সুপ্রিম কোর্টের ভাস্করকে অনেকে “জাস্টিসিয়া” অথবা “থেমিস" বলে আক্ষা দিচ্ছেন। কেও এর অপসারণ চাচ্ছেন কেও বা সেই চাওয়ার বিপক্ষে আন্দোলন শুরু করেছেন। এমন এক পরিস্থিতিতে দৈনিক ইনকিলাব ১৪ই ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সালে আলেম ওলামাদের বিপক্ষে ঠিক এমন একটি শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেন "সুপ্রিম কোর্টের সামনে স্থাপিত গ্রিক দেবী মূর্তিকে গ্রিক দেবী নয় বলে ভিন্নখাতে প্রবাহের অপচেষ্টা -আলেম ওলামা ও ওলামালীগ নেতৃবৃন্দ"। এমন সংবাদের প্রায় ২ মাস পরে ১২ই এপ্রিল ২০১৭ চ্যানেল আই অনলাইন পত্রিকায় এ মূর্তির নির্মাতা মৃণাল হক নিজেই আলেম ওলামাদের সুরেই বললেন এই ভাস্কর্য কোনো গ্রিক দেবীর মূর্তি নয়। যা কিনা ইনকিলাবের দাবীকে মিথ্যা করে দেয়। তবে নির্মাতা নতুন আরেক বিতর্কের জন্ম দিয়ে বলছেন ভাস্কর এবং মূর্তি এক বিষয় নয়।
ভাস্কর আর মূর্তি এক বিষয় কিনা সেটা যে বিস্তর তর্কের জায়গা সৃষ্টি করে তাতে সন্দেহ নেই। এটা কিসের ভাস্কর বা কিসের মূর্তি সেটা নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই আমার। তবে মাথা ব্যাথা হল এত কাল এ মূর্তি / ভাস্কর ছাড়া কি সুপ্রিম কোর্টের বিচার কাজ সঠিক ভাবে চলছিল না? নাকি এ মূর্তি / ভাস্কর স্থাপনের পরে বিচার কাজ আগের থেকে বেশী সঠিক ভাবে চলা শুরু করেছে? নাকি যে মূর্তি / ভাস্কর এ দেশীয় মানুষের, এদেশীয় সংস্কৃতির কোন অংশ নয় সেটাকে টেনে এনে এমন এক অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে?
সুপ্রিম কোর্ট তো আর গুলিস্থানের চার রাস্তা নয় যে ইচ্ছে হল এখানে একটা কিছু দাড় করিয়ে দিলাম, মানুষ দেখল, ভালো লাগা না লাগাটা রাস্তায় গাড়ীর চাকার সাথে সাথে বহমান হয়ে থাকলো। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তো ১৬ কোটি বাঙালির সর্বচ্চ আস্থার জায়গা। এর সাথে ১৬ কোটি মানুষ, ১৬ কোটি মানুষের আবেগ জড়িত। এ আস্থার জায়গায় যে কোন কিছু করার আগে সমগ্র দেশের মানুষ, মানুষের ভাবনার কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ ছিল বলে মনে হয়। এমন স্থানে যত কম বিতর্ক সৃষ্টি হবে ততই মঙ্গল। সমগ্র দেশের মানুষ তথা মানুষের আবেগকে উপেক্ষা করে হুট করেই এমন একটি ভাস্কর / মূর্তি স্থাপনে এমন বিতর্ক সৃষ্টির দায় এড়ানোর কোন সুযোগ নেই। দেশের সর্বচ্চ বিচারিক প্রতিষ্ঠান যেমন দেশের ১৬ কোটি মানুষের তেমনি এ প্রতিষ্ঠানকে অস্থির করে তোলার মত এমন জ্ঞানহীন কাজই যথেষ্ট।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:২৪