২.
বৃষ্টিভেজা ভোরে ঘুম ভাঙলো। ভেবেছিলাম সারা সকাল অফিস করে সারা বিকেল জার্নি, জম্পেশ ঘুম আসবে। কিন্তু সারা রাত ঘুম আমাকে ঘিরে পায়চারি করেছে। নতুন জায়গার ফোবিয়া আমার নাই। ঘুম এলে দিব্যি ঘুমাতে পারি। বন্ধু যে মেসে থাকে তার দুই পাশে দরজা। দ্বিপ্রতিসম ঘর। কোন দরজা যে সামনের আর কোনটা পেছনের বোঝাই মুশকিল। আমি আনুমানিক পেছনের দরজা খুলে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। টিপির টিপির বৃষ্টি ঝরছে। বৃষ্টি পড়ছে শাল তমালের বনে, বৃষ্টি ঝরছে টিনের চালে মাদল তুলে, বৃষ্টি ঝরছে পেয়ারার পাতায়, মেহগনির মগডালে, সদ্য ফোঁটা মিষ্টি কুমড়োর হলুদ ফুলে। বৃষ্টিতে ভিজছে লাল মাটির উঠোন, মধুপুরের আকাশ।
আরেফিন এসে বললো, কফি বানাবো, খাবি? বন্ধু হয় দুই শ্রেণীর। একদল বানিয়ে এনে বলে ধর, অন্যদল আগে জিজ্ঞেস করে। আরেফিন দ্বিতীয় দলের। সে সব কিছুই আগে জিজ্ঞেস করে। আবার আমরাও দুই টাইপের। একদল সরাসরি বলে খাবো বানা, অন্যদল খেতে ইচ্ছে করলেও বলে না থাক। আমিও দ্বিতীয় দলের। আজ পর্যন্ত মা ছাড়া অন্য কারো ইদৃশ্য কোয়েশ্চেনের বিপরীতে হ্যাঁ বলার কোন রেকর্ড নেই। তবে এরকম বৃষ্টিভেজা সকালে ধোঁয়া ওঠা কফি কি চায়ের কাপ মন্দ হতো না।
আরেফিন আটটায় অফিসে চলে গেছে। আমাদের বললো ঘুমা। এগারোটায় এসে একসাথে ঘুরতে বেরোবো। আর এগারোটা। আধা ঘন্টা যেতেই মনে হলো এক যুগ বসে আছি।
গামছা কাঁধে কলপাড়ে গেলাম। আরেফিনদের মেসের বুয়া বেশ আলাপী মানুষ। তাকে বলতেই বালতি এনে দিলো। ঠান্ডা সকালে কলের পানির ডিপ ফ্রিজের মত ঠান্ডা। গোছল সেরে এপাশের বারান্দায় এসে বসতে খালা জিজ্ঞেস করলো, নাস্তা দেবো?
শরীফকে ডেকে নিয়ে খেতে গেলাম রান্না ঘরে। একপাশে কাঠের লাকড়ির চুলো। অন্যপাশে ছোট একটা ডাইনিং টেবল। দু খানা চেয়ার। আরেফিন এসেনশিয়াল ল্যাটেক্সে জব করে। ওরা দশ বারোজন কলিগ মিলেই এখানে থাকে।
সকালের নাস্তা ঢেঁড়স ভাজি, আলু ভর্তা এবং ডিম ভাজি। আজকালকার এই শহুরে ডিমলেট নয়, গ্রামদেশে আগে গেলে যেমন নীলচে ডিম ভাজি খেতাম, একদম ওরকম। বেশ ভালো লাগলো খেতে।
খালাকে জিজ্ঞেস করলাম, খালা জংগল কোনদিকে?
খালা বললো, এখানে তো জংগল নেই।
খালার কথা শুনে টাসকি খাওয়ার জোগাড়। জংগল দেখতে এই এত দূর আসা। জংগল না থাকলে কিভাবে হবে। কাল রাতে তো ভেবেছিলাম রাস্তার ওপাশেই বুঝি ঘন জংগল।
- মধুপুরের জংগল আছে না?
- মধুপুর টাউনে যাবেন? গরম বাজার গিয়ে অটোতে উঠলে টাউনে নিয়ে নামিয়ে দেবে।
খালা বলে কি! মধুপুর টাউন দেখতে কি টাঙাইলের রাস্তার এই হিউজ জ্যাম ঠেলে এলাম। খেয়ে দেয়ে বেরোলাম। বৃষ্টি থামার নাম করছে না। সিদ্ধান্ত নিলাম আরেফিনের অফিস থেকে ঘুরে আসা যাক। যেই ভাবা সেই কাজ।
৩.
রাবার বাগানের মধ্যে দিয়ে এক কিলোর বেশী পথ হাঁটলেই বন্ধুর ফ্যাক্টরি। কিন্তু রাস্তার মাঝে হাঁটু কাদা। এই পথ ধরে হেঁটে যাওয়া সম্ভব নয়। অন্তত আমাদের জন্য নয়। কাঁদা মাখার কোন ইচ্ছে আপাতত নেই। আরেফিনের এক কলিগ বললো ঘুর রাস্তা দিয়ে গেলে যাওয়া যাবে। আপনারা তো চিনবেন না। অটো ওয়ালাকে পঞ্চাশ টাকা দেবেন। নাচতে নাচতে নিয়ে যাবে।
অটোওয়ালা আমাদের প্রস্তাব শুনে নাচ শুরু তো করলোই না। উলটো একশো টাকা চেয়ে বসলো। বললাম, এক কিলোমিটার পথের জন্য একশো টাকা বেশী হয়ে যায় না?
- রাস্তায় অনেক কাঁদা। যাওয়া যাবে না।
- যাওয়া যখন যাবে না। তখন একশো টাকায় কিভাবে যাবে? অত পেচাচ্ছো কেন? আমরা জেনেই এসেছি। পঞ্চাশ টাকায় তুমি খুশী মনে যাবে।
তাও অটোওয়ালা গাড়লের মত মাথা নাড়ে। পঞ্চাশ টাকায় যাবে না। আমরাও যাবো না। ওপাশে দোচালার নিচে গোটা কয়েক লোক জটলা পাকিয়ে বসে আছে। তার পাশে কসাইয়ের দোকান। কসাই না থাকলে বুঝে গেলাম কসাইয়ের দোকান কারণ হুকে বড় বড় গোশতের টুকরো ঝুলছে। একজন চেঁচিয়ে বললো, আরে নিয়ে যা, বেলুন ফ্যাক্টরি যাবে।
ল্যাটেক্স কারখানাটিকে এলাকার লোক বেলুন ফ্যাক্টরি নামেই চেনে। এরকম আমি বহু জায়গায় দেখেছি। পোস্তগোলার ওপাশে একটা কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে যেতে হলে রিকশাওয়ালাকে বলতে হয় ওষুধ ফ্যাক্টরির গেটে যাবো।
একটা ইঞ্জিন ভ্যান আমাদের দিকে এগিয়ে এলো, কোথায় যাবেন? কোথায় যাবো সেটা বলার আগেই অটোওয়ালা ডাক দিলো আসেন। কম্পিটিটর আসায় সে এখন পঞ্চাশ টাকাতেই যাবে। এই হলো বাঙালী জীবনের প্রধান সমস্যা। টপ টু বটম কোন লেভেলেই পূর্ণাংগ সততা নেই। সুযোগ পেলে সবার মধ্যে দুর্নীতি করার প্রবনতা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সুযোগের অভাবে আমরা সবাই সৎ হয়ে বসি। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে। কিন্তু তার উদাহরনটা কোথায়!
কিছুদূর যাওয়ার পরেই খারাপ রাস্তা শুরু। রাস্তা আসলেই খারাপ। একেকটা ঝাঁকিতে কলিজা ফ্লাইং ফিশের মত লাফ দিয়ে উঠতে চায়। কোন মতে চেপে চুপে তাকে শান্ত করি। একটু পরেই রাবার বাগান শুরু। লাইফে প্রথম রাবার বাগান দেখছি। সো ইন্ট্রোডাকশনের তো একটা দরকার আছে। বাট ইন্ট্রোডিউস করার মত কোই নেহি হ্যায় উধারকি পাছ, কোই সাইনবোর্ড ভি। আমি ভেবেছিলাম এই বুঝি মধুপুরের জংগল শুরু, এরাই বুঝি শাল গাছ। সারি সারি গাছ গুলি যেন আকাশ ছুয়েছে। গলা বের করে দেখতে গিয়েই ভুল ভাঙলো। প্রতিটি গাছের গায়ে কাটার দাগ। দাগ গুলোই সাইনবোর্ড হয়ে বলে দিলো এরা শাল নয় রাবার গাছ। কিন্তু কৈ কোন গাছ থেকে তো রাবার সংগ্রহ করতে দেখছি না।
চারিপাশে আকাশ ছোয়া রাবার গাছের সারি। নির্দির্ষ্ট দূরত্বে লাগানো। মাঝে বৃষ্টিতে ভেজা সবুজ ঘাস। চোখের জন্য খুবই সুখকর দৃশ্য। কেউ কোথাও নেই। শুনশান নিরবতা। শুধু মাত্র আমাদের অটোবাইকের মৃদু যান্ত্রিক আর্তনাদ বাতাসে মিশছে।
আমরা আরেফিনের অফিসে পৌঁছে গেলাম। উচু দেয়াল ঘেরা গেট। উল্টোপাশে রাবার গাছের সারি। গোটা দুয়েক ছবি তুলে নিলাম। গেটে নক করার আগেই একজন বেরিয়ে এলো। স্মোকিং করতে বোধহয় বাইরে এসেছেন। দুই আঙুলের ফাঁকে না ধরানো সিগারেট। আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলো আপনারা?
আরেফিনকে আমরা অরি নামেই ডাকি। আমিতো বলেই ফেলছিলাম অরির কাছে এসেছি। শরীফ তার আগেই বলে দিলো, শামসুল আরেফিনের কাছে এসেছি।
- কোথা থেকে আসছেন?
- ঢাকা থেকে এসেছি। আমরা ওর ফ্রেন্ড।
ফ্রেন্ড শুনে লোকটা এসে আমাদের সাথে হাত মেলালেন। নামও বললেন। কিন্তু আমার নাম মনে থাকে না। এই এক মহা ঝামেলা। এডমিন অফিসার। আমাদের বললেন, আপনার একটু ওয়েট করেন।
বেশীক্ষণ ওয়েট করতে হলো না। আরেফিন এসে আমাদেরকে নিয়ে গেলো। ওর ল্যাবে নিয়ে গিয়ে বসালো। বসলাম। ছোট খাট ল্যাবরুম। সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান গুলোর ল্যাব যেরকম হয় আরকি। ওর বস এখনো আসেনি। আসলে মন্দ হতো না। বেশ গল্পবাজ লোক। গতকাল সন্ধ্যায় মধুপুরের রেস্তোরাতে গল্প করতে মন্দ লাগেনি। ওর আরেক কলিগ এসে হাজির। মাই ডিয়ার টাইপ লোক। ফ্রাংকলি আমাদের সাথে গল্প করে যেতে লাগলেন। আমরা যে বয়সে তার থেকে বেশ জুনিয়র সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। আরেফিন ওর ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখালো। ছোট খাট প্লান্ট। দশমিনিটও লাগলো না আমাদের দেখতে। সব মাছের যেমন আলাদা গন্ধ থাকে তেমনি সব ফ্যাক্টরিরই আলাদা গন্ধ থাকে। এতদিন কেমিক্যাল ফ্যাক্টরিতে জব করার পরেও আরেফিনের ফ্যাক্টরি দেখতে এসে নাকে হাত দিতে হলো।
বর্ষাকাল বলে রাবারের রস আহরণ বন্ধ তাই ফ্যাক্টরিও বন্ধ। কলিগেরা অনেকেই এসে আমাদের সাথে আলাপ করছে। প্রায় সবারই বাড়ি গোপালগঞ্জ। তার পূর্বে উল্লেখিত কলিগের কাছে জিজ্ঞেস করলাম, সবাই কি গোপালগঞ্জের? তিনি বললেন শতকরা ৯০ ভাগ গোপালগঞ্জের বলা যায়।
আরেফিনকে খোঁচাতে লাগলাম। কিরে তুইও গোপালগঞ্জ কোঠায় চাকরি পেয়েছিস নাকি!
৪.
ল্যাটেক্স ফ্যাক্টরি থেকে আরেফিনের মেসে ফিরে এলাম। ফ্রেশ হয়ে আবার বেরিয়ে পড়তে হবে। আমি টুকটাক বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। প্রতিবার ঘুরতে বের হবার আগে মোটামুটি হোমওয়ার্ক সেরে নেই যেখানে যাচ্ছি সে এলাকা সম্পর্কে। কি কি দেখার আছে, স্পেশাল খাওয়ার কিছু আছে কিনা ইত্যাদি। কারণ একবার পথে বেরিয়ে লোককে জিজ্ঞেস করে করে তথ্য নেওয়া খুবই বিড়ম্বনার। অধিকাংশ মানুষ তার নিজের এলাকার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে। তারা মনে করে সেগুলাতে আবার দেখার কি আছে। এবার সেরকম হোমওয়ার্ক করার সুযোগ হয়ে ওঠেনি।
গরম বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম - পথের ধারে দেখি পেল্লায় সাইজের তিন খানা কাঁঠাল রাখা। সদ্য গাছ থেকে পেড়ে আনা, তখনো বোঁটা থেকে আঁঠা ঝরছে। ছবি তোলার আগ্রহ হলো। এগিয়ে গিয়ে ছবি তুললাম। নাহ ছবিতে সাইজ ঠিক মত বোঝা যাচ্ছে না। পেছন থেকে নারী কন্ঠের আওয়াজ এলো, নেন তিন খানা দ্যাঁড়শো টাকা!
তিন খানা দ্যাঁড়শো টাকা! মাথার মধ্যে টকাৎ করে উঠলো। প্রস্তাবিত দামই যদি দেড়শো হয় তাহলে দামাদামি করলে তো আরো কমে পাওয়া যাবে। পিছে ফিরে দেখি রাস্তার ওপাশের ঢালে পায়ের পাতায় ভর দিয়ে এক পৌঁড়া উবু হয়ে বসে আছে। খালি পা, প্রিন্ট্রের শাড়ি পড়া, চিরন্তন বাঙলার গ্রামীন মহিলার চেনা ছবি। আমাদের দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে আছে। আমি হাসি মুখেই বললাম, আমাদের কাঁঠাল কেনার সুযোগ নেই। গরম বাজার থেকে সিএঞ্জিতে চড়লাম। আমাদের গন্তব্য বৃত্তিবাড়ি। সেখান থেকে বাসে করে রসুলপুর - মধুপুর জাতীয় উদ্যানের এক নম্বর গেট। আমাদের সাথে মফিজ ভাই যোগ দিয়েছে। মফিজ অরির পরিচিত। এখানেই বাড়ি। কলার ক্ষেত আছে দোখালায়। হাসি খুশী মানুষ। বৃষ্টি থামার নাম নেই। টিপির টিপির ঝরেই চলেছে। রেইন কোর্ট না কিনতে পারার বেদনা মনের মধ্যে খচখচ করছে।
খালি বাস, ফাঁকা রাস্তা। সাঁ সাঁ করে ছুটছে। রাস্তায় ঘোড়ার গাড়ি, ভ্যান গাড়ি ভরা আনারস যাচ্ছে। হঠাৎ এক স্থানে দেখি শুধু আনারস আর আনারস। পাঁকা আনারসের রঙে নয়ন জুড়িয়ে গেলো। মফিজ ভাই বললো জায়গাটার নাম জলসত্র। টাঙাইলের সব থেকে বড় আনারসের বাজার। উইকিতে সার্চ দিলাম। না বাংলা উইকিতে কোন আর্টিকেল নেই জলসত্রের উপর। ইংরেজীতে যা আছে তাতে গোটা চারেক লাইন লেখা। ফিরে বাংলায় লিখতে হবে। এত সুন্দর একটা বাজারের কথা বাংলাদেশীদের অজানা রয়ে গেলো। বাঙালিরা সিঙ্গাপুর, থাইলান্ডের মার্কেটের কথা জানে অথচ নিজেদের কানসাট আমের বাজার, জলসত্রের আনারসের বাজারের কথা জানবে না - খুবই খারাপ। তখনি সিদ্ধান্ত নিলাম ফেরার পথে অবশ্যই জলসত্র নামতে হবে।
রসুলপুর বাজারে যখন বাস আমাদের নামিয়ে দিলো তখন বৃষ্টি থেমে গেছে। বৃত্তিবাড়ি এসে বাসের জন্য অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিলো। তখন একটা হোটেলে ভাজার জন্য কেবল সিঙাড়া বানানো হচ্ছে। গরম গরম সিঙাড়া ভাজা খাওয়ার ইচ্ছে তখন থেকেই মাথার মধ্যে প্রবল হয়ে আছে। সেই দোকানের তেল গরম হতে অনেক বাকি ছিলো বলে চলে এসেছিলাম। ঠান্ডা তেলে ভাজা চপ শিঙাড়ার স্বাদ খোলে না। রসুলপুর বাজারে নেমে শিঙাড়া খেলাম গোটা তিনেক পার হেড। জিভ পুড়ে যাওয়া গরম। ভালই লাগলো। রাস্তার ওপাশে কার যেন একটা মাজার। বাংলাদেশে যত পীর আউলিয়ার মাজার আছে খোদ ইসলামের জন্মভুমিতে এত মাজার আছে কিনা আমার জানতে ইচ্ছে করে। মিনিট দুয়েক পেছনের দিকে হাটলেই মধুপুরের গেট। সাদা মাটা একটা গেট।। উপরে লেখা মধুপুর জাতীয় উদ্যান টাঙাইল বন বিভাগ।
বি:দ্র: না, আমার ভ্রমণ কাহিনী এখানেই শেষ নয়। আমি একজন স্লো লেখক। আপনাদের ভালো লাগুক আর নাই লাগুক। লিখে একদিন শেষ করবোই।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ২:১৭