অপরূপা রাতারগুল
আমি আমার জীবনে বেশ কয়েকবার একা একা বিদেশ ভ্রমন করেছি কিন্তু একা একা পরিবার পরিজন ছাড়া দেশের মধ্যে ঢাকার বাইরে কখনই যাইনি। একা বলতে যেমন বন্ধু বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনদের সাথে তেমন কোথাও যাওয়া হয়নি কখনও আমার। তো স্কুলের এবারের সামার ভ্যাকেশনের ঠিক আগ দিয়ে আমার কিছু প্রিয় কলিগ নুপুর, নাবিলা, হোমায়রা প্ল্যান করে ফেললো ওরা এবার সিলেট যাবে রাতারগুল, সাদাপাথর, জাফলং, লালাখাল এসবে ঘুরে বেড়াবে পাখির মত উড়ে উড়ে। হা হা পাখির মত উড়াউড়ির কথা বললাম এ কারণেই যে যেহেতু পরিবার পরিজন আত্মীয় স্বজন এসবের কোনো বিঁধি নিষেধ নেই সবাই একা একা কাজেই মুক্ত পাখির মত উড়তে পারা ভুলতে বসা এই আমরা এবার একটু আনন্দেই উড়ি না হয়?
রাতারগুলের এক দল অভিযাত্রী। আমরা তাহাদের ছবি তুলি তাহারা আমাদের ছবি তুলে
যদিও সেই প্লান প্রোগ্রামিং শুরু হয়েছিলো একটু দুরু দুরু বক্ষেই। আমরা কি পারবো এই ঈদের আগে বাসের টিকেট, ট্রেইনের টিকিট হোটেল মোটেল এসব যোগাড় করতে! আর সত্যিই কিন্তু পারলাম না। সেই ট্রেইনের টিকেট কেটে দিলো নাবিলার হাসব্যান্ড আজাহার ভাইয়া আর বাসের টিকিট কেটে দিলো হোমায়রার ভাইয়া আমাদেরও ভাইয়া এলাহি ভাইয়া। আর হোটেল! সে তো যে সে হোটেল হলে চলিবেক লাই। আমরা যাচ্ছি শুধুই ভ্রমনকন্যারা যে সে হোটেল হলে চলবে?? কাজেই নাবিলার কাজিনের হোটেলে নিশ্চিন্ত মনে বুকিং দেওয়া হলো। ব্যাস সব কিছু রেডি এখন শুধু যাবার পালা। আর হ্যাঁ ওদিক থেকে আমাদের সিলহটী বন্ধু সঙ্গীতা আর ক্রিস্টি অনেকভাবে সাহয্য করার চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছিলো। সঙ্গীতা ঠিক করে দিল কামালভাইকে মানে আমাদের পুরোটা ভ্রমনের রেন্ট এ কারের ড্রাইভার কাম গাইড হিসাবে।
গ্রীনলাইনের বাস কাউন্টারে পৌছে গেলাম রাত সাড়ে এগারোটার দিকে। সবার মুখে বিজয়ের হাসি। যদিও আমাদের বাসা থেকে এই ভ্রমনে বাসার সকলেরই উৎসাহ ছিলো। বাস আর আসেই না। গ্রীন লাইন বাসের ওয়েটিং রুম খুবই আরামদায়ক ও সুন্দর ছিলো। এসি এবং সুন্দর সব চেয়ারের সারি। খানাপিনারও ব্যবস্থা ছিলো। নুপুর এক গাদা চকলেট ডালভাজা চিপস কিনে নিলো। আমরা তখন আজ আমাদের ছুটি ও ভাই আজ আমাদের ছুটি ম্যুডে। হাসাহাসি, ছবি তুলাতুলি চলছেই........
যাইহোক অবশেষে বাস এলেন। প্রায় আধাঘন্টা লেট করে এলেন আমাদের বাস মহারাজা। তবে বাসে উঠে আমি অবাক! বাংলাদেশে যে প্লেনের চাইতেও আরামদায়ক এবং বিলাসবহুল সিটের বাস আছে সত্যিই আমার জানা ছিলো না। বাসের কনডাক্টরও যে এমন পাইলটের মত সাদা ধবধবে শার্ট প্যান্ট টাই পরে সেটা দেখেও আমি মুগ্ধ! ওহ আরেকটা কথা এমন নাইটকোচেও আমি আমার জীবনে কখনই ভ্রমন করিনি। সন্ধ্যা নামার আগেই যেমন বাড়ি ফিরে আসার তাগাদাটা আজও আছে ঠিক তেমনই রাতের বাসে কোথাও যাবো ভাবতেই পারিনা আমি। সে যাইহোক, আসলে এই ভ্রমনটা ছিলো পুরোটাই এক বিশেষত্ব আর নতুনত্বে ভরা এক এডভেঞ্চারিক অভিজ্ঞতার গল্প।
বাসা থেকে সবারই ফোন আসছিলো আমরা ক'জন দুঃসাহসিক অভিযাত্রীরা ঠিকঠাক বাসে উঠলাম কিনা, বসলাম কিনা এই সব জানতে। যাইহোক ভেবেছিলাম বাসেই একটু ঘুমাতেই হবে আমাদের কারণ পরদিনই আমরা রাতারগুল আর সাদাপাথরে যাবো। কিন্তু কোথায় ঘুম! ঘুম উবে গেলো আমাদের গল্পে গল্পে। ৩/৪ ঘন্টা কেটে যেতেই জানালায় দেখি নরম শুভ্র ভোর! আহা কতদিন এমন ভোর দেখিনি। অন্ধকার সরিয়ে ভোরের আলো ফুটছিলো আর আমি ফিরে ফিরে যাচ্ছিলাম আমার ছেলেবেলায়, মেয়েবেলায় এবং কিছু স্মৃতিময় অতীতের ভোরবেলাগুলোতে।
সকাল ৭ টার দিকে পৌছুলাম আমরা সিলেটের মাটিতে। আমাদের ড্রাইভার কাম গাইড কামাল ভাইয়া সেখানেই ছিলেন উনি আমাদের ছোট ছোট ল্যাগেজগুলো তুলে দিলেন গাড়িতে তারপর আমাদের নিয়ে ছুটলেন হোটেলে। সারা সিলেট ঘুমিয়ে তখনও। কামালভাইয়া জানালেন সিলেটের মানুষ নাকি ঘুম থেকে দেরি করে ওঠে দোকানপাট কিছুই ১০টার আগে খুলে না কিন্তু রাত ২টা পর্যন্তও খোলা থাকে।
যাইহোক, আমরা হোটেলে পৌছেও দেখি হোটেলেও সেই একই অবস্থা। তাদের লোকজনও ঘুমাচ্ছে।
হোটেলে পৌছে জামাকাপড় চেইঞ্জ করে সাজুগুজু করে ডাইনিং এ গেলাম আমরা। পরোটা ডিম সুজি ডাল এসবই ছিলো ব্যুফে ব্রেকফাস্টে। সবকিছুর পরে সিলেটি চা ছিলো অসাধারণ! এরপর বের হলাম আমরা রাতারগুলের উদ্দেশ্যে। পথে তুলে নিলাম আমাদের সিলেটি বন্ধু সাহসী সঙ্গীতাকে। চললাম রাতারগুলের পথে। শাহজালাল মাজার, পরান শাহ মাজার সিলেট ঈদগাহ, এমসি কলেজ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সব ছাড়িয়ে চললাম রাতারগুল। পথে যেতে যেতে নীল সবুজ পাহাড় আর তার কোল ঘেষে বয়ে চলা ঝরণা। আমরা গান জুড়ে দিলাম আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ, ঐ পাহাড়ের ঝরনা আমি ঘরে নাহি রই গো, উদাস হয়ে রই........
আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ঐ
যাইহোক রাতারগুলে এসে নৌকায় উঠতে হবে। আমার একটু ভুই ভুই লাগছিলো। লাইফ জ্যাকেট লাইফ জ্যাকেট করছিলাম। নাবিলা বকা দিলো বললো আমি তো সাঁতার জানি। আমি মনে মনে ভাবছিলাম আমি যে সাঁতার জানি সেই পুকুরের তলা আছে। ইচ্ছা হলেই দাঁড়ানো যায়। তার নাম স্যুইমিং পুল....... আর তার দাদা পরদাদা রাতার গুল........ সেখানে তো থই নাই থই নাই সাথে আছে সাপ ব্যাঙ আরও মনে হয় কুমীরও আছে নাকি আল্লাহ জানে।
অপরুপা রাতারগুলের শ্যামলিমায় জড়িয়ে থাকা পত্র পল্লবিত গাছ গাছালির চিত্র
যাইহোক সকলের সাহসে সাহসী হয়ে উঠলাম নৌকায়। নৌকার মাঝি নাসিম কহিলো ভয় নাই ভয় নাই ছোট সে তরী আমার রাতারগুলের সৌন্দর্য্যে উঠেছে ভরি। আসলেই নৌকায় ভেসে যেতেই আমার আর ডর ভয় কিছুই থাকলো না। মনে শুধু একটাই লাইন ভেসে উঠলো, একি অপরুপ রুপে মা তোমার হেরিনু পল্লী জননী। চারিদিকে সবুজ সবুজ ঝিরিঝিরি পত্রপল্লবের শোভা আর তারই প্রতিচ্ছায়ায় সবুজ টলটলে পানি। পান্নার মত টলটলে স্বচ্ছ জলে আমাদের নৌকা আর আমাদের প্রতিচ্ছবি। মনে হলো যেন এক ভিউকার্ডের দৃশ্যের মাঝেই ভেসে চলেছি আমরা। এ যেন অন্য এক ভূবন অন্য এক জগত। এ জগতে নেই কোনো ক্লেদাক্ততা, নেই কোনো ক্ষোভ দুঃখ বা পরাজয়ের গ্লানি।
নাসিমের সিলহটি ফুরি গানের সাথে ভেসে যাওয়া আমরা কজনা
নাসিম মাঝি গান ধরলো সিলহটী ফুরি তুমি .......... রাতারগুলের পানির মাঝেই সে নৌকা ভেড়ালো দুই গাছের মাঝে। নুপুর তখন টারজান কন্যা। তরতরিয়ে উঠে গেলো গাছে। তাই দেখে সঙ্গীতা হোমায়রা এমনকি নাবিলাও সাহসী হয়ে উঠলো। আমি অবশ্য তখন নৌকা চালানোর টেরাই করতেছিলাম। ভেবেছিলাম গাড়ি ডেরাইভিং অভিজ্ঞতায় বৈঠাও ড্রাইভ করে ফেলবো। কিন্তু হায় বৈঠা একদিকে যায় তো নৌকা আরেকদিকে যায়। যাইহোক শেষে বৈঠা ফেলে আমিও উঠতে গেলাম গাছের গুড়িতে আর পা দিয়ে ধাক্কা লাগতেই আমার পায়ের তলা থেকে নৌকা সরে গেলো!!! হায় হায় কি সর্বনাশ!! আমি তখন গাছে ঝোলা রিয়েল বাদরী! জীবনে অনেকবার শুনেছি পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাবার কথা কিন্তু পায়ের তলা থেকে নৌকা এবং মাটি সরে যাওয়া এবং অকূল পাথারে পড়ে গাছে ঝুলাঝুলি নিজেই অভিজ্ঞতা করে নিলাম।
সাদা পাথরের সুনীল আকাশ
এরপর চললাম ভোলাগঞ্জের পথে। সেখানে হোটেলে খেলাম শুটকি ভর্তা (সেই ঝাল খেলে কারো মরার সাধও অবশ্য মিটে যেতে পারে) আরও কি সব ঢেড়স ভাজি, আলুভর্তা টর্তা অনেক কিছুই ছিলো কিন্তু কালাভূনা একদম ইয়াম্মী ইয়াম্মী!!!!!!!! যাইহোক তারপর সাদা পাথর। সত্যিই যে স্বচ্ছ জলের বুকে সাদা সাদা বকের সারি পাথরের মেলা। লোকজনের আনন্দ উচ্ছাস। ঠান্ডা শীতল জলে ছেলেবুড়ো আবালবৃদ্ধ বনিতার হুটোপুটি। পৃথিবীর সকল আনন্দ উচ্ছাস বুঝি এসে জড়ো হয়েছিলো সেখানে। আমরা অবশ্য অল্পই ভিজলাম। নুপুর আর তার মেয়েই সাতরে বেড়ালো মৎস্যকন্যার মত তীর বেয়ে বেয়ে।
সাদা পাথরে মানুষের আনন্দস্নান
তবে হ্যাঁ এই অপরুপ সৌন্দর্য্য মলিন হয়ে গেছে এই সাদাপাথরের তীরের মানুষের চিপস, বিস্কিটের কৌটা পায়ের ছেঁড়া স্যান্ডেল, আইসক্রিমের কাঁঠি এসব আবর্জনায়। আমি চারিদিকে চোখ মেলেও কোথাও একটা ডাস্টবিনের দেখা পাইনি। এত সুন্দর দেশ আমাদের। এত সৌন্দর্য্য মন্ডিত প্রকৃতি। এতই সৌন্দর্য্য যে, যে কোনো বিদেশী পর্যটকের মন কেড়ে নেবে। শুধু এই আবর্জনাময় তীরের পরিবেশ উন্নতিকরণে কঠোর ব্যবস্থা নেওটা জরুরী। অতীব জরুরী। রাতে ফিরে গোসল সেরে রাতের ডিনার খেয়ে বসলো আমাদের গানের আসর। আমরা সবাই মেতে উঠলাম গানে গানে গানের খেলায়।
ভিডিওতে ছিলো নুপুর কন্যা দুহিতামনি।
জাফলং এর ঝুলন্ত ব্রীজ
খুব সকালে হোটেলেই নাস্তা খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম আমরা জাফলং এর উদ্দেশ্যে। পথে যেতে যেতে চা বাগানে কিছুক্ষন। মেতে উঠলাম আমরা টিলার উপর দিয়ে হাসি আনন্দ গানে। অবশেষে আবার জাফলং এর পথে। জাফলং এ পৌছে তাদের সুনিচ্চু গিরিখাতে পাথরের ভাঙ্গাচুরা সিড়ি দিয়ে নামতে হবে দেখেই আমার আক্কেল গুড়ুম। হায় হায় পড়ে যদি পা ভেঙ্গে যায় তো আমার কি হবে? আমি নাচবো কেমনে? ফিরবো কেমনে?? কিন্তু এসেছি যখন তীরে এসে তরী ডুবিয়ে কি লাভ আছে? কাজেই ১৮০০ টাকায় নৌকাভাড়া করা হলো আর মান্নান নামে এক বকবকি গাইড দেওয়া হলো। আমরা চললাম নৌকা ভেসে।
মায়াবী ঝর্নার গায়ে কিলবিলে মানুষের ঢল
পাড়ে পৌছে কিছুদূর হেঁটে গিয়ে মায়াবী ঝর্না!! ও মাই গড! এই ঝরনার গায়ে অসংখ্য কিলবিলে মানুষ দেখে আমার তো ঐ পাহাড়ের ঝরনা হবার সাধই মিটে গেলো। আমি বেঁকে বসলাম মরে গেলেও আমি ঐ ঝরনার ধারে কাছেও যাচ্ছি না। নুপুর দুঃসাহসী আর দুহিতা গেলো ঝর্নার টানে। দুঃসাহসী বলেছি কারণ তরতরিয়ে মাঝ বরাবর পৌছে যাওয়া নুপুরকে দেখে গাইডও অবাক!
যাইহোক সেখানেই দুপুরের খানা খেয়ে আমরা গেলাম বর্ণমালা শহীদ মিনারে। সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নাকি বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো মনে নাই আর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দেখে আমরা চলে গেলাম মনিপুরি শাড়ি কিনতে। আমাদেরকে দেখে ওদের দাম এতই বেড়ে গেলো সব শাড়িই ৪০০০ এর উপরে উঠিয়ে দিলো। আমরা যেন জীবনেও মনিপুরি কিনিনি। যাইহোক শেষমেষ ঠকে মকেই শাড়ি কিনতে হলো। কারণ সিলেট এসেছি আর মনিপুরি কিনবো না তাই কি হয়!! নিজের নাক কেটে যেমন পরের যাত্রাভঙ্গ করতে হয় ঠিক তেমনই ঠকলেও সিলেট শহর পরিদর্শনে মনিপুরি শাড়ি কিনতেই হয়।
জাফলং এ নৌকা থেকে দেখা ইন্ডিয়া
রাতে নূরজাহান হোটেলে ডিনার করতে চললাম। এই ভ্রমনে আমার ইচ্ছা ছিলো পাখি কিংবা প্রজাপতি হবার। তাই আমার প্রজাপতি জামাটা সঙ্গে নিয়ে গেছিলাম। চারিদিকে পানি আর পানি আর বৃষ্টির ভয়ে পরাই হয়েছিলো না আর তাই সেই সুযোগে প্রজাপতি জামাটা পরেই প্রজাপতি হয়ে গেলাম ......... এত হাসি পায় আমাদের এই বড়বেলায় আই মিন বুড়িবেলায় এমন সব পাগলামি দেখলে.....নিজেই নিজে তারপর ভাবি অন্যেরা যে আমাদেরকে বিশেষ করে আমাকে কত বড় পাগলই না ভাববে। কিন্তু আমার যে যা বলিস ভাই এই জীবনে যতক্ষন বেঁচে আছি আনন্দটুকু আহরন করে নিতে চাই। ঠিক প্রজাপতির মত.......
প্রজাপতি প্রজাপতি কোথায় পেলাম ভাই এমনও রঙ্গিন পাখা
ফিরে আসতে মনই চাইছিলো না। ট্রেনের ঐ ছোট্ট কামরাটা আমাদেরই ছিলো আর কারো প্রবেশ নিষেধ ছিলো সেখানে। ৬ জনের সেই কেবিনটাতে আমরা ছিলাম ৫ জন। পথে এক লোক আসলো তার নাকি সিট আছে একটা এই কামরায়। আমরা সবাই হায় মায় কায় করে তাড়িয়ে দিলাম তাকে। টিটি আসলো ওকে ওকে রিলাক্স! আপনাদের এই কেবিনে একটা মেয়ে দেওয়া হবে। শ্রীমঙ্গলে একটা মেয়ে উঠলো। সেও আমাদের মতই একক ভ্রম্যচারী। আমরা গানে গানে মেতে উঠলাম ট্রেইনে। ঐ মেয়েটাকেও ভিড়িয়ে নিলাম আমাদের দলে খানায় পিনায় আর গানায়.....
পাহাড় চুড়োয় অভিযাত্রিক দলের একজন
এই কদিনের আনন্দ উচ্ছাসের কিছু ভিডিও আর ছবি সাথে নিয়ে আসলাম।
আমরা তখন পাখি! উড়ে যাই অজানায়.....
পাহাড়ে উঠেই পাহাড়ি নৃত্যের টেরাই করতে ইচ্ছা জাগিলো মনে।
আয় তবে সহচরী হাতে হাতে ধরি ধরি
হা হা কি আনন্দেই না কেটে গেলো কয়েকটা দিন। ভুলে গিয়েছিলাম যেন আমাদের চারপাশ। ফিরে আসলাম আবার ইট কাঁঠ পাথর আর আমাদের প্রিয় ঢাকার বুকে। হৃদয়ে আর সাথে নিয়ে আসলাম একটি গানের কলি " হায়রে আমার মন মাতানো দেশ!!!" সিলেটের রুপ দেখে মুগ্ধ নয়নের আমরা কয়েকজন ভ্রম্যচারীরা।
কিন্তু মাথায় ঘুরছে একটাই কথা এই দেশটার বিশেষ করে পর্যটন এলাকাগুলোর যত্ন নেওয়া অবশ্য জরুরী। সৌন্দর্য্য দেখতে এসে একটা মানুষও যেন সেই সৌন্দর্য্যের মাঝে কদর্যতা সৃষ্টি না করতে পারে সেই দিকে বিশেষ দৃষ্টিপাত করতে হবে। ডাস্টবিনে ময়লা ফেলা বাধ্যতামূলক। নয়ত জরিমানাও করা যেতে পারে। তবুও যেন এই বোবা ধরিত্রীর উপর এসব অনাচার না চালাতে পারে আর কেউ.......
আমাদের সকলেরই দায়িত্ব আমাদের এই অপরুপা মাতৃভূমির সৌন্দর্য্য রক্ষা করার। তাই না?
রাতারগুলে নৌকার একজন মহিলা মাঝি......
মাঝিটা কিন্তু এই গানটাই গাইছিলো- হায়রে আমার মন মাতানো দেশ!
হায়রে আমার সোনা ফলা মাটি....
রুপ দেখে তোর কেনো আমার নয়ন ভরে না
তোরে এত ভালোবাসি তবু পরাণ ভরে না .......
শুধু রুপ দেখলেই চলবে না। রুপচর্চাও করতে হবে আর তাই পর্যটন এলাকাগুলির যত্ন নিতে হবে। যেখানে সেখানে যত্র তত্র যা খুশি তাই না ফেলে ডাস্টবিনের জন্য আন্দোলন করতে হবে।
সবার জন্য ভালোবাসা....
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:৫২