টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ছিলেন এমন ১৫ জন জাপানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে নোবেল জিতেছেন ১০ জন। মজার বিষয়, দু'একজন ছাড়া তেমন কারো মূর্তিই এই ক্যাম্পাসে স্থান পায়নি অথচ স্থান পেয়েছে একটি কুকুর আর তার মালিকের মূর্তি। বলুন তো কেন? ১৯২৪ সালের কথা, ‘হাচিকো’ নামের এই কুকুর ছানাটি জন্মের মাত্র পঞ্চাশ দিনের মাথায় উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর হিদেসাবুরে উয়েনো। তিনি আদর-যত্ন দিয়ে হাচিকো’কে বড় করেছিলেন। স্বভাবতই হাচি ছিল তার ভীষণ ভক্ত। প্রতিদিন সকালে সে প্রফেসরকে রেলস্টেশনে এগিয়ে দিয়ে আসে। আবার, বিকেলবেলা প্রফেসরের ট্রেন আসার একটু আগে গিয়ে রেলস্টেশনের চত্বরে বসে থাকে। প্রফেসর ট্রেন থেকে নামলে তার সাথে একত্রে বাড়ি ফেরে। এভাবেই কেটে যায় অনেকটা সময়। একদিন, ক্লাস চলাকালীন সময়ে হার্ট এ্যাটাক করে মারা যান প্রফেসর উয়েনো। কিন্তু হাচির পক্ষে তা বোঝা সম্ভব না। হাচি সেদিনও বরাবরের মত পড়ন্ত বিকেলে যায় প্রফেসরকে আনতে। ট্রেন থেকে সবাই নামে, প্রফেসর নামেনা। সারা রাত রেলস্টেশনে বসে থাকে সে। অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে, স্টেশনের দিকে, পরিচিত মুখের আশায়। পরিচিত মুখ আর আসেনা। উয়েনো’র মৃত্যুর পরও হাচি প্রতিদিন সকাল-বিকাল ট্রেনস্টেশনে এসে বসে থাকত। মৃত মানুষ কখনও ফিরে আসেনা; তাই দীর্ঘ নয় বছর ধরে দিনের পর দিন এভাবে শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা মাথায় নিয়ে স্টেশনে এসে অপেক্ষারত হাচি’র কাছে ফিরতে পারেন নি প্রফেসর উয়েনো। সেখানে অপেক্ষারত অবস্থায়ই হাচি একদিন মারা যায়। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিতান্ত সাধারণ প্রাণীটির অসাধারণ গল্প ছাত্র-ছাত্রী, অতিথিদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে একটি প্রতিমূর্তি স্থাপন করেছে। এতে দেখানো হয়েছে ডক্টর উয়েনো ফিরে এসেছেন আর হাচি তাঁকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে।
জাপানি ভাষায় হাচিক-কে 'চুকেন হাচিকো'। হাচিকে নিয়ে এ পর্যন্ত অনেক গল্প, উপন্যাস লেখা হয়েছে। কিছু সিরিয়ালে হাচিকে নিয়ে পর্ব রয়েছে। রয়েছে ডকুমেন্টারি। ২০০৯ সালে হাচিকে হলিউডে একটা মুভিও বানানো হয়। নাম, Hachi, A dog’s tale
সূত্র- ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬