বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে করা ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই বিখ্যাত রিপোর্ট এটাই বলে। মার্চ মাসের মাঝামাঝিতে নেত্র নিউজ এই রিপোর্ট ছাপে। নেত্র নিউজ সরকার বিরোধী হওয়ায় প্রথমে সরকার বিরোধী সবাই ফেইসবুকে বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ মারা যাবার এই খবর শেয়ার করে। পরে সাথে যোগ দেয় মূলধারার সব গণমাধ্যম। পঙ্গু হয়ে যাওয়া গণমাধ্যমগুলোর টিআরপি লাফিয়ে আকাশ ছোঁয়।
আজ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে মারা গেছেন ১৮৭ আর বেসরকারি হিসাবে ৩০০ থেকে ৪০০ এর মধ্যে।
একই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা গেছে প্রায় ৩০০ মানুষ। ডায়বেটিস, ফুসফুস জনিত রোগে আরো বেশি মানুষ মারা গিয়েছে।
এই রোগের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে কিন্তু এভাবে ইউরোপীয় মডেলের লক ডাউন করাটা কতটা যৌক্তিক প্রশ্ন থেকে যায়। আর লক ডাউনের প্রকৃতিও চুড়ান্ত হাস্যকর। করোনা ছড়ানোর মূল কেন্দ্র কাচা বাজারে কোন নিয়ম নীতির বালাই নাই। রিকশা ওয়ালা রাস্তায় ছিল, পুলিশ পিটিয়ে কড়াইলের বস্তিতে তার বাড়িতে ঘুকিয়ে দিলো, যেখান কয়েকশ মিটার জায়গার মধ্যে ১/১.৫ লক্ষ মানুষ বাস করে। তাদের পানি সংগ্রহ এবং টয়লেট একই জায়গায়। আবার প্রতিদিন রাতেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে শত শত মানুষ গাদাগাদি হয়ে বসে থাকে ত্রাণের অপেক্ষায়...
বুদ্ধিজীবীদের দ্বায়িত্ব হল সংখ্যা না দেখে বাস্তব অবস্থা জাতির সামনে তুলে ধরা। একমাত্র ফরহাদ মজহার ছাড়া সব বুদ্ধিজীবীই এখানে চরম ব্যর্থ।
গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে একমাত্র ডয়েচে ভেলে ছাড়া সব টিভি স্টেশন ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ভুয়া রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে করোনা সম্পর্কে আরো ভীতিকর খবর ছড়াচ্ছে, তাদের টিআরপির জন্য৷ এরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে জানাজার পরে ২০ লক্ষ মানুষ মারা যাবে বলে খবর প্রচার করেছিলো কিন্তু ১৮ দিন পর বাস্তবে দেখা যায় একজনও আক্রান্ত হয়নি।
৬ কোটিরও বেশি দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের কথা চিন্তাভাবনা না করেই লক ডাউন দেওয়া হল। সাথে আছে আরো কয়েক কোটি কিছু বলতে না পারা মধ্যবিত্ত। ভোট ডাকাতি, দুর্ণীতি, ক্রসফায়ার সহ আরো একশটা কারনে সরকারকে দোষ দেওয়া যায়। কিন্তু এই ইস্যুতে সরকারের তেমন দায় নেই৷ এই টিআরপির পাগল মিডিয়া আর বুদ্ধিজীবীদের চাপে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
এই ৬ কোটি মানুষের কাছে খাবার পৌছানোর কোন পদ্ধতি সরকারের নেই। এটার জন্য সরকারকে গালি দিতেই পারেন তবে বর্তমান সরকারই একমাত্র অপরাধী না এর জন্য, এই সিস্টেম গত ২৬০ বছরে গড়ে উঠেছে, একদিনে পরিবর্তন করা যাবে না। আর মধ্যবিত্তের রান্নাঘরের খবর জানার তো প্রশ্নই আসে না। এই মুহুর্তে জাস্টিন ট্রুডো আসলেও কিছু করতে পারবে না।
দেশের দারিদ্র্যতা ২০% থেকে লাফ দিয়ে ৪০% হয়ে গেছে৷ কৃষকরা ফসল সংগ্রহ করতে পারছে না। সবজি ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে। গরীবরা ভাত দে বলে মিছিল করছে, অসহায় মধ্যবিত্ত অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। আর বাপের টাকাওয়ালা গান্ডু বুদ্ধিজীবী এবং গান্ডু নাগরিকগন বাসায় বসে বসে মনের আনন্দে... থাক রমজান মাস।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০২০ দুপুর ২:৩৫