৮
যিনি আমাকে এখানে বসিয়ে গেলেন, সম্ভবতঃ বাসার মেইড। অপেক্ষা করতে বলে গেলেন। সেটাই করছি। কাজটা ঠিক করছি কি না জানি না। এখানে আসাটা খুব অড না, এই কাকভোরে আসাটা রিয়েলি এম্ব্যারাসিং। স্পেশালি এমন একজনের বাসায়, যাকে মাত্র দুদিন হল চিনি। তা ও, এমন এক পরিস্থিতে, যেখানে মানুষটার জন্য আমি আমার এনগেজমেন্ট ভেঙ্গেছি।
তারপরও না এসে থাকতে পারিনি। ঝোঁকের মাথায় চলে তো এসেছি, বাট এখন কিছুটা হলেও বুক ঢিপঢিপ করছে। খানিকটা টেনশানে, আর খানিকটা এক্সাইটমেন্টে। গলাও কিছুটা শুকিয়ে গেছে মনে হচ্ছে। এদিক ওদিক তাকালাম। লুবনাদের ফ্ল্যাটটা বেশ বড়। দুহাজার স্কয়ারফিটের হবে। ওর বাবা কি করেন জানি না, তবে বাসার আসবাব দেখে মনে হচ্ছে, আর্থিকভাবে বেশ সচ্ছল। তাছাড়া, মেয়েকে যখন লন্ডন থেকে পড়িয়ে এনেছে, আই থিঙ্ক…। প্রশ্নটা মাথায় আসছে অন্য কারণে। যেহতু অনেক পয়সা করেছেন, মেয়েকে প্রফেশনাল কিলারের হ্যাট থেকে রক্ষা করার ক্ষমতাও হয়ত রাখেন। পরিস্থিতি তেমন ভয়ংকর টার্ন নিলে, উনাকে ইনভল্ভ করার প্রয়োজন হতে পারে।
রুমটা আসলে ড্রয়িং কাম ডাইনিং। ডাইনিং আর এই রুমের মাঝে একটা ছোট্ট ডোরওয়ে। সেখানে পর্দা দেয়া। তারপরও বলা যায়, বেশ বড় সাইজের ড্রয়িং রুম। সুন্দর করে সাজানো। দুই সেট সোফা। একটা পিওর লেদারের। একপাশের একটা আলমিরাতে বই টইও আছে। একদিকে একটা অ্যাকুইরিয়াম। কয়েকটা মাছ ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এমন সময় লুবনা আসল। চোখে এখনও ঘুম। নাইটি টাইপ কিছু পড়ে ঘুমাচ্ছিল বোধহয়। সেটার উপরই একটা গাউন চাপিয়ে এসেছে। চুল বেশ খানিকটা এলোমেলো, হলেও একটা রাবার ব্যান্ড বেঁধে এসেছে। একজন মানুষকে এমন এলোমেলো অবস্থায়ও যে অপুর্ব লাগতে পারে, ওকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না। আমাকে দেখে অবাক হল কি না বুঝতে পারছি না। চেহারায় প্রথমে কিছুটা ভাবলেশহীন ভাব ছিল, এরপরে মনে হল কিছুটা দুষ্টুমি ফিরে এল। আমি মুখে কিছু না বলে তাকিয়ে থাকলাম। আসলে কি বলব, তখনও গুছিয়ে উঠতে পারিনি। আমাকে দুটো ব্যাখ্যা দিতে হবে। ‘কেন এসেছি' আর 'এতো সকালে কেন?’ কোনটার ব্যাখ্যা আগে দেব ভাবছি।
লুবনার চোখে এখন আর হতবাক ভাবটা নেই। পুরোপুরি দুষ্টুমি খেলছে। মনে হচ্ছে ডেস্পারেট প্রেমিকের মুগ্ধতা দেখে মজা পাচ্ছে। আমার তাকিয়ে থাকা কিছুক্ষণ উপভোগ করল। এরপরে একটা সোফায় বসতে বসতে বলল
— এর বেশি তাকাতে চাইলে কিন্তু ট্যাক্স দিতে হবে।
কথাটার পেছনের দুষ্টুমিটা ভালোই লাগল। নিজেকে সামলে নিতেও সুবিধা হল। ভেতরের আনইজি ভাবটা অনেকটাই কেটে গেল। মুখে একটা দুষ্টুমি মেশানো স্মাইল টেনে বললাম
— বেশ। দেয়া যাবে।
কথাটা শুনে বেশ মজা পেল মনে হল। ঘাড় কাত করে ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছে এমন জেস্টার দিল। এরপরে আমার দিকে সোজাসুজি তাকাল। বুঝতে পারলাম, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। বলল
— ওয়েট দেন।
বলেই উঠে দাঁড়াল। ড্রইং রুমের ডোর ওয়ে দিয়ে ভেতরের ঘরের দিকে চলে গেল। আমি সোফায় হেলান দিয়ে বসলাম। বেশ খানিকটা রিলাক্স লাগছে এখন। এরপরে কি হবে, তা নিয়ে আপাততঃ ভাবছি না। আসলে এখন ভাবছি, আজকের সকালের নিজের পাগলামি নিয়ে।
আজ সকালে যা করলাম, সেটাকে খুব স্বাভাবিক কাজ বলা যায় না। ইভেন সকালেও জানতাম না, এমন কিছু করব। সারারাত, প্রায় নির্ঘুমই কাটিয়েছি। গতকাল বিকেলে যখন দীপা জানাল, লুবনা ওর বসকে তাঁর নিজের ফিলিংস জানাবে, আর ওর বসের শ্বশুর, লুবনাকে মেরে ফেলতে পারে, তখন থেকেই আমার মানসিক অবস্থা টালমাটাল হয়ে যায়। বেশ ভয় পেয়ে যাই।
নাহ, আমার প্রেম, হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমি চিন্তিত না। ওটা আমি খুব বেশি এক্সপেক্ট করিনি। ট্রাই করব, এমন ইচ্ছে ছিল, বাট, এমন না যে, আই ওয়ান্ট হার অ্যাট এনি কষ্ট। আমার ভয়ের জায়গা, আসিফের শ্বশুরের ক্রিমিনালিটি। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে, আসিফের শ্বশুর কি স্টেপ নিবে, সেটা নিয়েই আমি ভয় পাচ্ছি। ব্যাপারটায় যদিও আমার সরাসরি কোন ইনভলভমেন্ট নেই, লুবনার প্রেমে বাঁধা দেয়ার চিন্তাও করছি না, বাট…ঐ, একটা অপরাধ বোধ কাজ করছে। মেয়েটার কিছু হলে… সরাসরি না হলেও, কিছুটা হলেও, আমি তো আমার দায় এড়াতে পারি না।
দীপাকে জিজ্ঞেস করলাম
— ওকে ব্যাপারটা এক্সপ্লেইন কর নি। আই মিন…
— করেছি।
— কি বলল?
— বলল, মনে রাখবে কথাটা।
‘মনে রাখবে’ 'ভেবে দেখব’ এগুলো বেশ কনফিউজিং টার্ম। ‘হ্যাঁ' ও না আবার ‘না' ও না। বোঝা যাচ্ছে না, ও কি করবে। আগামীকাল সরকারী ছুটি। সো, ল ফার্মের অফিসে যাওয়ার ব্যাপার নেই। সামনাসামনিই বলতে হবে, এমন কথা নেই। ফোনেও বলতে পারে।
আসলে, এতো সকালে কেন এসেছি, তা নিজেই জানি না। অস্থিরতা একটা কারণ। ওকে দেখতে ইচ্ছে করাটাও। আই থিঙ্ক, আসলে এসেছি, এই মুহূর্তের পরিস্থিতি জানতে। স্ট্যাটাস কো টা কি?
দীপার সাবধানবাণী কতোটা কাজে দিয়েছে আর ‘মনে রাখবে’ মানে আসলে কি, এ দুটোই দেখতে আসা। উত্তরটা না পাওয়া পর্যন্ত টেনশানটা কাজ করছে। কি হয়েছে সেটা জানা দরকার। যদি এখনও ও বসের সাথে কথা না বলে থাকে… কি করব? সুড আই ট্রাই টু স্টপ হার?
বোধহয় সেটাই করতে এসেছি। মন কি চায়, সেটা বোঝা আসলেই টাফ। বিতর্কিত যেসব কাজ আমরা করি, বেশির ভাব ক্ষেত্রেই নিজেকে খুব মজার একটা যুক্তি দিয়ে কনভিন্স করার চেষ্টা করি। 'সিদ্ধান্তটা আমার লেকচার শুনে নিয়েছে’ এই যুক্তি দেখিয়ে আজকে এখানে এসেছি।নিজেকে বোঝাচ্ছি, ওকে এই মেস থেকে বের করার দায়িত্বও আমার।
গতকাল আর তেমন কথা হয়নি দীপার সাথে। লুবনার ব্যাপারে আমার কি করা উচিৎ, তা নিয়ে ও কোন অ্যাডভাইস করেনি। ওটা উহ্য ছিল। ‘তুমি যা ভাল বোঝ কর’ টাইপ। কথাগুলো বলে ও জানাল, এবার ও উঠবে। ওকে তখন অনেকটাই স্বাভাবিক লেগেছিল। মনে হয়েছিল, রিকোয়েস্ট করা যায়। করলাম,
— চাকরী যদি ছাড়তেই হয়, মাস দুয়েক পরে ছেড়।
আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল দীপা। এরপরে চোখ নীচু করে বলল
— মাস দুয়েক সবার ইনসাল্টিং কথাবার্তা শুনি, এটাই চাইছ?
দীপার দিকে তাকালাম। এরপরে গলাটা যতটা সম্ভব নরম করে বললাম
— আই আন্ডারস্ট্যান্ড। বাট এভাবে কত জায়গা থেকে পালাবা? বাসায় কিংবা প্রতিবেশীরা ইরিটেটিং কথা বলবে না? ওখান থেকেও পালাবা? এটা সলিউশান না।
দীপা তাকাল আমার দিকে। এরপরে মাথা ঝুঁকিয়ে সম্মতি জানাল। বলল
— দেখি।
মনে জোর পেলাম। মন হল, ও রিকনসিডার করছে নিজের ডিসিশান। ওর হাতটা নিজের হাতে নিয়ে বললাম
— প্লিজ।
কি ভেবে দীপা ম্লান হাসল। এরপরে আমার হাতের ওপর নিজের হাত রাখল। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে সুন্দর করে হাসল।
— ওকে
মনের ওপর থেকে একটা বোঝা নেমে গেল। দীপার দিকে তাকালাম। এরপরে বললাম
— চল, তোমাকে ড্রপ করে আসি।
এরপরে আর তেমন আলাপ হয়নি। পুরো রাস্তা চুপচাপই ছিলাম। বাসার কিছুটা দূরেই দীপা থামতে বলল। এরপরে ও নেমে গেল। নামবার আগে শুধু বলল
— চাইলে ফোন করতে পার।
সম্পর্ক অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এল। বেশ স্বস্তির সাথে গাড়ীর সিটে হেলান দিলাম। আর তেমন কাজ ছিল না। বাসায় ফিরলাম। দিন পাঁচেকের ছুটির অ্যাপ্লিকেশান অফিসে পাঠালাম। আই রিয়েলি নিড অ্যা ব্রেক।
রাত দশটার দিকে দীপা ফোন করল। জানাল, বসকে ফোন করেছিল। রিজাইনের সিদ্ধান্ত পাল্টেছে সেটাও জানিয়েছে। উনি ব্যাপারটা একটা মেইলে ইনফরম করতে বলেছেন। ও সেটা করে দিয়েছে। সো চাকরী নিয়ে আপাততঃ আর কোন সমস্যা নেই।
দেন, মজার একটা অনুভূতি হল। দীপার সাথে কথা বলার মত আর কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। বেশ অবাক লাগল। কিছুদিন আগে, এই দীপার সাথেই কথা ফুরাতো না। আর আজ? হঠাৎ কি ভেবে দীপা জানতে চায়
— লুবনার সাথে কথা হয়েছে?
অবচেতনে সম্ভবতঃ লুবনাই ছিল। তাই হয়তো অন্য কোন ব্যাপারে ইন্টেরেস্ট পাচ্ছিলাম না। দীপারে প্রশ্নে ব্যাপারটা নিজের কাছেই পরিষ্কার হয়ে গেল। বললাম
— ভাবছি নিজে যাব। ওর বাসায়। সামনাসামনি বসে কথা বলব।
কথাটা কেন বললাম, জানি না। এসব কথা কখন ভেবেছি, তা ও বলতে পারব না। কিন্তু বলে ফেলে বুঝতে পারলাম, এটাই আমার মনের কথা। কথাটা শুনে দীপার কি ফিলিংস হল জানি না, শুধু একটা দীর্ঘশ্বাসের আওয়াজ পেলাম মনে হল। এরপরে বলল
— লুবনা কিন্তু একটু পাগল আছে। কিছু করতে বারণ করলে, ওর আরও জেদ চেপে চায়।
কথাটা ওয়ার্নিং? না নিরুৎসাহিত করা? কারণ যা ই হোক, ফিল করলাম, মাথা কাজ করছে। যুক্তি স্পষ্ট হচ্ছে।
এতক্ষণ আসলে আমি ভয় পাওয়ার অ্যাক্টিং করছিলাম। আমার কথা শুনে লুবনা আরেকজনের সংসার ভাঙ্গছে, কিংবা নিজের লাইফকে এনডেঞ্জার করছে, এসব যুক্তি দিয়ে নিজেকে এই কাহিনীতে ইনভল্ভ করতে চাইছিলাম। বাট দ্যা রিয়েলিটি ইজ…কথাটা বলে ফেললাম
— আমার মন কি বলছে জান?
— কি?
— আমাদের প্রেম হবে।
— এতোসবের পরেও?
কথাটায় হতবাক ভাব স্পষ্ট। ও হয়ত ভেবেছিল, সব জেনে আমি লুবনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পাল্টাব। অ্যাটলিস্ট ওর ব্যাপারে ‘হাবুডুবু' খাওয়াটা থামবে। অবাক আমিও হয়েছি। ব্যাপারটা ঠিক এক্সপ্লেইন করার মত না। বললাম
— ঠিক তা না। আই কান্ট এক্সপ্লেইন। বলতে পার, গাট ফিলিংস।
— না কনফিডেন্স?
খানিকটা ভাবলাম। বললাম
— আই থিঙ্ক বোথ।
— জেলাস লাগছে, বাট, স্টিল… বেস্ট অফ লাক।
— একটা সত্যি কথা বলবে?
— মিথ্যা বলব ভাবছ কেন?
— ভাবছি না, জাস্ট…
— প্রশ্নটা...
— আমাকে ক্ষমা করবে না?
— না। রাখি।
আর কথা বাড়াইনি। এরপরে সারারাতই প্রায় ভাবলাম। কি করা যায়। অ্যান্ড… কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। ওর প্রেমের বিপক্ষে আমি না। ইভেন, সেজন্য একটা সংসার ভাঙলেও না। এব্যাপারে আমার লজিক বেশ ক্লিয়ার। জীবন একটা। নিজের মত করে বাঁচ। লোকে কি ভাববে, তা ভেবে নিজের ইচ্ছে গলা টিপে মারার কোন মানে হয় না।
বাট গতকাল এই লেকচার যখন দিয়েছিলাম, তখন আর যা ই হোক, এর সাথে একটা হত্যা জড়িয়ে যাবে, ভাবিনি। আর সেটাই ভোগাচ্ছে। কি বলব, কি যুক্তি দেখাব, ভাববার চেষ্টা করলাম। মাথায় কিছু আসছে না।
— চলুন
লুবনা সামনে দাঁড়িয়ে। জাস্ট কাপড়টা পাল্টে এসেছে। চুল একটু ব্যাকব্রাশ করেছে বোধহয়। হালকা একটু ঠাণ্ডা পড়ছে দেখে একটা শাল উড়ে নিয়েছে। অপূর্ব লাগছে।
ওর কথায় একটা ডিসাইডেড টোন ছিল। ‘কোথায়?' প্রশ্ন করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না। উঠে দাঁড়ালাম। দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম। লূবনা মেইডকে জানিয়ে দিল, ঘণ্টা খানেক পরে ফিরবে। খেয়ে আসবে।
সিঁড়ি বেয়ে দুজনে নামতে থাকলাম। সময়টা বেশ সকাল। ছটা। লিফট এখনও চালু করেনি। পাশাপাশি নামছি। ওর দিকে তাকাতে ইচ্ছে করছে। বাট নিজেকে রেজিস্ট করে রেখেছি। একবার কেবল তাকিয়েছিলাম, দেখি ও আমার দিকে তাকিয়ে। একটা স্মাইল দিল। হার্ট ইজ বিটিং এগেইন। চেহারার হতভম্ব ভাবটা কেটে গিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসতে শুরু করেছে আই গেস।
গাড়ীতে বসার পরে লুবনার দিকে তাকালাম। চোখে প্রশ্ন, ‘এবার?' সেটা বুঝল। উত্তর দিল
— সামনে একটা রেস্টুরেন্ট আছে। সকাল সকাল খোলে। ওখানে নাস্তা করব।
গাড়ি স্টার্ট দিলাম। আলাপ এখন শুরু করব, না রেস্টুরেন্টে বসে, সেটা ভাবলাম। রাস্তা বেশ ফাঁকা। লুবনা পথ দেখিয়ে দিল। একবার তাকালাম ওর দিকে। লুবনা সামনের দিকে তাকিয়েই বলল
— দীপা পাঠিয়েছে?
সো, শি নোজ। কেন এসেছি, সেটা আর এক্সপ্লেইন করতে হবে না। উত্তরে কিছু না বলে নোড করলাম। উত্তরটা বোঝার পরে লুবনা সামনের দিকে তাকিয়ে বলল
— আমাকে আসিফ ভাইয়ের শ্বশুরের হাত থেকে সেভ করতে?
এবার সত্যিই হতভম্ব হয়ে গেলাম। মুখ দিয়ে কথা বেরল না। লুবনাই আবার বলল
— একটা কথা বলব?
রাস্তা ফাঁকা। তাই মাঝে মাঝেই লুবনার দিকে তাকাতে পারছি। প্রশ্নটা শুনে ওর দিকে আবার তাকালাম। বোঝার চেষ্টা করলাম, কি বোঝাতে চাইছে? মনে একটাই সন্দেহ জাগছে। মন বলছে ‘ আই অ্যাম লেট। যে ব্যাপারটা আটকাবার জন্য এতো সকালে এসে হাজির হয়েছি, সেটায় মনে হচ্ছে ব্যর্থ হতে চলেছি। আর সেটা হয়ে থাকলে, কাহিনী এখন ভয়ংকর দিকে মোড় নেবে। বুকের ঢিপঢিপানি শুরু হয়ে গেল। ভয়ে মুখ পাংশু হয়ে গেল। ব্যাপারটা লুবনার চোখ এড়াল না।
আমার দিকে তাকিয়ে বাঁকা করে হাসল। নোড করে বোঝাল, আমার সন্দেহটাই সত্যি। এরপরে সামনের দিকে তাকিয়ে বলল
— ইয়েস। আই টোল্ড হিম লাস্ট নাইট। অ্যান্ড…
— অ্যান্ড?
সারা মুখ জুড়ে ঝলমলে একটা হাসি। এর মানে একটাই। এই হাসির অন্য কোন মানে হতে পারে না। দীপাকে যেদিন আমার প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ' বলেছি, সেদিন এই লাজুক হাসিই ও দিয়েছিল। তারপরও অপেক্ষা করে থাকলাম। লুবনা এবার উত্তরটা দিল
— হি এগ্রিড। উই আর গোয়িং টু ম্যারি সুন।
চলবে
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৯