৬ষ্ঠ বাংলা ব্লগ দিবসে সিলেটেও জমেছিল ব্লগারদের মিলনমেলা। আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল ১৯শে ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেল চারটায় সিলেটী ব্লগাররা চলে আসবেন নগরীর চৌহাট্টায় নতুন নির্মিত দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে।
শীতের বিকেলে ব্যস্ত নগরীর ফুটপাথের টঙে টঙে ধোয়া উঠা গরম চায়ের কাপের সাথে আড্ডার ধুম। পথচারীরা কেউ কেউ খেঁজুর গুড়ের ভাপা পিঠা কিংবা সরষে ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে ব্যস্ত। এমনি সময়ে সিলেটে ব্লগারা একে একে হাজির শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। কেউ এসেছেন দুপুরের কাঁচা ঘুম ছেড়ে, কেউ মাফলার গলায় চাদর মুড়ি দিয়ে, রিকশায় বসে কেউ প্রিয়জনের কথা ভাবতে ভাবতে, কেউ বা আবার বউ বাচ্চা নিয়ে সোজা বিয়ে বাড়ি থেকে চলে এসেছেন।
চলছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। সুতরাং শহীদ মিনারের মঞ্চ খালি থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক। মাইকে বক্তৃতা চলছে- সিলেট ফটোগ্রাফিক এসোসিয়েশন একটি পুরাতন সংগঠন। আমরা প্রগতিশীল ফটোগ্রাফাররা প্রকৃতির ছবি তুলি, মানুষের ছবি তুলি...ইত্যাদি ইত্যাদি। তখনো সব ব্লগাররা এসে পৌছায় নি। এই ফাঁকে আমরা কয়েকজন ফটোগ্রাফিক এসোসিয়েশনের এক্সিবিশনটা ঘুরে দেখলাম। আহা !! কি সুন্দর বাংলাদেশ !!
লোকে লোকারন্য সিলেট শহীদ মিনার। ব্লগাররা কোথায় বসবেন। সিদ্ধান্ত হলো শহীদ মিনারের ডানপাশে গণকবরের পাশের দেয়ালের আঙ্গিনায় দাঁড়াবো আমরা। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশ। দেশ নিয়ে যারা লিখেন, দেশের জন্য যারা লিখেন তারাতো শহীদ স্মৃতির পাশেই সবসময় দাঁড়াবে
লাল ইটের দেয়ালটিতে ৬ষ্ঠ ব্লগ দিবসের ব্যানারটি টানানো হলো।
ব্যানার টানিয়েই তার সামনে উপস্থিত ব্লগাররা পরিবার ও বন্ধুসহ দাঁড়ালেন। একটা ছবি তুললে মন্দ হয় না। কিন্তু সবাই এমনভাবে দাঁড়িয়ে রইলেন যেন দুপুরে কারো পেটে ভাত পড়েনি। ফটোগ্রাফারের এমন রসিকতায় সবাই হেসে উঠলেন। এমন সময় ছবিটি তোলা হলো।
এটা হলো ৬ষ্ঠ বাংলা ব্লগ দিবসের কেকের সিলেটী ভার্সন। ক্রিম রঙের কেকটির উপর তিনটি গোলাপ ফুল। খুব ইচ্ছা ছিল ফুলগুলো খাবো। লজ্জ্বায় তখন বলতে পারিনি।
কেক কাটার প্রস্তুতি।
অবশেষে কেকটি কাটা হচ্ছে। ব্লগার আশিক ভাইয়ের পুচকি মেয়ে আমাদের সবার হয়ে কেকটি কাটছে।
সিলেটের ব্লগাররা এই ভাবীর প্রতি সবচে বেশি কৃতজ্ঞ। খুব গোছালো ভাবিজান কাটা কেকটি সবার মাঝে বিতরণ করেছিলেন। "টিস্যু কই মামুন ভাই?" বলার সময় ছবিটি তোলা হয়েছে। কেকের পর ছিল সমুচা, চিকেন পেটিস আর কোকাকোলা। খাবার শেষে আঙ্গিনা থেকে আবর্জনা পরিস্কারের নেতৃত্বেও ছিলেন ভাবি।
হাসতে নাকি জানেনা কেউ কে বলেছে ভাই...
কোন কথা নাই..হাসতে হাসতে কেক খাই..
চলছে আড্ডা। এই কথা সেই কথা...
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামছে...শহীদ মিনারের ফ্লাড লাইটের আলোয় জ্বলজ্বল করছে ব্লগ দিবসের ব্যানারটি.. যোগাযোগে সামাজিক মাধ্যম ও আমাদের দায়বদ্ধতা।
মুন্সী সাহেব যেন সত্যিই কবি...আহা !! হোয়াট এ পোজ !!
যার কারণে সব ব্লগার এক হতে পেরেছেন। মামুন ভাই.. ধন্যবাদ আপনাকে !!
সবচে নিরব মানুষটির ছবি তুলছে সবচে সরব মানুষটি..
সরব মানুষ রূপম...আপু সমাজ চোঁখ নামান..
নিশাত এসেছিল সবার পরে.. অবশ্য গর্বে বুকটা ফুলে যায় যখন শুনি বন্ধু আমার অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্নবাসনে কাজ করছে। মৌলভীবাজারের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সময় কাটিয়ে সে সরাসরি যোগ দিল আমাদের সাথে।
মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সিলেটের শহীদ মিনারটি। রক্ত রাঙা লাল সূর্য্যটা যেন ঠিকরে বেড়িয়ে আসতে চাইছে।
বাঁধাই করে রাখার মতো ছবি। শহীদ বেদিতে সিলেটের ব্লগাররা। সামনে সবুজ শার্টে লেখক।
মুক্তচিন্তার জয় হোক। আবারো সবাইকে বাংলা ব্লগ দিবসের শুভেচ্ছা