পাঁচ কোটি টাকার বিনিময়ে সম্পন্ন হয়েছিল দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাসের মুক্তির আয়োজন। পরিকল্পনা ছিল মুক্তির খবরটি পরোপুরি গোপন রাখার। নিয়ম আছে, সকাল ১০টা থেকে সূর্যাস্তের আগে বন্দি মুক্তির। সে রীতি ভেঙে এ ক্ষেত্রে সকাল ৮টা ২০ মিনিটেই কাশিমপুর কারাগার থেকে বিকাশকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে গোল বাধে ভাগ-বাটোয়ারার বিরোধে। গোয়েন্দা সূত্র মতে, বিকাশের মুক্তির পাঁচ কোটি টাকার বিলি-বণ্টন হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কারা কর্তৃপক্ষের মধ্যে। তবে এ টাকার ভাগ না পাওয়ায় এক পক্ষ ঘটনাটি ফাঁস করে দেয়
গত শুক্রবার বিকাশের বেরিয়ে যাওয়ার সময় জেলগেটসহ রিসিপশন হলে বসানো সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্য হাপিস করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দিন বিকাশকে কারা নিতে এসেছিলেন এবং কিভাবে কোন গাড়িতে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সেসব দৃশ্যের রেকর্ড থাকার কথা। এখন সে সবের আর হদিস নেই বলে জানা গেছে। কারা কর্তৃপক্ষও রহস্যজনকভাবে বিষয়টি এড়িয়ে চলছে।
বিকাশের মুক্তির প্রক্রিয়া ঘিরে ছিল প্রবল নাটকীয়তা ও রহস্য। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের অনেকেই বলছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশমতো কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে বিকাশকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ ধরনের ভয়ংকর সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশকে বিষয়টি জানানোর রীতি থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। কাশিমপুর জেল গেটে শুক্রবার সকালে কালো গ্লাস লাগানো দামি গাড়িতে চড়ে বিকাশ যাদের সঙ্গে বেরিয়ে যায়, তাদের পরিচয় সম্পর্কে র্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা এখন মোটামুটি নিশ্চিত। এর মধ্যে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাগ্নে, শীর্ষ দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ কমপক্ষে সাতজন। ক্ষমতাসীন দলের অনুসারী প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী নেতা ও আরেক ব্যবসায়ীর ভাই বিকাশকে মুক্ত করার সব ব্যবস্থা করেন।