যাদের ষ্টাটাস কম/নাই তাদের পক্ষে দাঁড়ানো আমাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে ওঠেনা। কিন্তু যাদের ষ্টাটাস হাই লেবেলের তাদের জন্য আমাদের সহানুভূতি যেন কয়েকগুন বেশি! আমি কোন নির্দিষ্ট ঘটনার কথা বলছিনা সামগ্রিকভাবেই মন্তব্য করলাম। আর রুমানা ম্যাডামের ইস্যুটা একটা পারিবারিক কলহের ইস্যু। এইটা নিয়া আমাদের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মরাকান্না দেখলে গাত্র দহন হয়। কেননা পারিবারিক কলহের এই ঘটনাকে তারা যেন জাতীয় ইস্যু বানিয়ে ফেলেছেন! এমনকি নারীবাদীরাও এই ইস্যু পেয়ে অনেকদিন পর মাঠ গরমের সুযোগ লাভ করেছেন। নারীনেত্রীরা নারী অধিকারের নামে সমাজে লিঙ্গ সংঘাত উস্কে দিচ্ছেন। কিন্তু তারা বোধহয় ভুলে যাচ্ছেন নারীহীন পুরুষ অচল তদ্রুপ পুরুষহীন নারীও অসম্ভব। সুতরাং নারী-পুরুষের সহাবস্থান এবং নারী-পুরুষের সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নারী-পুরুষ সম্পর্ক শত্রুতা নয় বন্ধুতায় পরিনত করতে হবে।
নারীবাদীরা (তথাকথিত নারীনেত্রীরা) মনে করেন নারী অধিকার মানেই নারীদের নিজের পায়ে দাঁড়ানো এবং পাশ্চাত্য অনুকরনে খোলামেলা চলাফেরা করার স্বাধীনতা। তথাকথিত আধুনিক এই করপোরেট যুগে নারীদের শারীরিক প্রদর্শনে তাদের কোনো আপত্তি নাই। তারা পুরুষকে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবেই ধরে নেন এবং পুরুষ বিরোধী ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে বাহবা কুড়ান। কিন্তু দুঃখের বিষয় তারাও কারও স্ত্রী, কারও কন্যা কিংবা কারও ভগ্নি। তদ্রুপ এই সমাজে অনেক কট্টর পুরুষকেও দেখা যায় যারা নারীকে মানুষ হিসেবে তুচ্ছ জ্ঞান করেন। অথচ তারা প্রত্যেকেই কোন না কোন নারীর গর্ভে জন্মেছেন। এই জাতীয় নির্বোধ লোকদের জন্যই নারী-পুরুষ দ্বন্দ্বের উৎপত্তি।
আমার এই লেখার উদ্দেশ্য কোন পক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করা নয়। শুধুমাত্র বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনার জন্য যাতে কেউ নারী কিংবা পুরুষ বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়ে সাধারন মানুষকে বিভ্রান্ত না করেন। আমরা মানুষ। জন্মগত ভাবে কেউ নারী কেউ পুরুষ। কিন্তু আমাদের পরিচয় আমরা মানুষ। তাই কাউকে নারী কিংবা কাউকে পুরুষ হিসেবে গন্য না করে মানুষ হিসেবে দেখুন। নিজেকে নিজে বদলে দিয়ে দেখুন আমাদের সমাজটাও একদিন বদলে যাবে ঠিক। সেই সুন্দর বৈষম্যহীন সমাজের প্রত্যাশায়।
পুনশ্চঃ এই লেখা দ্বারা আবার আমাকে এই বলে গালি দিবেন না যে আমি হাসান সাঈদের পক্ষ নিয়ে রুমানা ম্যাডামকে দায়ী করছি কিংবা ঘটনাটাকে অত্যন্ত স্বাভাবিক ধরে হাইলাইটস করতে নিষেধ করছি। হাসান সাঈদ যা করেছে তার বিচার আমাদের নিজস্ব আইনেই চলবে। আমি শুধু বলতে চাইছি এই ঘটনাকে পুঁজি করে কেউ কেউ নারী আন্দোলনের নামে সুকৌশলে নারী-পুরুষ সংঘাত তৈরীর অপচেষ্টা করছেন। আবার অনেক গুরুত্বপূর্ন ইস্যু বাদ দিয়ে আমরা এই ইস্যুকে ঘিরে তর্ক-বিতর্ক করছি। আমি শুধু এই কথাগুলোই বলতে চেয়েছি। সুতরাং আমাকে কেউ ভুল বুঝবেন না। সবাই ভালো থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১১ বিকাল ৪:২২