চিত্রনায়ক মাসুম পারভেজ রুবেল ও অমিত হাসান, চলচ্চিত্র প্রযোজক মাসুদ রানা এবং চরমোনাইয়ের পীর দাবিদার সৈয়দ রিদওয়ান বিন ইসহাককে খুঁজছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তাঁদের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকার একটি প্রতারণা মামলা হয়েছে। পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্ট এ মামলা দায়ের হওয়ার পর থেকেই আসামিরা গা ঢাকা দিয়ে আছেন। গতকাল শনিবারও তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য এফডিসিসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, চরমোনাইয়ের পীর দাবিদার রিদওয়ান বিন ইসহাক এবং চলচ্চিত্র প্রযোজক মাসুদ রানা দীর্ঘদিন ধরে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কম্পানি ব্যবসার নামে 'এইমওয়ে' নাম দিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। মাসুম পারভেজ রুবেল ওই প্রতিষ্ঠানেরই পরিচালক। রিদওয়ান বিন ইসহাক প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান। ইতিমধ্যে এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জবানবন্দিতেই উঠে এসেছে চিত্রনায়ক অমিত হাসানের নাম। একরামুল হক নামে এক ব্যবসায়ী এইমওয়ের শীর্ষস্থানীয় ১৩ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাতনামা আরো অনেককে আসামি করে ৫০ লাখ টাকার প্রতারণার অভিযোগে গত ৫ আগস্ট পল্টন থানায় একটি মামলা করেছেন। সৈয়দ রিদওয়ান চরমোনাইয়ের প্রয়াত পীর ফজলুল করিমের ভাই।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, মাসে দ্বিগুণ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে এইমওয়ে করপোরেশন সহজ-সরল লোকজনের কাছ থেকে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। প্রতারণার টাকা দিয়ে মাসুদ রানা ইতিমধ্যে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং আরেকটি চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছেন। এই চক্রে আরো একজন চিত্রনায়ক আছেন, যাঁর এক ভাই পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁর ব্যাপারেও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া সৈয়দ রিদওয়ান বিন ইসহাকও ছয় মাসে দ্বিগুণ লাভ দেওয়ার কথা বলে দেশের বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, শিক্ষিকাদের (মুরিদদের) কাছ থেকেও কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
মামলার এজাহারের উদ্ধৃতি দিয়ে ডিবির উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১১ সালের আগস্ট মাসের দিকে এইমওয়ে কম্পানির পরিচালক (মার্কেটিং) সোহেল রানার সঙ্গে বাদীর পরিচয় হয়। সোহেল তাঁকে এইমওয়ে প্রতিষ্ঠানে টাকা খাটালে মূল টাকাসহ দ্বিগুণ টাকা পাওয়ার লোভ দেখান। বাদী সে কথায় বিশ্বাস স্থাপন করে পুরানা পল্টনের এইমওয়ের ৫০/১ নম্বর অফিসে যান এবং সোহেল রানার মাধ্যমে রিদওয়ান বিন ইসহাক ও মাসুদ রানাকে নগদ ৫০ লাখ টাকা দেন। পরে বাদী কম্পানির চুক্তি অনুযায়ী টাকা না পেয়ে অফিসে গিয়ে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। এইমওয়ের কর্মকর্তারা তাঁকে টাকা না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। একপর্যায়ে টাকা চাইতে গেলে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।