আমি তার কাছে কঙ্কাবতী রাজকন্যা। যদিও এই রাজকন্যা ছদ্মবেশের পিছে আমার বহুল পরিচিত একটা পরিচিতি আছে। তবুও তার সাথে যেহেতু এই রাজকন্যার বেশেই আমার পরিচয় কাজেই ছদ্মবেশ খুলে ফেলার পরেও সে মানতে রাজীই না আমি যে ছিলাম এক ছদ্মবেশী রাজকন্যা।
রাজকন্যা বেশে আমি যেদিন লিখেছিলাম,
নতুন বাবার বাড়িতে যখন পৌছলাম তখন বেশ রাত। অবশ্য রওয়ানা দিয়েছিলামও আমরা ও বাড়ি হতে বেশ দেরী করেই। নয়তো ওয়ারী থেকে ধানমন্ডি কতটুকু আর দূরত্ব ছিলো? তখনকার দিনে আজকের মত এত যানজট তো ছিলো না। সব রাস্তাই ফাঁকা ফাঁকা লাগতো। গাড়ি ঘোড়াও এমন গিজগিজ করতোনা সারাটা পথ জুড়ে। আমি বসেছিলাম মায়ের পাশ ঘেষেই, গাড়ির পেছনের সিটে। আমার নতুন বাবা, মধ্যে মা আর জানালার কাঁচের ধারে আমি। গাড়িতে চড়লেই আমার সবচাইতে বেশি আনন্দের কাজটাই ছিলো রাস্তা বা বিপনী বিতানগুলির আলোকসজ্জা দেখা ও তাদের নামগুলো বানান করে করে পড়া.......
লেখাটা পড়ে সেদিনই তিনি লিখলেন,
নতুন বাড়ী, নতুন জীবন.........নতুন বাবা!!!
ছোটবেলায় এমন দুঃখ কেউ যেন না পায়। গল্প বা সত্যি যাই হোক, অন্তর ছুয়ে গেলো!!
তার এই মন্তব্যও রাজকন্যারূপী আমারও অন্তর ছুঁয়ে দু'আখিও ছুঁয়ে গেলো সেদিন......মেঘ গলে নামলো শ্রাবন ধারা .....
যাইহোক এর পর পর্ব ৩,৪, এ তার আর কোনো খবর নেই।
পর্ব ৫ এ আবার তার দেখা। লিখলেন,
একটা একা হয়ে যাওয়া মেয়ের বেড়ে ওঠার কাহিনী.....ভালো লাগছে পড়তে। এই মেয়ে যে জীবনে সফল হবে তা বলাই বাহুল্য। পুড়তে পুড়তেই তো সোনা একসময় খাটি হয়, তাইনা!!!
ঠিক তাই ভাইয়া ঠিকই ধারণা করেছিলেন।
এরপর আবার ৬, ৭,৮ এ তার দেখা নেই।
কিন্তু ৯ পর্বে এসে লিখলেন,
আবেগ আর বাস্তবতায় অনেক পার্থক্য! সমস্যা হলো বাস্তবতা বোঝার জন্য যে ম্যাচ্যুরিটি দরকার তা আমাদের থাকে না, যে বয়সে আবেগ বেশী থাকে!
সবগুলো পর্ব পড়লাম। গল্প হলে, আপনার গল্প বলার মুন্সিয়ানার প্রশংসা করতেই হয়। আর বাস্তব হলে...........শেষ পর্যন্ত না দেখে বলা যাচ্ছে না।
এইভাবেই ভাইয়াটা রয়ে গেলেন আমার কঙ্কাবতী রাজকন্যা নিকে লেখা সিরিজ একি খেলা আপন সনের সাথে সাথে ......
রাজকন্যার লেখাটা মোটমাট ২০ পর্বে ছিলো। তবে বই হিসাবে প্রকাশ করবার বা রাজকন্যার ছদ্মবেশ ছেড়ে নিজরূপে আবির্ভূত হবার কোনো ইচ্ছেই আমার ছিলো না। তবে হুমায়রা হারুন আপুনি বললেন, লেখাটি চমৎকার। আমার ই -ম্যাগাজিনে উপন্যাসটি প্রকাশ করতে চাই। অনুমতি দেবেন? আমি বেশ আগে ই- ম্যাগাজিন প্রকাশ করতাম, আবারো কাজ শুরু করব। আমার ফেসবুক গ্রুপে ম্যাগাজিন লিংক দেখতে পারেন । ম্যাগাজিনের নাম ‘নব আলোকে বাংলা।’
চাঁদগাজী ভাইয়া বললেন, উপরে একজন ব্লগার আপনার লেখাকে ম্যাগাজিনে প্রকাশ করার প্রস্তাব করেছেন; এটা আপনার জন্য খুবই সন্মানের কথা; কিন্তু ম্যাগাজিনে প্রকাশ না করে আপনার লেখাটি বই আকারে প্রকাশ করার কথা ভাবুন।
জুলকারনাইন নাঈম,আমি জানি না আপনি কে। তবে আপনার লেখা খুব ভালো।
চাঁদগাজী,সম্রাট ইজ বেস্ট, ডঃ এম এ আলী,মলাসইলমুইনা,মনিরা সুলতানা, জাহিদ অনিক, জেন রসি, আহমেদ জী এস, কালীদাস,খায়রুল আহসান,গিয়াস উদ্দিন লিটন,মোস্তফা সোহেল ,কথাকথিকেথিকথন,মাহমুদুর রহমান সুজন ,
করুণাধারা,আখেনাটেন ভাইয়া এবং আপুনিরা থেকে গিয়েছিলেন আমার লেখাটার সাথে। তাদের অকুন্ঠ ভালোলাগার প্রকাশ আর অনুরোধে ঠিক করলাম আমি এইবার প্রকাশিত হব.......
এসবের সাথে সাথে জেনেছিলাম ভাইয়া আর ভাবী দুজনই আমার লেখার অপেক্ষায় থাকে। দুজনই আমার লেখার মুগ্ধ পাঠক। সেদিন বেশ অবাক হলাম। অদ্ভূৎ ভালোলাগা আর ভালোবাসার ভরে উঠলো মন।
তাই বই প্রকাশের সিদ্ধান্ত আর প্রকাশের পর প্রথমেই মনে হলো ভাইয়া আর ভাবীকে আমার বইটা পৌছে দিতে হবে।
কিন্তু বিঁধি বাম। ভাইয়া থাকেন দূর দেশে। আর আমারই মতন এক ছদ্মবেশী মানুষ।কাজেই ভাইয়াকে জানালাম ভাইয়ামনি আমার বই তোমাদের হাতে পৌছাতে চাই।
ভাইয়া বেশ কাঁঠ খড় পুড়িয়ে সেই বই নেবার ব্যাবস্থা করলেন .......
কিন্তু এরপর হঠাৎ সেদিন ভাইয়া জোরেসোরেই ঘোষনা দিয়ে বসলেন - নো এক্সিউজ......আমিও রাজকন্যার ভাই আরেক রাজপুত্র ভূয়াকুমার ..... হা হা হা হা কাজেই শুনতেই হবে আমার কথা...... আমি আমার রাজকন্যা বোনটার জন্য পাঠাতে চাই এক বক্স চকলেট........ সেটা তোমাকে খেতেই হবে........ রাজকন্যার ভাই রাজপুত্র বলে কথা.......
কি আর করা ! ভাইয়ার কথা শুনে আমি হাসতে হাসতে শেষ............
শেষ মেশ পৌছালো সেই উপঢৌকন। সুদূর দূরদেশ হতে .........
প্যাকেটটা খুলতেই চোখে পানি এসে গেলো আমার .....
দূরদেশী এই ভাইয়ামনি, অদেখা হলেও তুমি যে অনেক অনেক কাছের একজন সেও আমি জানি। আর ভাবীরজীর কথা কি বলবো!!!!!!!!!! আমাকে কি করে বুঝে ফেললেন ভাবীমনিটা এটা ভেবেই আমি অবাক!
ঠিক রাজকন্যার জন্য রাজকন্যার মতনই এক হিরক খঁচিত স্বর্ণ পাদুকা......
আর আমাকে অবাক করে দিয়ে চাঁদগাজী ভাইয়া মানে এই লেখায় আমার প্রথম কমনে্টকারী চাঁদগাজীভাইয়ার তরফ থেকে তিনি পাঠালেন চাঁদগাজী ব্রান্ডের পেপার ওয়েটটা।
ভাবীমনি আরও পাঠিয়েছেন ভালোবাসায় মোড়ানো একটা কফি মাগ! আজ আমি সেটা স্কুলে নিয়ে গিয়ে সবাইকে এই গল্প বলেছি।
আর বিশ্ববিখ্যাত এই শামুক ঝিনুক চকলেট বক্সটা! আমি খাবো নাকি সাজিয়ে রাখবো ভাইয়ামনি!!!!!!!!!!!









মোহেবুল্লাহ অয়ন,বানেসা পরী, শাহরিয়ার কবীর, সত্যপথিক শাইয়্যান, প্রামানিক,সুমন কর, বিলিয়ার রহমান,জুন , ভ্রমরের ডানা, ফয়সাল রকি, রাসেল উদ্দীন,বেয়াদপ কাক ,মেহেদী হাসান তামিম,নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন, সাদা মনের মানুষ, হুমায়রা হারুন,দিশেহারা রাজপুত্র,অজানিতা,মুহাম্মদ তারেক্ব আব্দুল্লাহ,মথুরেশ রায় মধু,বিদ্রোহী ভৃগু,রূপক বিধৌত সাধু ,অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য ,দেবজ্যোতিকাজল,ওমেরা,রোমিওজনুরফিয়াস প্যারিছন্ডিএব্দাশ ,মোহাম্মাদ আব্দুলহাক,এফ.কে আশিক,আমার কণ্ঠ ,মোঃ মাইদুল সরকার,যূথচ্যুত,স্নিগ্দ্ধ মুগ্দ্ধতা ,নীহার দত্ত ,রায়হান চৌঃ,নূর-ই-হাফসা ,গেম চেঞ্জার , মেঘনা পাড়ের ছেলে, অলিউর রহমান খান,মাইনুল ইসলাম আলিফ ,রাতু০১ ,জে আর সিকদার ,অজানিতা ,অনন্য দায়িত্বশীল আমি,নীল-দর্পণ,যাযাবর চখা ,আমার আব্বা ,ধ্রুবক আলো,নীলপরি ময়না বঙ্গাল ,তারেক ফাহিম ,নিশাত১২৩ নাগরিক কবি, মানিজার ,তাসবীর হক
যারা ছিলেন আমার লেখার সাথে........
আজ কোথায় তারা জানিনা আমি ............
সামুতে প্রবেশের ঝামেলায় অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে.......
এভাবেই কি হারিয়ে যাবে আমাদের ভালোবাসায় মোড়ানো গল্পগুলোও???
বলো ভুয়া রাজপুত্র ভুয়া মফিজভাইয়ামনি????
অনেক অনেক অনেক ভালো বাসা তোমার জন্য, ভাবীমনির জন্য আর বেবীদের জন্যও ........
অনেক ভালো থেকো তোমরা সারাটাজীবন........

কৃতজ্ঞতার ভাষা জানা নেই আমার এই ভালোবাসার মানুষগুলোর কাছে.......
আমার সেই নিক
কঙ্কাবতী রাজকন্যা
আর মনে আমার ফাগুন হাওয়ার গান ............
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২০