বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রর সাথে আমার সম্পর্ক বহু বছরের। দেশে থাকতে প্রায় নিয়মিতই তাদের লাইব্রেরি, আড্ডাতে যেতাম, বই কিনতাম। দীর্ঘ দিন তাদের সাথে থেকে বুঝেছি, এটা মূলত একটা কুসমান্ড তৈরির কারখানা। ব্যাপারটা খুবই ধীরে হয় ইংরেজিতে যাকে বলে slow poisoning. কেউ যদি দীর্ঘ সময় না বুঝে এর প্রভাবে থেকে সে হয়ে যাবে একটা আস্ত খাশি এবং সেটা বুঝতেও পারবে না। নিজেকে ভাববে বাঘ৷
শুরু করি শ্লোগান দিয়ে, তাদের শ্লোগান হল আলোকিত মানুষ চাই। আলোকিত মানুষ এটা য়ুরোপীয় ধারনা। য়ুরোপীয় রেনেসাঁসের সময় যারা ধর্ম ত্যাগ করেছিলো তারা নিজেদের এনলাইটেন্ড মানুষ বলতো। আবু সায়ীদ সাহেব সেই দর্শন এনে তার অনুবাদ করেছেন আলোকিত মানুষ। খোদ শাহাবাগপন্থী বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খান এটাকে বলেছিলেন "কুৎসিত অনুবাদ"৷
এই সাহিত্য কেন্দ্রের বেশিরভাগ বইতেই পরোক্ষভাবে ধর্ম বিরোধী অথবা গ্রিক বা য়ুরোপীয় নাস্তিকতার গুন-কীর্তন করে কিছু কথা পাবেন। একই অবস্থা তাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে। ইসলাম বা মুসলিম দেশের রুপকথা নিয়ে দুই/চারটা বই তারা রেখেছে, সে বইগুলোর সাহিত্য মান একেবারেই সাধারণ। এই বইগুলোর রাখাও সেই মগজ ধোলাইয়ের অংশ। যারা আনক্রিটিকালি (Uncritically) অনুসরণ করবে বা পড়বে, ধীরে ধীরে বিশ্বাসের দিক দিয়ে তারা পুরো, আধা বা সেমি নাস্তিক হয়ে যাবে।
সাহিত্য কেন্দ্র কেন্দ্রীক বুদ্ধিজীবী বা একটিভিস্টরা কোনদিন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কিছু বলে নাই, গুম-ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে কিছু বলে নাই, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে বলে নাই, কোটা সংস্কার নিয়ে কিছু বলে নাই, ভোট চুরি নিয়ে কিছু বলেন নাই, মধ্যযুগের দাসের চেয়েও পরিশ্রম করা গার্মেন্টেস কর্মীদের নিয়ে কিছু বলে নাই, প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কিছু বলে নাই। বলে তো নাই-ই উল্টো আবু সায়ীদ সাহেব তার ভক্ত সমেত প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে চুটকি করেন।
আলোকিত করার নামে তারা তাদের অনুসারীদের মধ্যে একটা নোংরা অহমিকা বা এক ধরনের বর্ণবাদী ভাব তৈরি, আমরা বই পড়ি আমরা তাদের থেকে ভাল। জনগন, প্রবাসী শ্রমিক এরা হীন, নিচ। তাই জনগণের কোন সমস্যাই তাদের তাড়িত করে না। যদি আগামী একশ বছর এই কেন্দ্র এভাবে থাকে এই একশ বছরেও এই কেন্দ্রের কোন একটিভিস্ট মানুষের সমস্যা নিয়ে একটা কথা বলবে না।
এই বর্ণবাদী মনোভবটা আবু সায়ীদ সাহেবের মধ্যে আক্ষরিক অর্থেই আছে। যারা তার আলোচনায় অংশ নিয়েছেন তারা জানেন তিনি নিজের শরীরে পর্টুগিজ রক্ত আছে বলে বিভিন্ন সময় বলেন। তার অতি প্রচারিত সংগঠন এবং বাঙালিত বইতে বাঙালি জাতীর খর্বাকৃতি নিয়ে বিদ্রুপ করেছেন। তবে হ্যাঁ, তিনি very deep water fish, জনসম্মুখে কম আসেন। একটা জাতীয় দৈনিকে শাড়ি মেয়েদের সবচেয়ে যৌন আবেদন পূর্ণ পোশাক, শাড়ি পরলে মেয়েদের দেহের আকৃতি কেমন হয় জাতীয় কথা বলে একবার ধরা খেয়ে আসা আরো বন্ধ করেছেন।
তবে গনমাধ্যম যাদের স্যার বানিয়েছে তারা যে আদতে ষাড় সেটা প্রকাশ হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরো হবে।।
আজ উনার জন্মদিন৷।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২০