somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তচিন্তা কিংবা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা

২৮ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুক্তচিন্তা কিংবা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার স্লোগানটি কতটা চাতুর্যপূর্ণÑঅ-চতুর সব মানুষই সেটা জানেন। সাদা লেবাসের এই দুই শব্দবন্ধ দিয়ে কত নোংরা ও বিধ্বংসী জিনিসপত্র সরবারহ হয়Ñ আমরা সেসব ইতিমধ্যেই ঢের দেখেছি। তবু সাবেক কমু, হিন্দুবাদী সুশীল আর ইসলামবিদ্বেষী সেকুলারদের চক্করে এ বিষয়ে বারবার ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রকাশ্যে চরম ও জঘন্য ইসলামবিদ্বেষী লেখা ও বক্তব্যের পক্ষেও অবস্থান নিতে দেখা গেছে প্রভাবশালী মিডিয়া ও মুখঢাকা নাস্তিকদের। এতে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনা। ঘটেছে দুর্ঘটনা। কিন্তু এসব ইসলামবিদ্বেষী নোংরামি নিয়ে দেশের কর্তা-পর্যায় থেকে মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতেই চাইতেন না। উল্টো প্রতিবাদী, প্রতিরোধী কিংবা ক্ষুব্ধ মানুষকেই একতরফা দোষী সাব্যস্ত করা হতো। এর মধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু ইতিবাচক কথা বললেন সেদিন। সেজন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই।
বাংলা নববর্ষের দিনে গণভবনে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখার সময় তার কণ্ঠে উঠে এসেছে এ সরল বাস্তবতা। তার কথাÑ ‘এখন একটা ফ্যাশান দাঁড়িয়ে গেছে যে ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তারা হয়ে গেল মুক্তচিন্তা।’... ‘আমি তো এখানে মুক্তচিন্তা দেখি না, আমি এখানে দেখি নোংরামি।’ তিনি বলেছেনÑ ‘যাকে আমি নবী মানি তার সম্পর্কে নোংরা কেউ যদি লেখে সেটা কখনো আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’ ...‘নোংরা কথা, পর্ণ কথা কেন লিখবে? এটা তো সম্পূর্ণ নোংরা মনের পরিচয়।’... ‘আমার ধর্ম আমি পালন করি। কিন্তু আমার ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি নোংরা কথা লেখে, বাজে কথা লেখে সেটা আমরা কেন বরদাশত করব।’
একটি মুসলিম প্রধান দেশের মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার এ বক্তব্য অভিনন্দনযোগ্য। তিনি অবশ্য গত কয়েক মাসে এ-জাতীয় বক্তব্য আরো দুয়েকবার দিয়েছেন।
ধর্মসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ইতিপূর্বের অনেক অবস্থান ও বক্তব্যের সঙ্গে অনেকের ভিন্নমত আছে। আমাদেরও আছে। সেসবের জন্য আমাদের মনের মধ্যে দুঃখ ও প্রতিবাদও জমে আছে। কিন্তু সেসব কারণে তার এই বক্তব্যের বাস্তবতা গ্রহণ না করার পক্ষে আমরা নই। আমরা বরং বলতে চাই, তার এ বক্তব্যটির মূল সুরের সঙ্গে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে ধর্ম-অবমাননা প্রতিরোধ বিষয়ে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলারও চেষ্টা করা যায়। কিংবা ধর্ম-অবমাননা বন্ধে জাতীয় কোনো দাবি কিংবা ঐক্যের সঙ্গে তার বক্তব্যের এই সুরটিকে একীভূত করে রাখা যায়। রাষ্ট্রের ‘গণতান্ত্রিক’ চেতনা এবং ইসলাম-অনুসারী মানুষের অনুভবের দিক থেকে আমাদের অনুভূতি তো এরকমই। আমরা বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা-এই বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠে বাস্তবতার প্রতিধ্বনি শুনেছি। অথচ আরেকটি বাস্তবতা হলো, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য সত্ত্বেও ঢাবির মতো জায়গায় বোরকা পরার ‘অপরাধে’ মেয়েদের অপমান করছে শিক্ষকরা। ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও পোশাকধারী মানুষেরা জায়গায় জায়গায় নাজেহালের শিকার হচ্ছে। ইসলামবিদ্বেষের প্রকাশ্য মহড়া সদম্ভে চলছে বিভিন্ন মিডিয়ায়। ইসলামী শিক্ষার সঙ্গে বিরোধপূর্ণ শিক্ষা আইন পাশ করা হচ্ছে। হিন্দুবাদী ও নাস্তিক্যপন্থী উপাত্ত পাঠ্যপুস্তকে নতুন করে যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের জিজ্ঞাসা, প্রধানমন্ত্রীর এমন বাস্তবোচিত বক্তব্যের পাশাপাশি এত ‘অসঙ্গতি’ নিচের দিকে চলছে কীভাবে? তাহলে কি উপরের ‘বক্তব্য’ আর নিচের ‘আচরণের’ মধ্যে ইচ্ছাকৃত অসঙ্গতির কোনো সুরঙ্গ তৈরি করা আছে?
উল্লেখ করা যায়, এখানে আমাদের কাছে ব্যক্তি শেখ হাসিনা কিংবা ব্যক্তি খালেদা জিয়া কিংবা ব্যক্তি ... মুখ্য নন। আমাদের যখন যিনি অভিভাবক, আমাদের দাবি, তিনি আমাদের কষ্ট, দগ্ধতা, অধিকার ও অনুভূতিকে বহন করবেন। ধর্ম-অবমাননা রুখবেন সব রকম মায়াজাল ছিন্ন করে। বিশ্বাসী কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বন্ধ করবেন। বিশ্বাস ও নৈতিকতার পক্ষে দাঁড়াবেন। মানবিকতার কোমল জায়গাটিকে সুরক্ষিত রাখবেন। তাদের কাছে তো আমাদের এটাই প্রত্যাশা। আমরা মনে করতে চাই, মুসলিম নাগরিকের বিশ্বাস, কর্ম, নীতি, উৎসব এবং আনুষ্ঠানিকতায় ইসলামের নীতি ও চেতনা থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোনো ‘চোরা’ চেষ্টাও যেন রাষ্ট্রের কোনো গোপন রন্ধ্রে চালু না হয়Ñ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার আন্তরিক দৃষ্টি সেদিকে নিবদ্ধ করবেন। দুআ করি, প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক কথায় যারা আস্থা রাখতে চান না, দিনশেষে আমাদেরও যেন তাদের কাতারে শামিল হতে না হয়। কারণ প্রধানমন্ত্রীর বাস্তবতাপূর্ণ ও সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তই ধর্মপ্রাণ মানুষের কাম্য।
-sharif mohammad
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। পৃথিবীকে ঠান্ডা করতে ছিটানো হবে ৫০ লাখ টন হীরার গুঁড়ো

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:০২




জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে বেড়েছে তাপমাত্রা। এতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তাই উত্তপ্ত এই পৃথিবীকে শীতল করার জন্য বায়ুমণ্ডলে ছড়ানো হতে পারে ৫০ লাখ টন হীরার ধূলিকণা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অচেনা মানুষ আপনাদের দীপাবলীর শুভেচ্ছা

লিখেছেন আজব লিংকন, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:২১



আমারই বুকে না হয় শিবেরই বুকে
নাচো গো... ও নাচো গো...
পবন দা'র গলায় ভবা পাগলার গানটা কারা জানি ফুল ভলিউমে বাজিয়ে গেল। আহ.. সে সুরের টানে বুকের মাঝে সুখের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×