বাস থেকে নেমে দেখি সাড়ে তিনটা। ক্ষুধা পেয়েছে বেশ। মোড়ের মাথায় দুটো মিষ্টির দোকান আছে হাতের দুপাশে। ভাত থেকে রসোগোল্লা সবই পাওয়া যায়। এখানে কখনো ভাত খেতে ঢোকা হয়নি। বছর দুয়েক আগে মিষ্টি খেতে ঢুকেছিলাম। আজ ঢুকলাম। ভাত খেতে। কাঁধের ব্যাগ চেয়ারের হাতে সমর্পণ করে নিজের হাত ধুতে গেলাম। একটা বেসিন আছে। তার পাশে ছোট ড্রামে পানি রাখা। পানি তোলার জন্য একটা মগ আরর ক্ষয়ে যাওয়া এক টুকরো সাবান। দেখে চেনার উপায় নেই।
হাত ধুয়ে চেয়ারে বসতেই বাবুর্চি কাম ওয়েটার এসে হাজির। কি খাবেন?
- কি আছে?
- ভাত না মিষ্টি?
- ভাত।
- মুরগী, গরুর গোশতো, কাতল মাছ।
- ভাজি আছে দেখলাম।
- হ। ভেন্ডি ভাজি।
- আমাকে ভাজি আর গরু দেন।
মেলামাইনের প্লেট ভরে ভাত, একটা মরিচ আর অতি ক্ষুদ্র এক টুকরো লেবু দেওয়া হয়েছে। শুকিয়ে আসা লেবুখানা আমি আগেই প্লেটের সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দিলাম। ভাজি আসতেই খেতে শুরু করলাম। স্বাদ খারাপ না। চট্টগ্রাম থেকে জার্নি করে এসেছি। বেশ।ক্ষুধার্ত। ভাজি দিয়ে এক প্লেট খেলাম। গরু নিতে যাবো এমন সময়ে বাবুর্চি কাম ওয়েটার এসে বললো, স্যার গরু না খেয়ে মাছ খান।
- কেন?
- আজকের গরু রান্না ভালো হয়নি।
- তাহলে কি নেবো?
- মাছ খান। কাতল মাছ।
- না।মাছ খাবো না।
- তাইলে মুরগি খান।
- ডিম আছে?
- আছে। আলু দিয়ে রান্দা। দেবো।
- দাও।
ফালি ফালি করে কাটা আলু দিয়ে ডিম।ভুনা। আহামরি কিছু নয়। কিন্তু বাবুর্চির আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করলো।