সেলুলেড ছবি (পার্ট-১)
আমি হাঁটতেই থাকি। চাঁদটা ঠিক আমার মাথার উপরে। হাতের তালু মেলে ধরি,রেখা গুলি কত স্পষ্ট। আমি একটি খলার উপর দিয়ে হেঁটে যাই। ধান শুকানোর জন্য কৃষান-কৃষানী মনের মাধুরী মিশিয়ে খলা তৈরি করে। একটি কবিতার লাইন মনে পড়ে ”সম্পূর্ন চাঁদের রুপালী জোসনায় তোমার স্পষ্ট ছায়া, মূমুর্ষ আমি শেষ বারের মতন তোমার হাত ধরব বলে, নির্মম মৃত্যু যন্ত্রনা গিয়েছি ভুলে।” কবিতার শেষের দিকের কয়েকটি লাইন। কাস্তে বাঁকা চাঁদ নিয়ে জীবনান্দ দাশের একটি কবিতা পড়েছিলাম। সম্পূর্ন চাঁদ নিয়ে লিখতে হয়ত কবি ভুলে গিয়েছিলেন। যদি মিলিয়ে যেতে পারতাম চাঁদেও আলোতে বাতাসের মতন করে। কোথাও কোন সাড়া শব্দ নেই। দূরের ঝোপ থেকে কচুপাতারা বাতাসের শাসনে হাত ইশারায় ডাকছে। কাছেই দাদার কবর। বছর তিনেক আগে মারা গেছেন। পাশের ঝোপ থেকে একটি শিয়াল ডাক দেয়। সাথে সাথে অনেক গুলি শিয়াল ডাকে। আমি এগিয়ে চলি, বৃষ্টির জন্য উন্মুখ হয়ে থাকা খাঁ-খাঁ মাঠ ধরে। হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মধ্যে দুই একটা সেলু কল পাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। গর্তেও তলায় সামান্য পানি জমে থাকে। এর মাঝে নিজের প্রতিবিম্ব দেখকে আমার খুব ভাল লাগে। আমার চেহারায় ক্লান্তির চাপ। ঘামের সাথে বালির সেতু বন্ধনে চাঁদের আলো চিকচিক করে হেসে উঠে আমার অবয়বে। ঠিক, বৃষ্টি দিনে পুকুরে রুপলী পুঁটি মাছের ডুবা-ভাসার মত। ”অনেক দিন পরে এলি।” আমি স্পষ্ট শুনতে পাই। ছায়াটা তখন আমার খুব কাছে। আমি বলি, তুমি এত দেড়ি করলে যে ? আমি সেই কখন থেকে হাঁটছি। মহাপুরুষ বলে ”আমি যাবতীয় প্রশ্নের উর্দ্ধে।” অন্য দিনের মতই আমি তাঁর কেনি আঙ্গুলটা ধরে হাঁটতে থাকি। ”ব্লগের জন্য গল্প খুঁজছিলি, আচ্ছা এই ব্লগ তোকে কি দিয়েছে ?” আমি বলি, ব্লগ আমাকে শুদ্ধ করেছে। ক্ষেপা কংশের মত যখন ছিলাম আমি ত্রাস সৃষ্টিকূলের জন্য, ব্লগ দেবী দূর্গা হয়ে করেছে আমায় নিধন। অনেক ক্ষন তাঁর কোন আওয়াজ পাই না। দূরের প্রকান্ড বট গাছটি এখন খুব কাছে। না জানি কত শতক বছর সে এভাবে দাড়িয়ে আছে। ”তুই কখন গাছটার কাছেও ঘেষতি না কখনো, বড্ড ভীতু ছিলি তুই।” আমরা গাছটার একদম কাছে চলে আসলাম। বটপাতার চাউনী দেওয়া কুড়ে ঘরের মত তার শরীর। আমি পাতা ভেদ করে ভিতওে ঢুকে পড়লাম। ছায়াটা পাতার সাথে মিলিয়ে গেল। ভিতরটা পরিষ্কার। কেউ এসে প্রতিদিন ঝাড়– দিয়ে যায়। চাঁদের আলো পাতার ফাঁকে উঁকি দেয়। ইটের উপর একটি মোমবাতি জ্বলে। ক্যানাবিসের কড়া গন্ধ এসে নাকে লাগে। সন্ন্যাসী মুখ তুলে তাকায়। অবিকল নির্মলেন্দু গুনের মত লাগে। গোফ-দাড়ির ফাঁক থেকে ভেসে আসে ”বট গাছ কি কয় জানস? তারে নিয়া একটা গলপ লিখতে, বৈশাখের গল্প।” আমার মাথাটা কেমন ধরে আসে, ঝাপসা ঝাপসা লাগে। কানে বার বার প্রতিদ্বনিত হতে থাকে ”বৈশাখি মেলার গল্প, যৌবনের গল্প” ”এই গল্প থেকে সেলুলেড একটা ছবি বানাইবি।” আমি বুঝতে পারি ক্রমশ আমি সেন্স হারাচ্ছি।
লেখকঃ- শাকিল আহম্মেদ খান
আলোচিত ব্লগ
শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!
অপেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....
২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ
বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=
বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি
আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।
সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন