ঘোলা জলে মাছ শিকার বলতে একটি কথা আমরা প্রায় শুনে থাকি। এ ঘোলা জল মাঝে মাঝে নোংরা জলেও রূপান্তরিত হয়। ফারুকীর যৌথ প্রযোজনার ছবি “ডুব” যেন এখন সেই নোংরা ঘোলা জলের ডুবে পরিণত হয়েছে।
প্রথমত ফারুকীর ভাষ্যমতে এটা হুমায়ুন আহমেদের জীবনী নিয়ে কোন ছবি নয়। এর পক্ষে ছাফাই গাইতে গিয়ে ফারুকীকে কোন এক টিভি চ্যানেলে বলতে শুনলাম ছবিটির কেন্দ্রিয় চরিত্রের নাম জাবেদ না কি যেন। এখানে “হুমায়ুন আহমেদ” নামের কোন চরিত্রই নাকি নেই। এমন বক্তব্য শোনার পরে মনে হল তিনি ভবিষ্যতে রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলী নিজের নামে ছাপিয়ে বলতেই পারেন এখানে লেখকের নাম তো ফারুকী! এটা রবীন্দ্রনাথের হয় কি করে? যেমনটা শোনা কথায় জানা যায় যে ডুব ছবির সকল চরিত্র হুমায়ুন আহমেদের জীবনের প্রতিটা চরিত্রের সাথে মিলে যায়। তাই ফারুকীর মত একজন পরিচালক যখন শুধু মাত্র নামের দোহাই দিয়ে হুমায়ুন আহমেদ এবং তার জীবনীকে বিভক্ত করে ফেলেন তখন সেটা নোংরা জলের ডুব বলেই মনে হয়।
টিভি বক্তব্যর এক পর্যায়ে ফারুকিকে বলতে শুনলাম মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করা টাইপের কিছু বলতে। মনে হল ইচ্ছাকৃত ভাবেই পরিষ্কার পানিতে নোংরা ঢালার চেষ্টা করলেন। অন্যদিকে লেখকের স্ত্রী শাওন নানা জনের শোনা কথায় ব্যাক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা নষ্টসহ নানান অভিযোগ তুলেছেন। প্রয়াত লেখক তার মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন বিষয়টা খুব সম্ভবত দেশের মানুষ ভালো ভাবেই জানেন। আর যে বিষয়টা সারা দেশের মানুষ জানেন সেটা ব্যাক্তিগত জীবনের ঠিক কতটা গোপনীয়তা সেটা আবার নতুন করেই আমাদের শেখা উচিৎ শাওনের কাছ থেকে। লেখকের সাথে তার বিয়ে সংক্রান্ত ঘটনাটি যদি লজ্জার হয় তাহলে প্রশ্ন চলেই আসে যে, তিনি লজ্জার কাজটি করতে পারলে সেটা নিয়ে অন্য কেও কাজে লাগাতে পারবেন না এ আবার কেমন ঘোলা জল!
লেখক হুমায়ুন আহমেদ এ দেশের। তাকে নিয়ে যে কোন কাজেই যদি তার ব্যাক্তি জীবনের তথ্য জড়িত হয় তাহলে সে তথ্যর সাথে শাওনের নাম এমনিতেই চলে আসবে। আর লেখক হুমায়ুন আহমেদের জীবনে শাওন যে কোন সুখকর অধ্যায় নয় তাই শাওন নামটির সাথে ভবিষ্যতেও চটকদার উপস্থাপনা চলে আসতেই পারে এমন বিষয়টা যে শাওন বোঝেন না তা মানতে কষ্ট হয়। বরং মনে হতেই পারে সম্পূর্ণ সিনেমার বাহিরে বসেই শাওন ঘোলা জলে ডুব দিয়ে সিনেমার একটি অংশ হয়ে আছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৪