১. শার্লক হোমসের অমর স্রষ্টা স্যার আর্থার কোনান ডয়েল প্যারিসে বেড়াতে গেছেন। একটা ট্যাক্সিতে উঠতেই ট্যাক্সি চালক তাঁকে
প্রশ্ন করল-কোথায় যাবেন মিস্টার ডয়েল?
আর্থার কোনান ডয়েল অবাক হয়ে জানতে চাইলেন-তুমি আমাকে চিনলে কি করে?
ড্রাইভার উত্তর দিল-কাগজে দেখেছিলাম লেখক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল প্যারিসে এসেছেন। আর আপনার ডান হাতে আঙ্গুলে কালি লেগে আছে দেখে বুঝলাম যে আপনি লেখক। তাছাড়া আপনার চালচলন পোশাক দেখেই বুঝেছি যে আপনি নির্ঘাত ইংরেজ।
বাহ, তোমার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা যে আমার শার্লক হোমসের চেয়েও বেশী। সামান্য কয়েকটা লক্ষণ দেখেই তুমি আমাকে চিনে ফেললে।
অবশ্য আপনাকে চিনতে আরও একটা ব্যাপার সাহায্য করেছে।
সেটা কি? উৎসুক হয়ে কোনান ডয়েল জানতে চান।
আপনার হাতের ব্যাগের গায়ে বড় বড় করে আপনার নাম লেখা রয়েছে।
২. রানাঘাটের জমিদার গোপাল চৌধুরী ছিলেন ভীষণ মোটা। একবার তিনি হাতির পিঠে চড়ে পার্শ্ববর্তী জমিদারের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান। গোপাল চৌধুরীকে দেখতে লোকের ভীড় জমে যায়।
হাসতে হাসতে চৌধুরী সাহেব বললেন-কিহে তোমাদের গাঁয়ের লোকেরা কি এর আগে কখনও হাতি দেখেনি।
প্রতিবেশী জমিদারও কম যান না। তিনি উত্তর দেন-হাতি ওরা অনেক দেখেছে কিন্তু হাতির পিঠে হাতি তারা আগে কখনও দেখেনি।
৩. প্রাচীন গ্রীক কবি ফিলেমোন একদিন দুপুরে খেতে এসে দেখেন যে একটি গাধা তার জন্য রাখা সব খাবার খেয়ে নিচ্ছে। ঘটনাটি দেখে উনার ভীষণ হাসি পায়। হাসি এতই বেদম আকার ধারণ করে যে একটু পর হেচকি উঠে মারা যান দুর্ভাগা কবি।
৪. আলবার্ট আইনস্টাইন পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানী হলেও তাঁর চালচলন ছিল একেবারেই সাধাসিধে। এমনকি তিনি ট্রেনে চলাফেরা করতেন তৃতীয় শ্রেণীর কামরায়।
একবার বেলজিয়ামের রানী তাঁকে ব্রাসেলস এ নিমন্ত্রণ করলে তিনি যথারীতি সাধারণ বেশে তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় চেপে এসে নামলেন স্টেশনে। নেমে দেখলেন বেজায় ভিড়। ভিড়ের ফাঁক-ফোঁকর গলে তিনি কোন রকমে বাইরে বেরিয়ে হেঁটে এসে পৌছালেন রানীর প্রসাদে। রানী তো হঠাৎ করে আইনস্টাইনকে এভাবে সামনে দেখে হতভম্ব।
তিনি কোন মত বললেন-প্রফেসর আইনস্টাইন, আপনি এবাবে হেঁটে আসলেন, অথচ আপনাকে আনতে আমি স্টেশনে গাড়ী আর লোকজন পাঠালাম।
হবে হয়ত বললেন আইনস্টাইন। স্টেশনে তাহলে ভিড় বাধিয়েছিল আপনার পাঠানো লোকেরাই।
৫. প্রখ্যাত নাট্যকার জর্জ বার্নার্ড শ তার ‘সেন্ট জোন’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়নের রাতে উপস্থিত থাকবার জন্য স্যার উন্সটন চার্চিলকে দুটি টিকেট পাঠান। সাথে একটি চিরকুট লিখে পাঠান- একটি টিকেট আপনার আর অন্যটি আপনার বন্ধুর জন্য। তবে আদৌ যদি আপনার কোন বন্ধু থেকে থাকে।
চার্চিলও শ কে একটি চিঠি পাঠান। তাতে লেখা ছিল- মঞ্চায়নের প্রথম রাতে উপস্থিত হতে পারছি না বলে দুঃখিত। সম্ভব হলে দ্বিতীয় রাতের জন্য টিকেট পাঠাবেন। অবশ্য আদৌ যদি আপনার নাটকের দ্বিতীয় রাত বলে কোন কিছু থেকে থাকে।
৬. প্রখ্যাত ইংরেজ লেখক সমারসেট মম বৃদ্ধ বয়সে ভীষণ অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তার এক ভক্ত ফোন করে উনার কাছে জানতে চাইল-কিছু ফুল আর ফলমূল পাঠালে তিনি তা গ্রহণ করবেন কিনা।
উত্তরে মম বলেন-ফলমূল পাঠাবার ক্ষেত্রে বলতে হয় তুমি বড্ড দেরী করে ফেলেছ। আর ফুল পাঠাবার সময় এখনও আসেনি।
৭. ইউলিসিস খ্যাত লেখক জেমস জয়েস এর কাছে একদিন এক তরুণ ভক্ত এসে বলল-যে হাত দিয়ে আপনি ইউলিসিস এর মত মহৎ সাহিত্যকর্ম রচনা করেছেন সেই হাতে কি আমি একবার চুমু খেতে পারি?
না-উত্তর দিলেন জয়েস। কারণ এই হাতে আমি অনেক মন্দ কাজও করেছি।
৮. ধনাঢ্য ব্যবসায়ী জন ডেভিড রকফেলারের ব্যক্তিগত জীবন ছিল খুব সাধাসিধে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি অর্থ উপার্জন করেছিলেন বলে অযথা অপব্যায়ে তার মন সায় দিত না।
একবার ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়ে তিনি একটি হোটেলের সবচেয়ে কমদামী কক্ষটি নিজের জন্য ভাড়া করেন।
হোটেলের ম্যানেজার একদিন বলে বসে-স্যার আপনার ছেলে যখন এই হেটেলে আসে তখন সবচেয়ে দামী কক্ষটি ভাড়া নেন। অথচ আপনি সবচেয়ে কমদামি কক্ষটি ভাড়া নিলেন কেন?
রকফেলার জবাব দেন-কারণ আমার ছেলের বাবা পয়সাঅলা লোক। কিন্তু আমার বাবা ছিলেন নিতান্তই গরীব।
৯. ভারতে জন্মগ্রহণকারী নোবেল বিজয়ী ইংরেজ লেখক রুডইয়ার্ড কিপলিং যে পত্রিকাটির গ্রাহক ছিলেন সেখানে একবার ভুলবশত কিপলিং এর মৃত্যু সংবাদ ছাপা হয়। সংবাদটি পড়ে তৎক্ষণাৎ কিপলিং পত্রিকা সম্পাদককে চিঠি লিখলেন-আপনার পত্রিকা মারফতে জানতে পারলাম যে আমার মৃত্যু হয়েছে। তাই দয়া করে আপনাদের গ্রাহক তালিকাটা থেকে আমার নামটি বাদ দিয়ে দিবেন।
১০. একবার ব্রিটিশ পুলিশ এক চোরকে খুঁজে বেড়াচ্ছিল যার চেহারার সাথে তখনকার প্রধানমন্ত্রী জন মেজরের চেহারার অনেক মিল ছিল। পুলিশ চোরের ছবি দিয়ে ধরিয়ে দিন বিজ্ঞাপনও ছাপিয়েছিল।
লোকে জন মেজরকেই চোর ভেবে ভুল করতে পারে ভেবে তারা বিজ্ঞাপনের নিচে লিখে দিল-প্রধানমন্ত্রী নন।
সংগ্রহ: আসমার ওসমান সম্পাদিত বিখ্যাতদের সত্যি জোকস।