somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাগরের সৈকতে কে যেন দূর হতে ....স্বদেশ ও বৈদেশের সাগর সৈকতে... :)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাগরের সৈকতে, কে যেন দূর হতে
আমারে ডেকে ডেকে যায় আয়, আয়, আয়
পারিনা তবু যেতে, শেকল বাধা এই দুটি পায়।।

সাগর পাড়ে গেলে প্রায় সবসময় আমার এই গান মনে পড়ে। যদিও শিকল ছিঁড়ে বার বারই যাই সাগরের পাড়ে আর ভাবি এই গানের মেয়েটা শিকল ছিঁড়ে ছুটে যেতে পারেনি সাগরের সৈকতে সেই অজানা কারো ডাক শুনে। সে যাইহোক, প্রায় প্রতি বছরই সাগর পাড়ে কিছুদিন কাটিয়ে সাগরের হাওয়া গায়ে লাগিয়ে ফুরফুরা হয়ে উঠি। গত বছরের জুলাইতে যখন গেলাম কক্সেসবাজার সমুদ্র সৈকতে, সাগর তখন প্রলয় উত্তাল, আকাশের মুখ থমথমে, ক্ষনে ক্ষনে বর্ষন।

সাগরের এই রকম চেহারা আগে কখনও দেখিনি। অন্য সব বারে, ঝিরিঝিরি উতল হাওয়ায় গা ভাসিয়ে বিকালবেলা হেঁটেছি সৈকত ধরে, রাতে উথাল পাথাল পাড়ে আঁছড়ে পড়া ঢেউ এর কলোরোলে মন মাতিয়েছি বহুবার। কিন্তু বরিষন মুখরিত সাগর? এবারেই প্রথম দেখেছি। এই নতুন অভিজ্ঞতা আসলেই খুব মজার ছিলো বটে তবে ঐ মেঘলা আকাশে ছবিগুলিও মেঘলা মেঘলা ছিলো। তাই এই ফেসবুকিও যুগে সে ব্যাপারটা একটু বেমানান হয়ে গেলো। মনটাও একটু খারাপ হলো কেলো, ধুলো, মলিন ছবিগুলি দেখে।

যাইহোক, শুধু কি ছবি নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে? আরও কত কিছু করার আছে, দেখার আছে, আনন্দে ভেসে যাবারও আছে। বাংলাদেশের কক্সেসবাজারের সমুদ্র তট। এটা নাকি পৃথিবীর দীর্ঘতম অখন্ডিত সমুদ্র সৈকত। তাই হবে কারণ যেদিকে চোখ যায় ঠিক সাগরের মতই তাহার কোনো কূল নাই কিনার নাইরে। এবারে গিয়ে উঠেছিলাম আমরা এক সরকারী বাংলোতে। কক্সেসবাজারের এত শত সুন্দর সুন্দর সব হোটেল মোটেল ছেড়ে এই সরকারী বাংলো মাংলো ভালো লাগে নাকি? এসব ভেবেছিলাম প্রথমে বটে। তবে প্রথমদিন থেকেই ঐ রেস্ট হাউজের অসাধারণ প্রতিভাময় কুক আলাওলের রান্না খেয়ে এবং তার কাব্য প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম আমি। সে এক প্লেট ভাঁজা রুপচাঁদা কিংবা ফ্রেশ লইটা মাছের ভূনা যে স্টাইলে পরিবেশন করে তা দেখে আমার সোনার থালা বাটি চামচের পরিবেশন ফেইল। এত পরিছন্ন সুন্দর আর মজাদার তার খানাপিনা। আলাওল অবশ্য রেস্ট হাউজের নীচে তার পুরো পরিবার নিয়েই বাস করে। তার বউ ছেলেমেয়ে সবাই সাদা ধবধবে মেম সাহেব পরিবার যেন। সে পেশায় সামান্য বাবুর্চি হলেও ব্যক্তিত্বে যেন সেই মধ্যযুগের সত্যিকারের কবি আলাওল। এত আনন্দময় সুখী জীবন যাপন করতে যে বেশি কিছু লাগে না আলাওল তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ!


প্রথমদিন বিকালটা মেঘলা থাকলেও বৃষ্টি ছিলো না সেদিন কোনো কিন্তু ছিলো ঝড়ো বাতাস। তাই সেই ঝড়ো বাতাসেই সেজে গুজে বেড়িয়ে এলাম বিকালটা। যদিও সেই ধুসর সন্ধ্যাকাশে মেঘমালার সারিও ছিলো ঘোলাটে ধুসর, তাই ছবিগুলিও ছিলো ধোঁয়া ধোঁয়া ধোঁয়া! কি আর করা! আর কিবা যায় আসে? হোক ঘোলা, হোক ধুলা কিংবা মেঘলাই। তাই ছবিগুলোকে একটু কার্টুন বানিয়ে দিলাম।


ঝাউবনে হাওয়াগুলো খেলছে, সাঁওতালি মেয়েগুলো চলছে ; লাল লাল শাড়ীগুলো উড়ছে, তার সাথে মন মোর দুলছে । মনে মনে গুনগুন করছিলাম এই গানের কলিগুলি.....


পরদিন সকাল এবং দুপুরে আকাশের চেহারা ভালোই ছিলো তাই পানিতে দাপাদাপি করে রেস্ট হাউজে এসে একটু খেয়ে ফের রেডি হয়ে বের হবো আর তখনই শুরু ঘন বরিষন। :( এমন রাগ লাগছিলো। তবে বারান্দা দিয়ে বসে বসে দেখছিলাম রাস্তা দিয়ে অটোরিক্সা গাড়ি ঘোড়া ছুটে চলা। একটু বৃষ্টি হতেই সেই আদ্যিকালের রেস্ট হাউজের সামনে পানি জমে যায় এক হাঁটু। আমরা তখন পুরোই পানি বন্দী দ্বীপবাসিনী। ভারী বর্ষনে সাপ, ব্যাঙ টিকটিকিও নাকি উঠে আসে এক তলার ঘরগুলোতে। এই সব শুনে সেই সন্ধ্যায় আমি তো পারলে ছাঁদে লটকে যাই নিজেই টিকটিকির মত।


যাইহোক সন্ধ্যা গাঢ় হতে রেস্টহাউজের ভেতরের দিকের বাগানের চেহারা হয়ে উঠলো ঘুটঘুটে ভূতুড়ে ভয়ংকর!


বাগানে কিছু নাম না জানা গাছ আর চেনা অচেনা নানান গাছের মেলা ছিলো। বাগানের এক পাশটা ছেয়ে ছিলো জংলা কচু গাছে। বৃষ্টির পানি তাতে পড়ে জলমোতির মত দুলছিলো। মনে পড়ে গেলো ছোট্টবেলার কথা। এমন ঝুম বর্ষনের পরপরই কচুপাতায় দুলতে থাকা ছোট বড় নানান রকম জলমোতীগুলো দেখে খুব অবাক হয়েছিলাম ছেলেবেলায়।

যাইহোক সেই ভূত ভূত বাগানে কোনো পেত্নী দেখা যায় কিনা সেই আশায় কিছুক্ষন বারান্দায় চোখ মেলে বসে থেকে আর টিভি দেখে আর নেট নিয়ে কাটাতে হলো সেই সন্ধ্যা। তবে আলাওলের কি সব পাতা টাতা দিয়ে বানানো পকোড়ার মজা সেই ঘরে বসে কাটানো সন্ধ্যার দুঃখ ভুলিয়েছিলো।


সাগরজলে সিনান করি সজল এলোচুলে, বসিয়াছিলাম উপল-উপকূলে। :P কি আর করা! অমন বরিষনে বসে বসে নিজের মনে কবিতা নিজের শান্তি মত বানিয়ে নিয়ে আওড়ানো ছাড়া!


আবহাওয়া পূর্বাভাস দেখে দেখেও কোথাও কোনো আশা ভরষা ছিলো না। বৃষ্টি আর কমবেই না মনে হচ্ছিলো এক সপ্তাহের মাঝে আর তাই ডিসিশন নিলাম আমরা বৃষ্টির মাঝেই সাগরপাড়ে বসে থাকবো। যেই ভাবা সেই কাজ। পুরো বিকেল আর সন্ধ্যা বসে রইলাম ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে। তবে হ্যাঁ বালি আর বৃষ্টির ফোটা মুখে তীরের মত বিঁধছিলো। বৃষ্টি ধেয়ে আসা দিকে দুই দুইটা ছাতা লটকে দিয়ে বসে রইলাম আমরা। আকাশে ঘন ঘোর মেঘের মেলা, সামনে উত্তাল আছড়ে পড়া ঢেউ, আর চারিধারে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিস্নাত বালুকাবেলা। সেই অপূর্ব দৃশ্য কখনও ভুলবার নয়।

ঐ বৃষ্টিস্নাত সাগর সৈকতেও কেউ কেউ নেমেছিলো সাগরস্নানে। ভীষন মন খারাপ করা একজন মহিলাকে দেখলাম চুপচাপ শুয়ে আছে। পাশে সঙ্গ দিচ্ছেন তার হাসব্যান্ড। তার মুখটাও মলিন ছিলো। জানিনা কোনো কঠিন অসুখে ভুগছে কিনা মেয়েটা বা হারিয়েছে কিনা কোনো পরমাত্মীয়কে। চারিদিকে হাজারও হাসি খুশি নেচে চলা মানুষের মাঝে সে ছিলো অন্যরকম এক বেদনা বিঁধুর দৃশ্য।


তবে আরেক অদ্ভুতুড়ে কিন্তু খুবই ফানি দৃশ্য ছিলো বুঝি ফেরবার দিনটিতে। জলবন্দী আমরা আর এইদিকে ফ্লাইটের টাইম ঘনিয়ে আসছিলো। আলাওল বললো নো চিন্তা ম্যাম আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। সে নিয়ে এলো বিশাল বিশাল গামবুট। সেই গামবুট পরে আমরা রেস্টহাউজের সামনে নদী হয়ে যাওয়া জায়গাটুকু পেরিয়ে পগার পার হয়ে গাড়িতে উঠলাম। কি যে হাস্যকর দৃশ্য ছিলো সেটা। পরে অবশ্য ছবি তুলে নতুন রকম ছবিটা সুন্দর এক স্মৃতির এলবাম হয়ে রইলো! :)

যে কোনো প্লেন জার্নীতে শুরুতেই আমার মনে হয় এটাই আমার জীবনের শেষ যাত্রা। ভীষন ভয় লাগে আমার শূন্যে। যদি এসব ভাবি আর কি। আর অন্য কোনো ভাবনায় মন ডুবিয়ে দিলে কিছু সময়ের জন্য ভুলে থাকি। তো এবারের ইউ এস বাংলা ভ্রমন বেশ ভালোই ছিলো। অল্প একটু সময় তো কোনোমতে ভুলে টুলে ছিলাম আর কি।


তবে কক্সেসবাজার এয়ারপোর্টকেও ফেইল বানিয়ে দিয়েছে কক্সেসবাজার নতুন রেইল স্টেশন! কি যে সুন্দর বিশাল ঝিনুকের মাঝে বিশাল মুক্তোটা! বিশাল বড় সেই মুক্তোভরা ঝিনুক দেখে এই আমি একেবারেই মুগ্ধ হয়ে গেলাম! :)


যাইহোক এই গেলো স্বদেশের সাগর সৈকতের গল্প স্বল্প এরপর আসি বৈদেশের সৈকতের গল্পে। অস্ট্রেলিয়ার চারিদিকে নানা রুপে, নানা রঙ্গে, নানা ঢঙ্গে সাগর সৈকত। এর আগের ভ্রমনে বন্ডাই বিচ আমার তেমন ভালো লাগেনি কেনো জানিনা তবে এবার শহর থেকে দূরে উল্লংগং সিটি বিচ বা উল্লংগং সাগর সৈকতের শান্ত নীল সৌন্দর্য্যে চোখ জুড়ালো, মন ভুলালো।


বিচে পৌছেই সাগরের শান্ত শীতল কিন্তু জল কলোরোল দেখে ছুটে গেলাম পাখি হয়ে। আমার অবশ্য সাগর পাহাড় বা যে কোনো সুন্দর খোলা প্রকৃতি দেখলেই পাখি হয়ে উড়তে ইচ্ছা করে। স্বদেশের সৈকতে এই বুড়ি ধাড়ির পাখি হয়ে উড়াউড়ি একটু কঠিন। কারণ চারিপাশে গিজগিজা মানুষ পাগল হয়ে গেছি ভেবে বেঁধে রাখতে পারে। কিন্তু বৈদেশে কোনোই সমস্যা নেই। কে পাখি হয়ে উড়লো আর কে পেত্নী হয়ে নাচলো কেউ তাকিয়েও দেখে না।


কে কি পরলো, কে কি খেলো না খেলো সে সবে চোখ দেবার সময় মনে হয় কারোই নেই। সবাই নিজের ইচ্ছায়, নিজের ভালো লাগায়, নিজের মনে মেতে রয়েছে। যেখানে সেখানে রাস্তায়, শপিং মলের সামনে, ওপেরা হাউজের সিড়িতে টিকটিক করে টিকটকের জন্য নেচে গেয়ে চলেছে একদল ছেলে মেয়ে। শুধু কি ছেলেমেয়েরাই বুড়োবুড়িরাও কম যায় না। লাল টুকটুকে নেইল পলিশ আর দামী সব জামাকাপড়গুলো পরে বুড়াবুড়িরাই সবচাইতে ফার্স্ট! আমাদের দেশের মত বুড়ো হলেই অন্যের উপর নির্ভরশীল হতে হয়না কাউকে যেন। আমার ধারণা বুড়োবুড়িগুলোরই বেশি টাকা পয়সা আছে ও দেশে। যাই হোক কারো ব্যপারেই কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই সেখানে। শুধু আমিই মাঝে মাঝে লুকিয়ে চুরিয়ে হা করে দেখে নেই আমার থেকেও আরও কত বড় বড় পাগল আছে দুনিয়ায় সেটা। সে যাইহোক কারো পাকা ধানে মই দেবার জন্য কেউ বড় ছোট কোনো মই নিয়েই দাঁড়িয়ে থাকে না সেখানে আর আমাদের এখানে আবার শত বাঁধা, শত ভয়। যদিও আমি সেসবের কোনো তোয়াক্কাই করি না।

যাইহোক আর তাই শুধু উড়াউড়ি করে পাখি হলেই চলিবেক লাই। মৎস্যকন্যাও হতে হবে আর তাই মৎস্যকন্যাও হয়ে গেলাম সাগরের পাড়ে। হা হা হা কোনো তো সমস্যা নেই। কেউ কারো বিজনেসে নাক গলাতে আসবে না। :) মৎস্যকন্যার রৌদ্রস্নানের ছবিটা আর দিলাম না। সিগাল পাখির সাথে উড়াউড়ি ছবিটা ভিডিও থেকে কাট করে এনেছি। :)

উড়াউড়ি দৌড়াদৌড়ি এবং মৎস্যকন্যা সেজে গড়াগড়ির পর সী বিচে আসন পেতে বসলাম এবার। তারপর বার্গার, জ্যুস এসব খেয়ে দেয়ে সাগরপাড় ধরে হেঁটে হেঁটে পৌছালাম Flagstaff Point (Wollongong Head) Lighthouse লাইট হাউজে।


তবে তার আগে হাতীর পিঠের মত কালো কালো রক দেখে আর তার পিছে সমুদ্দুরের জলরাশি দেখে ছবি তুলতে বসে গেলাম নায়িকা হয়ে। তবে ছবিগুলো বিশেষ পছন্দ হলো না। :( এই ছবি তোলার জন্য ঠিকঠাক জামাকাপড় নিতে পারিনি তো তাই। :(


wollongong lighthouse এই যে লাইটহাউজের গল্প। লিংক দিয়ে দিলাম। যার ইচ্ছা হবে পড়ে নাও।


লাইট হাউসে পৌছে মুগ্ধ হলাম চারপাশের সৌন্দর্য্যে ।


লাইট হাউজের দরজার লেখা ফলকটির ছবি।


আকাশ আর সমুদ্রের নীল আর চারপাশ ঘিরে সবুজ সজীবতা।


সমুদ্র পেরিয়ে লাইট হাউজের উঁচু উপত্যকায় উঠবার জন্য এমন হাতলওয়ালা সিড়িও আছে। যা সবার জন্য সুবিধা তো বটেই ছবি তোলার জন্যও সুবিধা হয়ে গেলো! :)





কিছুদূর আগাতেই .... Flagstaff Hill Fort








হঠাৎ থমকে গেলাম এক অপূর্বশৈলীর গৎস্য দেখে। মানে মাছ যদি হয় মৎস্য গাছ কেনো গৎস্য হবে না? বিশেষ করে যদি হয় সেটা আর্টিস্টিক গাছ! :) সত্যিই কোনো ভাস্কর যেন হাতে বসে বানিয়েছে গাছটা!


এরপর হেঁটে হেঁটে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলাম আমরা। পথে দেখি ওমা অপূর্ব সুন্দর সব ওয়াগানে বসেছে মোবাইল বাচ্চাদের মেলা। আমার জীবনে আমি মোবাইল মেলা দেখেছি বটে। নানা রকম ঝাকা, বস্তা, থলেতে গুছিয়ে আনা পসারীদের কোনো এক স্থানে জড়ো হয়ে গড়ে তোলা মেলা। কিন্তু এমন সব বড় বড় সব চাকা ওয়ালা ওয়াগানে নানা রকম মজাদার রাইড, খেলনা পাতির পশরা আর খানাপিনা, এমনটা দেখিনি আগে। এত সুন্দর এক বিশাল বড় আলাদিনের প্রদীপ মার্কা কেটলী আর সুদৃশ্য সব টিকাপস দেখে দৌড়ে গেলাম সেখানে। এই এত বড় আমাকে উঠতে দেবে কিনা জানিনা কিন্তু সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললে তো দোষ নেই?


হেঁটে হেঁটে ফের চলেছি। হঠাৎ দেখি এক বাবা মায়ের সাথে দুই ছেলেমেয়ে। বড়টা মেয়ে আর ছোটটা ছেলে। বড় মেয়েটার ১০ কিংবা ১২ হবে। কিন্তু সে ভেউ ভেউ করে কাঁদছিলো। মনে হচ্ছিলো কিছু আগেই চপেটাঘাত খেয়েছে। জিগাসা করতে ইচ্ছা হচ্ছিলো কাঁদছো কেনো? কিন্তু ভয়ে জিগাসা করিনি। বাবা জিগাসা করে মরবো নাকি? ফোপর দালালীকে আবার তারা কেমনে কিভাবে নেয়!!! এরপর স্টেশনের বসে অপেক্ষাকালে দেখলাম আরেক বাঘিনী টাইপ দেখতে এক মা। তার দুই ছেলেকে নিয়ে বসে আছে। ৬ বা ৭ বছরের বাচ্চাগুলো মনে হয় মায়ের গন্তব্যস্থলে যেতে চাইছিলো না। সেই মা হুনুমানের মত একের পর চড় থাপ্পড় খামচি ঘুষি দিয়ে যাচ্ছিলো। সাথে দূর্বোধ্য ভাষায় গালাগাল। শুনেছি লোকে বলে বৈদেশের মাটিতে বাইচ্চা কাইচ্চাদেরকে মাইর তো দূরের কথা একটা বকাও দেওয়া যায় না। কিন্তু একি দেখি একি দেখি?

যাইহোক স্বদেশে আর বিদেশের সৈকতের হেঁটে চলা ঘটে যাওয়া গল্প খানিক লিখে রাখলাম। তবে যাই বলো আর তাই বলো এই দুই চর্মচক্ষুতে দেখা সৌন্দর্য্য বা সাগরের নীল কিংবা সবুজের সজীবতা ক্যামেরার ফ্রেমে কখনও বন্দী হয় না। ফেরার পথে খেলাম ইয়াক থু মার্কা স্টুডেন্ট বিরিয়ানী। শুধু এই বিরিয়ানী না বৈদেশের আমি কিছুই খেতে পারিনা। তাই ওজন কমে যায় কি দুঃখ!!!! :( তবে দেশে ফিরে দুই সপ্তাহ থাকলেই ডাবল বেড়ে যেতে পারি। আর দুমাস থাকলে তো কথাই নেই। যাইহোক এসব নিয়ে ভাবনার সময় নেই।

তবে হ্যাঁ....... পৃথিবীর যেখানে যা দেখি যা দেখে মুগ্ধ হই না কেনো হিংসুটে আমির শুধু নিজের দেশেরটাই ভালো লাগে। থাকুক হাজারও মানুষেরা ভরা সাগর সৈকত, থাকুক হাজারও পসারীর বিরক্তি বা এখানে সেখানে পড়ে থাকা প্লাস্টিক বোতল, চিপসের প্যাক তবুও রুপ দেখে তার কেনো আমার নয়ম ভরে না......... তোরে এত ভালোবাসি তবুও পরাণ ভরে না........


ও সাগর তোমার কূলে ভেঙ্গে পড়া ঢেউ এর মানে কি
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৮
৪৩টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফরহাদ মজহার নিজেই কি বোমা বানিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানে মারলেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ ভোর ৪:৪৯


ফরহাদ মজহারের প্রতিষ্ঠানে বোমা হামলা নাটক নাতো?

১. যে সিসি ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে, তা অস্পষ্ট এবং পাশের অন্য ভবনের। একজন মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা ও একজন দেশব্যাপী পরিচিত ভাবুক/চিন্তক তথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কি বিপ্লবী সরকারের পথে?

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:৩৮



সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের একাধিক বক্তব্য এবং অন্যান্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত এসে গেছে!

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৩৬



রবীন্দ্রনাথের পছন্দ ছিলো বর্ষাকাল।
তার অনেক লেখাতে ঘুরেফিরে বর্ষাকাল এসেছে। বর্ষা নিয়ে গান লিখেছেন, কবিতা লিখেছেন। অনেক বিলাসিতা করেছেন। এমনকি রবীন্দ্রনাথ পদ্মা নদীতে বোটে বসে বর্ষাকালটা উপভোগ করতেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশের অবস্থা হলো এই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ সকাল ১০:৪০

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ম্যাজিস্ট্রেট পরীক্ষা দেওয়ার সময় তার ভাইভা নিয়েছিলেন একজন ইংরেজ সাহেব ৷ তার কাছে তাকে বাংলা পরীক্ষাও দিতে হয়েছিলো ৷
.
ইংরেজ সাহেব প্রশ্ন করলেন, " Well, বাবু you তো ভালো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিনাকী ভট্টাচার্য : একজন "র" এজেন্ট যে বাংলাদেশকে দ্বায়িত্ব নিয়ে একাই ধ্বংস করছে !

লিখেছেন গেছো দাদা, ০৮ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫

এই ভয়ঙ্কর মিথ্যেবাদী এবং ক্ষমতা পাগল লোকটার কথা প্রথম শুনি অভিজিৎ রায়ের লেখায়। সেটা 2014 সাল। একটু অবাক করা ব্যাপার ছিল। সেটা হচ্ছে এক ব্রাহ্মণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×