
১. কাচের গুহা(cave of crystals) মেক্সিকোঃ

লোককথাঃ একজন গরীব জেলে একদা একটি ছোট মেয়েকে ডুবে যাওয়া থেকে উদ্ধার করল। উদ্ধার করার পর সে জানতে পারল যে এই মেয়েটী চন্দ্র দেবতার। চমদ্রদেবতা তারপর খুসি হয়ে জেলেকে প্রচুর পরিমানে মুল্যবান স্ফটীক উপহার দেয়। এতে জেলে খুসিতে আত্মহারা হয়ে পরে। কিন্তু কিছুক্ষন পরই তার এই খুসি ভয়ে রুপান্তরিত হয়ে যায়। সে কখনো এত সম্পদ দেখেনি। তাই চুরি হয়ে যেতে পারে সেই ভয়ে সে ভিত হয়ে পরল। সে তারপর চন্দ্র দেবতাকে অনুরোধ করল সে যেন তার সম্পদ গুলোকে কোন গভীর গুহায় লুকিয়ে রাখে। দেবতা তাই করল। বছর যেতে লাগল , জেলেও দিনে দিনে বৃদ্ধ হয়ে যেতে থাকল। মৃত্যুর কিচ্ছুক্ষন পুর্বে সে তার ছেলে মেয়েদের ডাকল গুরুত্ব পুর্ন একটি কথা বলবে বলে। কিন্তু কথাটি বলার পুর্বেই বৃদ্ধ মারা গেল। তারপর কেউই জানতে পারলনা তার লুকিয়ে থাকা সম্পদের কথা। এই লোককথা আমাদের এটাই বলে যে “ Unused wealth is worthless”.
২. বিয়ার রক ( Bear Rock)। ঃ

লোককথাঃ- অনেক দিন আগে অপুর্ব সুন্দরী সাত জন স্বতী রমনী জঙ্গলে ঘুরতে যায়। সেই সময় বেশ কিছু দৈত্যাকৃতি ভাল্লুক তাদের অনুসরন করছিল। হটাৎ করে আচমকা ভাল্লুক গুলো তাদের আক্রমন করে। সব দিক আক্রমনের ফলে সাতবোনই কোনঠাসা হয়ে পরে। এই অবস্থায় তারা ছটো একটা পাথরের ঊপরে উঠল এবং দেবতার কাছে তাদের উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা জানাল। দেবতা তাদের আকুতিতে সাড়া জানাল এবং তাদের দাঁড়িয়ে থাকা পাথরটকে উচু করতে করতে আকাশের উচ্চতায় নিয়ে গেল। পাথরটি উচু হবার সাথে সাথে ভাল্লুকগুলোও তার গা বেয়ে নিচে নেমে যেতে থাকল। তারা নেমে গেল কিন্তু সেই পাথরের মাঝে ধারালো নখ দিয়ে তারা যে আঁচর দিয়ে গিয়েছিলো তা আজও দেভিল টাওয়ারের গায়ে বিদ্যমান।
৩. 5. Uluru (Ayer’s Rock), Australia:

লোককথাঃ সুর্য দেবতা একসময় উলুরুর উপজাতিদের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়েছিল। সে তার সুর্যের মাদ্ধমে মরুভুমির সব মেঘ উরিয়ে নিয়ে যায়। এত তাপে উপজাতিরা মারা যাচ্ছিল। ঠিক তখন উপজাতিরা বৃষ্টি দেবতার কাছে তাদের উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করল। তাদের কঠিন প্রার্থনায় বৃষ্টি দেবতার মন গলে যায়। সে তাদের আশ্বস্ত করল যে সে তাদেরলে এমন একটি লেক উপহার দেবে যা সুর্য দেবতার কাছে অদৃশ্য থাকবে। কিন্ত তার কিছুক্ষন পরই তারা লক্ষ করল যে মাটি ফুড়ে এক্টি পাহার বেরিয়ে আসছে। এতে তারা হতভম্ভ হয়ে পরে,তারা ভেবেছিল যে মাটি ফুরে হয়ত কোনো লেক বের হবে। তার কিছুদিন পর তারা লক্ষ করল যে আয়েরার মাটির নিচ দিয়ে সুন্দর একটি লেক বয়ে যাচ্ছে এবং সুর্যের আলো সেখানে পৌছতে পারছে না। এই গল্পটি আমাদেরএটা শেখায় যে “ প্রকৃতির দয়া কখনোই শেষ হবার নয়। সন্তানের বিপদে প্রকৃতি মাতার হাত সবসময় প্রসারিত “ ।
৪. 2.Tsingi সিঙ্গগি( মাদাগাস্কার) ঃ-

লোককথা ঃ এই সিঙ্গগী কে নিয়ে যে লোক কথা গুলো রচিত হয়েছে তাদের মাঝের একটি হল-----অনেক অনেক দিন আগে নরম তুলতুলে লেমুররা যারা মাদাগাস্কারে বাস করত তারা তাদের ভাল ব্যাবহার ও আনুগত্যের জন্য চন্দ্র দেবতার কাছ থেকে একটি বিষেশ আলো উপহার পেল। এই আলো তাদের শরির কে চাদের আলোর মত উজ্জ্বল করে তুলল। এই উজ্জলতার জন্য তারা তাদের অনেক গর্বীত ভাবতে লাগল। কিন্তু কিছুদেন পর তারা আবিষ্কার করল যে বেশি উজ্জলতার জন্য ফুসারা (একধরনের বন্য বিড়াল ) তাদের সহজে শীকার করে ফেলছে। এইভাবে অই জংগলে লেমুর দের সংখা কমতে শুরুকরল। এই অবস্থায় বেচে থাকা সকল লেমুররা একটা পাথুরে স্থানে আস্রয় নিল এবং তাদের প্রিয় চন্দ্রদেবতার কাছে তাদের রক্ষা করার জন্য প্রার্থনা করল। চন্দ্র দেবতা তাদের আস্রয়ের স্থলকে ধারালো পাথুরে ফলায় রুপান্তরিত করে ফেলল। সেইথেকে সিঙ্গি হয়ে উঠল একটি দুর্গম জায়গা এবং লেমুর ছাড়া আর কেঊই এখানে থাকতে পারেনা।এইভাবে দেবতা তার প্রানপ্রিয় লেমুরদের ফুসাদের কাছ থেকে রক্ষা করল।
প্রতিটি লোককথারই একটি মোরাল থাকে , এই গল্পটির মোরাল হল “প্রাতইহটি ভালো ক্রিয়ারই একটি বিপরিত প্রতিক্রিয়া রয়েছে”।
৫. চকলেট হিল (ফিলিপাইন)ঃ-

লোককথা ঃ- কোনো এক সময়ে ফিলিপাইনের বাহোল অঞ্চলে একটি বিশাল মহিষ থাকত। মহিষ টি ছিলো একটি পর্বতের মত বড় ও নিষ্ঠুর। সে সব সময় তার প্রতিবেশী গ্রামগুলোর সকল সৈষ্য খেয়ে ফেলত বা নষ্ট করে ফেলত। তার অত্যাচারে অতিস্ট হয়ে তাকে তারানোর জন্য গ্রাম বাসী একটি বুদ্ধি বের করল। তারা তাকে বিশাল একটি ময়লা খাবারের স্তুপ খাবার জন্য আমন্ত্রন জানাল। এই খাবার দেখে ত মহিষ মহা খুসি। সে তারাতারি সব খাবার খেয়ে ফেলল। এরকিছুক্ষন পরই সে অসুস্থ হয়ে পরল।সে পাগলের মত এদিক সেদিক দৌড়াতে থাকল এবন বিশাল বিশাল গোবোরের স্তুপ ফেলতে শুরু করল। আর এই গোবোরের স্তুপগুলো শুকিয়ে এক্সময় এই চক্লেট আকৃতির পাহার গুলো সৃষ্টি হয়।। এইলোককথাটি আমাদের যে নিতিকথাটি শেখায় তা হল
“প্রতিবেশিদের কাছ থেকে কোন উপহার নেয়ার সময় অবস্যি সতর্ক থাকবে”।
৬. Blue hole . belize (Bahama):-

লোককথা ঃ-অনেক দিন আগে যখন পৃথিবী বরফ্র ঢাকা ছিল ,তখন বেলিজ দ্বিপের বড় বড় গুহাগুলোতে দাতালো বাঘের এক বিশাল দল বাস করত। এই গুহা গুলো তাদেরকে বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন শত্রুদের কাছ থেকে তাদের রক্ষা করে আসছিল। একদিন হঠাৎ করে অন্য গুহার প্রানীরা তাদের গুহা ছেড়ে চলে যেতে শুরু করল। বাঘরা যখন তাদের চলে যাবার কারন জিজ্ঞাস করল, তখন তারা জানাল যে সমুদ্র তাদের ডুবিয়ে নিয়ে যাবার জন্য এদিক দিয়ে আসছে। বাঘেরা তাদের কথায় কর্নপাত করল না। বরং তারা বলল যে এই গুহাই তাদের রক্ষা করবে। এদিকে পৃথীবির তাপমাত্রা আরো বেড়ে গেল। সকল প্রানীই তাদের নিজেদের গুহা ছেরে দিল। কিন্তু একদিন সমুদ্র আসলেই তাদের কাছে চলে আসল। হটাৎ করে বিশাল একটি ঢেউ তাদের গুহার দিকে ধেয়ে আসল। মুহুর্তেই বাঘদের গুহা পানিতে তলিয়ে গেল। কোনো বাঘই এই জলোচ্ছাস থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারলনা। এই গল্পে একটি গুরুত্বপুর্নmoral লুকিয়ে আছে আর তা হল। “নিজেকে গর্তে লুকিয়ে রেখনা । বেড়িয়ে এস, দেখ সারা পৃথিবীর সাথে নিজেকে সামিল কর”।
7.সুকুত্রা দ্বিপ (ইয়েমেন) ঃ

লোককথাঃ অনেকদিন আগে দেবতারা আরব সাগরের বুকে সুন্দর একটি দ্বীপ তৈরি করেছিলেন। তারা এই দ্বীপ টিকে তাদের পছন্দের সব সুন্দএ সুন্দর প্রানী ও গাছপালা দিয়ে সাজিয়েছিলেন। দেবতারা ত এম্নিতেই অনেক কাজে ব্যাস্ত থাকে তাই তারা তাদের প্রিয় দ্বীপ্টিকে রক্ষা করার জন্য একজন রাজা নীয়োগ করলেন। আর এই রাজার দায়িত্ব পেল লাল এক্টী ড্রাগন। ড্রাগনটি ছিল খুব নিষ্ঠুর , সে দ্বীপের সব পশু ও পাখীকে খেয়ে ফেলল। অনেকদিন পর দেবতারা যখন তাদের দ্বীপ ভ্রমন করতে আসল তখন ড্রাগন ছাড়া আর কাউকে জিবিত পেলনা। সেই সময় দেবতারা রাগে ও দুক্ষে ড্রাগনকে একটি গাছে রুপান্তররিত করে ফেলল। আজও সুকুত্রা দ্বীপের ড্রাগন গাছকে আঘাত করলে বেরিয়ে আসে লাল আঠা। আর তার সাথে সাথে একটি প্রবাদও সৃষ্টি হয় তা হল “শুটকীর নৌকায় পাহারার দায়িত্ব কখনো বিড়ালের হাতে অর্পণ করবে না”।
********* শেষ। ********
আমার এই গল্প পোষ্ট শেষ করতে করতে আপনাদের কমপক্ষে ৭ মিনিট লাগবে যদিও এটাকে তৈরি করতে আমার অনেকদিন লেগেছে। আমার এ পোষ্টের উদ্দেশ্য কি জানেন ? এই পোষ্টের মাধমে কিছুক্ষনের জন্যে হলেও আপনাদের ব্লগ ও ফেস বুকের কলুশিত পাতা পাতাগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন করে নির্মল আনন্দ দিতে পেরেছি।
আরেকটি অনুরোধ-ফালতু ক্যাচাল বাদ দিয়ে বেশি বেশি তথ্যমুলক লিখা পোষ্ট করুন। আপনার দেওয়া একটি মাত্র তথ্যই সাইবার জগতে বাংলাভাষাকে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবে।