যে কোন বিচার বা তদন্তের আগে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব বক্তব্য দিলে সে তদন্ত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মতই হবে। কারণ বাংলাদেশে এমন কোন মায়ের পুত জন্মেনি, যে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যবিরুধী তদন্ত প্রকাশ করবে।
আমরা দেশকে ভালোবাসি। যতদূরে থাকি দেশের প্রতি ভালোবাসা কিন্তু দূরে নয়। তাই দেশের উন্নতি-অবনতি আমাদের মনে ভাবায়। বিগত কেয়ারটেকার সরকার থেকে দেশে পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিশেষত রাজনৈতিক ময়দানকে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীন দূর্নীতির হাট-বাজার বলে গন্য করেছে। তাই সব দলের নেতাকর্মী কে এই খেসারত দিতে হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ছিল নতুন সরকার এলে রাজনৈতিক ইমেজ পুনরুদ্ধার হবে। কিন্তু বিধি বাম। আওয়ামীলীগ তথা চৌদ্দদল এসে বিরোধী রাজনৈতিক ময়দান শুন্য করার গভীর পায়তারা শুরু করে। তাই একে একে হয়রানি মামলা এনে নতুন ভাবে সরকার বিরুধীদের কারাগারে প্রেরণ করে। তাদের স্থায়ীভাবে রাজনৈতিক কেরিয়ার ধ্বংশ করতে যুদ্ধপরাধ কখনোবা মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মামলা শুরু করে। অন্যদিকে সরকারের সাজাপ্রাপ্ত আসামী সহ তত্ত্ববধায়ক আমলের সকল মামলা প্রত্যাহার করে। আর বিরোধীদের সেই মামলায় গ্রেফতার করে।
খুন, হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটজনিত কাজগুলোই মানবতা বিরোধী অপরাধ বলতে আমরা বুঝে থাকি। সংবিধানের ভাষায় যদি এগুলোকে বুঝিয়ে থাকে তাহলে বাংলাদেশে কি বর্তমানে এই ধরনের অপরাধ কেউ করছে না? যদি করে থাকে তাহলে তাদেরকেও তো এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এনে বিচার করা প্রয়োজন। নাকি কোন সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠন এই ধরনের অপরাধ করলে তাদের বিচার আলাদা। বর্তমানে দেশে রেকর্ড সংখ্যক খুন গুম ধর্ষন লুটপাট হচ্ছে।
আমাদের দূর্ভাগ্য এগুলির সুষ্ট তদন্ত হয় না। একমাত্র কারণ নেতা-নেত্রী ঘটনার সাথে সাথে দলের লোকদের রক্ষা করতে মরিয়া উঠে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে শুনি তিনি বলেন, তাদের কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট আছে বিরোধী দলের কারা গাড়ি পুড়ানো নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ আগামী কাল বিরোধীল দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, সংসদ সদস্য সহ জাতীয় নেতাদের জামিনের মুক্তির জন্য হাইকোটে আবার আবেদন করা হবে। অথচ প্রধানমন্ত্রী যখন বলেছেন তথ্য আছে, সেখানে কোন বিচারকের পক্ষে জামিন দেয়া সম্ভব নয়।
ইলিয়াস আলী গুম হলেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন বিরোধীদলের এক নেতা নাকি হারিয়ে গেছে সে আগেও হারিয়ে গিয়েছিল। তার এবক্তব্য শুনে তদন্ত কমিটি কি তদন্ত করবে, বাংলাদেশের মানুষে ভালো জানা আছে। কারণ ফোনে কোথায় কিভাবে হরতালে সময় গাড়ি পুহাড়োর হুকুম দেয়া হল তা তিনির কাছে অথচ এম ইলিয়াস আলী সহ অনেক নেতা-কর্মী গুম হলেন তাদের কোন তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে নেই। সারা দেশের মানুষ ইলিয়াস আলী গুম হওয়ায় উদ্বিগ্ন আছেন।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর রুনি সম্পর্কে প্রধান মন্ত্রী বললেন, বেডরুমে পাহারা দেয়া সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য শুনে পাগল তদন্তকারী ছাড়া সুষ্ট তদন্ত করবে না। তাই তিনমাসের উপরে হয়ে গেলেও তদন্ত আধারেই হচ্ছে। যেদেশে কোন সরকারি দলের এম. পি'র বিরুদ্ধে কোন অফিসার কথা বলতে পারে না সেদেশে প্রধানমন্ত্রীর কথার বিরুদ্ধে কে তদন্ত প্রকাশ করবে?
সুরন্জিত সেনগুপ্তের তদন্ত কত সচ্ছ দেখেন। কিছুদিনের মধ্য এপি, এস স্বীকার করে নিলেন মন্ত্রী দোষ নেই তার সব দোষ এবং মন্ত্রী ও স্বীকার করলেন সরকারের কোন দোষ নেই নিজের ব্যর্থতা। রিপোর্টে তার পানির স্বচ্ছতা পাওয়া যায়। তিনি সাপ্তাহখানি পরে মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করলেও পরেরদিন প্রধানমন্ত্রী নিজগুনে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করেন। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত রির্পোট দেবে এমন মায়ের পুত কি বাংলাদেশে জন্মেছে বলে প্রমাণ আছে? সরকারের এসব দূর্নীতির বিরুদ্ধে সুযোগ পেলে লেখার চেষ্টা করেছি। এজন্য সামুতে ব্লগও হয়েছি। হয়তো সামুর সীমাবদ্ধতার জন্য করা হয়েছে। কিন্তু এই নরপিচাশ সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ এত ক্ষিপ্ত ছোট বেলার শুনা একটা ছড়া দিয়ে শেষ করছি
হাছিনা গো হাছিনা
তোর কথায় নাছিনা
তো বাপের কথায় নাইচ্যা
দেশ গেছে বেইচ্যা...
বুঝে না বুঝে এসব বলতাম, এখন দেখি ডাকে কথা বিফল যায় না।