলনের পর বেলা ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের প্রতিবাদে মিছিল বের হয়।
মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ. বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি বাপ্পাদিত্য বসু, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান তারেক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি রাশেদ শাহরিয়ার, জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি হুসাইন আহমেদ তফসির প্রমুখ।"
অন্য দিকে হাসিনার আততৃপ্তি পাবার মত কিছু আছে কিনা সেটা ও প্রশ্নবিদ্ধ ।সাইদীর ফাসির রায়ের পর চরম রকমের অরাজকতা সৃষ্টি হবে সেটা শিবির আগেই হুশিয়ারী দিয়ে রেখেছিল ।
তারপর ও প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষ মারা গেল ।মুখে মুখে বলতে শুনি এত জন মানুষ মারা গেসে আর এত জন পুলিশ মারা গেসে ।মনে হচ্ছে পুলিশ মানুষের শ্রেণীতে পড়ে না ,তারা মানুষ নয় ,শুধুই পুলিশ ।রাজীব হত্যার পর শহীদ বলে জাতীয় বীর ঘোষণা করা হয় আমাদের সংসদে কিন্তু এই পুলিশ গুলা তো মানুষ নয় তাই তাদের জন্য কোনো জাতীয় শোক প্রস্তাবনাও নেই ।কারন হয়ত বা আছে।কারণ হিসাবে বলা যেতে পারে আগামী দিনগুলাতে এই দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আরও অনেক পুলিশ মারা যাবে ।কতবার শোক করবে সরকার ।
যাইহোক , এই আগুন নিয়ে খেলার ফলাফল আমাদের সাধারণ জনগনের জন্য কতটুকু সহায়ক হবে আগমীদিনগুলাতে সেটাও সন্দেহের বাইরে থাকছে না ।৪২ বসর আগের গ্লানি দূর করতে গিয়ে ,দেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান বানিয়ে ফেললে তার দায় ভার কে নেবে তাও অজানা ।এত বড় একটা কাজ করার জন্য সরকারের আরও অনেক বেশি প্রস্তুতি দরকার ছিল ।সরকার কি আসলেই প্রস্তুত ছিল রাজনৈতিকভাবে এই রকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করার ??এখনই বা কতটুকু প্রস্তুতি আছে ??অথবা তাদের ইচ্ছাটাই বা কি ছিলো? সেটাও আজ আম জনতার মনে প্রশ্নবিদ্ধ করা শুরু করেছে ।
আমার রাজনৈতিক জ্ঞান খুবই সীমিত । তাই এর থেকে বের হবার জন্য কি করা উচিত বলতে পারি না কিন্তু বড় দুই দলের গঠনমুলক পদক্ষেপ ছাড়া আমাদের জন্য বোধ করি ভয়াবহ বাজে দিন অপেক্ষা করছে সামনে এইটুকু অন্তত বুঝতে পারি ।