somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাই বিউটিফুল টেরারিয়াম ওয়ার্ল্ড

০৫ ই মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজকের বানানো নতুন টেরারিয়াম.......:)


মন হারিয়ে যায় রে মন হারিয়ে যায়....


ঐ গাছের পাতায় রোদের ঝিকি মিকি....


আনন্দ! আহা কি আনন্দ!

আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে....


আরেকটা নতুন :)
কিছুদিন আগে গিয়েছিলাম গুলশান-২ এর ইউনি মার্টে। শপিং শেষে মানে শপিং এর শেষ মুহুর্তে যখন পে করতে যাবো তার ঠিক একটু আগেই চোখ আটকে গেলো এক অপরূপ সুন্দর গ্লাস কন্টেইনারে। আমি মুগ্ধ এবং অবরুদ্ধ! আমার চোখের সামনেই যেন দাঁড়িয়ে রয়েছে এক টুকরো স্বর্গদ্যান! আমি নিশ্চিৎ এক নিমিষেই এই উদ্যানে মন হারিয়ে যাবে যে কারোই। সেখানে এক টুকরো পাথুরে বন্ধুর পরিবেশে ফুটে উঠেছে অদ্ভূত সজীব শ্যামল অনাবিল সৌন্দর্য্যের ছোট্ট একরত্তি বাগান। বনসাই বা বামন গাছ বলে যদি কিছু থেকে থাকতে পারে তো এ যেন এক বামন বাগান। হ্যাঁ আমার চোখে যেন সেই বাগানটি ধরা দিলো পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য্যের এক আশ্চর্য্য ব্যাবিলনের বামন বাগান হয়েই।


কিন্তু প্রাইস ট্যাগে চোখ আটকে গেলো! আমার তো আক্কেল গুড়ুম দাম দেখে। একটার দাম সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা, আরেকটার দাম সাত হাজার! আরে এই এক রত্তি বাগানের দাম এত! যদিও সৌন্দর্য্যের বিচারে আমার কাছে এর মূল্য তখন কয়েক কোটি টাকা। তবুও বিফল মনোরথ হয়ে দোকানীকে জিগাসা করলাম ডিসকাউন্ট দেওয়া যাবে কিনা। তিনি তো অনড় অটল, না এক দামই। আর এই ফিক্সড প্রাইজের শপে আমি আবার দামাদামি করছি দেখে সে একটু সন্দেহের চোখেই তাকালো আমার দিকে। আমি তখন এতই বেপোরোয়া মুগ্ধ তো পারলে প্রায় কিনেই ফেলি। ব্যাগে আর টাকা ছিলো না (ভাগ্যিস) শপিং শেষে। তাই ফিরে এলাম সেই মুগ্ধ করা এক টুকরো বাগানকে সাথে না নিয়েই। কিন্তু মন পড়ে রইলো আমার সেই অপরুপ রুপকথাময় উদ্যানে।


বাসায় এসে নেটে সার্চ দিলাম কোথায় পাওয়া যায় এই গ্লাস বন্দী স্বর্গদ্যান? কি বা তার নাম? খুঁজতে খুঁজতে পেয়েও গেলাম সব তথ্যাবলি। জানলাম একে নাকি বলে টেরারিয়াম। মাই গড! এ্যকুরিয়াম শুনেছি টেরারিয়াম তো জীবনে শুনিনি। কাজেই চোখ একটু কপালে উঠলো। আরও উঠলো যখন দেখলাম পৃথিবীতে এই বৃক্ষ সজ্জা বা টেরারিয়াম বহু যুগ আগে থেকেই, সেই রাণী ভিক্টরিয়ার আমল থেকেই নাকি প্রচলিত ছিলো। ব্যাস শুরু হয়ে গেলো আমার টেরারিয়াম গবেষনা।

জীবনে যা একবার মনোস্থ করেছি তার শেষ না দেখে আমি কখনও ছাড়িনি। কাজেই মনোস্থ করলাম নিজেই বানাবো টেরারিয়াম। কিনতে গেলাম ক্যাকটাস। মাই গড ক্যাকটাসও তো কম না। এমনিতে কয়েক যুগ আমলের আমাদের বাগানে প্রোথিত বুড়া বুড়া ক্যাকটাস হাতের কাছেই ছিলো। কিন্তু আমার তো দরকার ছোট্ট ছোট্ট একদম মনের মত। তো কিনতে গিয়ে বুঝলাম এক একটার এত্ত দাম! তবুও কি আর করা কিনে নিলাম ছোট্ট ছোট্ট কিছু ক্যাকটাস।


এরপর কি কি লাগবে সব তো নেট থেকে পড়ে পড়ে আগেই লিস্টি করা ছিলো। কাজেই মনে পড়লো বেশ কিছুদিন আগে গুলশান আড়ং এর পাশে হোম টেক্সে দেখেছিলাম এক অপূর্ব সুন্দর ফিশ বোল। মাথায় চেপেছে তখন টেরারিয়াম। কাজেই কে ঠেকায় আমাকে! গেলাম সেটাই নিতে। সেখানে কয়েক রকম ছিলো আমি বেছে বেছে গোলগালটাকেই পছন্দ করলাম। হলো গাছ এবং গ্লাস কন্টেইনার। এরপর মাটি, কয়লা, বালু এসব যোগাড় করতে লাগিয়ে দিলাম আমাদের সর্বকর্মা শামীমকে। সে সেসব বিপুল উৎসাহে নিয়ে নিয়ে এলো। আমি গেলাম মাছের দোকানে কিছু কুচি পাথর, শামুক ঝিনুক কিনে আনলাম।


বাসায় আসার পরে মোরশেদা বলে, "আপু এই রকম পাথর তো আমাদের পুরান ওয়াটার ফিল্টারের মধ্যে অনেক রকম সোন্দর সোন্দর আছে।" সে নিয়ে এলো সেসব প্লাস্টিকের খোলস ভর্তি। তাতে অবশ্য তার কুচ পরোয়া নেহি। সে শিল নোড়ার নোড়াটা দিয়ে দুমদাম ভেঙ্গে ফেললো শক্ত প্লাস্টিক আর বের করে আনলো নানা রকম সুন্দর কুচি পাথর। আমি বসে গেলাম বানাতে আমার সাধের টেরারিয়াম উইথ মাই টু সাগরেদ।

পাত্রটাকে ধুয়ে মুছে প্রথমেই আমি এক লেয়ার কালো পাথর বিছিয়ে দিলাম। এটা দেবার নিয়ম কারণ পাথর পানি নিস্কাশনে কাজ করে। ইচ্ছা করে একটু উচু নিচু করে বিছালাম যেন বাস্তব উদ্যানের এবড়ো খেবড়ো ভাবের সাথে খাপ খায়। তারপর ,মাটির মাঝে গর্ত করে গাছগুলো বসিয়ে দিলাম। ঝুরঝুরে মাটিও উপরে ছড়িয়ে দিয়ে পানি স্প্রে করেছি একটু। এরপর কাঠ কয়লা, শুকনো কাঠ পাতা ঘাস আর লেয়ার করে নানা রকম পাথর দিয়ে সাজিয়েছি।

এছাড়াও আমি কাঁচের মাশরুম, ছোট্ট টিয়াপাখি আর ভাঙ্গা ওয়াটার ক্যান এ্যাড করেছি। আমার থিমটা ছিলো একটা বনজ পরিবেশ।
কিন্তু একটা বানিয়েই খ্যান্ত হলাম না আমি। মাথায় তখন শুধু ক্যাকটাসিও কাঁটা কাঁটা সবুজ আর সাদা কালো লাল নীল অপার্থীর জগতের পাথুরে বাগান। কাজেই কি করা যায়, কি করা যায়? চোখ বুজলেই দেখি টেরারিয়ামের নানা রকম ডিজাইন। আবার তো তাইলে শপিং যেতে হবে। তার থেকে বাসাতেই কি কি আছে খুঁজে বের করি। পেয়ে গেলাম ছোট্ট একটা পুরোনো গোল ফিশ বোল, দুইটা মধুর বড় সড় বোতল। এইবার পাথর আর্টিফিয়াল গাছ পালা ডেকোরেশন বাড়ি ঘর যা পেলাম তাই দিয়েই সাজাতে বসলাম আমার নিউ নিউ টেরারিয়াম। তবে মেইন টেরারিয়ামটা করেছিলাম আমি ছুটির তিনদিনে। আর বাকীগুলো স্বল্প সময়ের সাধ মিটাতে ওয়ার্কিং ডেইজগুলোর বিকালে। তবে এরপরের ছুটির দিনে আনবো আরও আরও গাছ পালা, নুড়ি পাথর ইট কাঠ।


আরও আরও টেরারিয়াম বানাবো আমি। আমার রুপকথার রাজ্যের গোল্ডিলকস যেই বনপথ ধরে হারিয়ে গিয়েছিলো সেই রকম একটা পথ কাটবো আমি আমার ছোট্ট বাগানের টেরারিয়ামে। সেখানে থাকবে একটা বাড়ি। আর সেই বাড়িটাই ঢুকবে আমার ছোট্ট গোল্ডিলকস।
আর থাকবে তিনটা ভালুক, তারা বাগানে ঘুরে বেড়াবে, মা ভালুকটার হাতে থাকবে ছোট্ট এ্যপেল বাস্কেট। তারা বনের পথে হেঁটে যাবে। আরও নিয়ে আসবো মৎস্যকন্যাকে, ফুল পাখি আর প্রজাপতিদের সাথে খেলতে যে উঠে আসবে আমার ছোট্ট স্বর্গদ্যানে। বাড়িওয়ালা বনটা তারই নমুনা মাত্র। আরও কাজ বাকী আছে।:)


এতক্ষন বললাম আমার রুপকথার স্বর্গদ্যানের উপাখ্যান। এবার এই টেরারিয়াম সম্পর্কে কি কি জেনেছি আমি তাই একটু বলি। আগেই বলেছি টেরারিয়াম আর এ্যকুরিয়ামের মাঝে শাব্দিক মিল আছে এবং সজ্জাতেও অনেকটাই মিল আবার একেবারেই অনেকটাই বা পুরোপুরিই আলাদা। এ্যকুরিয়ামে হয় জলের তলের স্বর্গ বা রুপকথা রাজ্য আর টেরারিয়ামের হয় রুপকথার বৃক্ষরাজ্য। ঘরের ভেতর মাছের ছোট্ট জলাধার বা বাড়িতে ছোটখাটো সমুদ্র তলের অপরুপ সৌন্দর্য্য সৃষ্টি করা যায় এ্যকুরিয়ামে এবং তা বলতে গেলে আমাদের সকলের জানা।


তবে টেরারিয়াম শব্দটা খুব একটা পরিচিত নয় আমাদের সকলের কাছে। তাই অনেকের কাছেই তা উদ্ভট বা নতুন মনে হবে। এ শব্দটি ভিভারিয়াম নামক একটি ল্যাটিন শব্দ থেকে এসেছে। অ্যাকুয়ারিয়াম শব্দের উৎপত্তিও ভিভারিয়াম থেকেই। ভিভারিয়ামের অর্থ বদ্ধপরিসরে স্বয়ং-সম্পূর্ণভাবে বাস্তুতন্ত্র গড়ে তোলা। টেরা অর্থ স্থলভাগ। সে বিবেচনায় বদ্ধ স্থলভাগে বাস্তুতন্ত্র। তবে টেরারিয়াম শব্দটার আরও একটা অপূর্ব সুন্দর অর্থ আছে। টেরারিয়াম মানে ‘প্লেস অফ লাইফ’ বা জীবনের জন্য জায়গা। আসলেই কি ঘরের মধ্যে এই বিশালতার প্রতীক একরতি ছোট্ট বৃক্ষ বাগান দেখে এটাই বেঁচে থাকার জায়গা মনে হয়না! ‘টেরারিয়াম’ এক অর্থে অন্দরে ছোট বাগান। যা ঘরের ভেতরেই ডেকে আনে প্রকৃতির মুগ্ধতা! আর তা নিজের হাতে তৈরী হলে তো কথাই নেই। একদম মনের মত!

আমার কল্পরাজ্যের সাগরতল-এ্যকুরিয়াম

সে যাইহোক, এতখনে আমার বকবকে বুঝা হয়ে গেছে, স্বল্প পরিসরে কাঁচের পাত্র বা বোতলের মধ্যে গাছ বা লতা-গুল্ম লাগিয়ে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর যে শিল্প, তাকেই বলা হয় টেরারিয়াম। ওহ তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটা কাচের বোতলে করা হয় বলে একে ‘বটল গার্ডেন’ বা বোতল বাগানও বলা হয়ে থাকে।টেরারিয়াম হচ্ছে এমন একটি ক্ষুদ্র আকৃতির বদ্ধ কাচের কিংবা কনটেইনারের স্থাপনা, যা আর্দ্রতা ধরে রেখে উদ্ভিদ ও গাছপালা জন্মাতে সহায়তা করে।


এবার বলি টেরারিয়ামের ইতিহাস :
টেরারিয়ামের উৎপত্তি ভিক্টোরিয়ান যুগে, ১৮২৭ সালে ডা. নেতানিয়েল ওয়ার্ড মথ ও ক্যাটারফিলার নিয়ে গবেষণা করেন। তখন দেখতে পান জারের তলানিতে ছোট ছোট ফার্ন বেড়ে উঠছে ( ভাগ্যিস দেখেছিলেন নইলে আমি কোথা থেকে এমন মুগ্ধতা পেতাম!) এবং সংরক্ষিত কাঁচের ভেতর বাতাস ছাড়া গাছ জন্মাচ্ছে। পরবর্তীতে এটাই ওয়ারডিয়ান কেইজ বা টেরারিয়াম নামে পরিচিতি লাভ করে। আস্তে আস্তে তা সারা বিশ্বের সৌন্দর্য পিপাসু মানুষের( আমার মত তো বটেই:) )দ্বারপ্রান্তে প্রবেশ করে। তবে বাংলাদেশে দুই দশক ধরে এর দেখা মিললেও এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি আমার বিশ্বাস সে শুধু অনেকেরই অজ্ঞতা বা টেরারিয়াম সম্পর্কে না জানার কারণেই।


টেরারিয়াম তৈরির উপাদান :
গ্লাস কনটেইনার হলেই ভালো তবে প্লাস্টিকেরও হতে পারে। কনটেইনার অবশ্যই স্বচ্ছ ও পরিষ্কার হতে হবে যেন পাত্রের বাইরে থেকে ভেতরের গাছপালা পরিষ্কারভাবে দেখা যায় তা মনে রাখতে হবে। টেরারিয়ামের আকার কেমন হবে তা নির্ধারিত হয় ব্যক্তির সৃজনশীলতার ওপর। যে কোনো কাঁচের পাত্র বা বোতল এমনকি অ্যাকোরিয়ামের পাত্রও কনটেইনার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। পাত্রের আকার, আকৃতি কিংবা খোলা মুখ কেমন হবে তা নির্ভর করে কী ধরনের এবং কেমন আকৃতির গাছ কনটেইনারে লাগানো হবে তার ওপর।


কনটেইনার প্রস্তুত :
বাতাস চলাচল করার জন্য কনটেইনারের তলানিতে ১ থেকে ২ ইঞ্চি পরিমাণ নুড়ি, বালি কিংবা ভাঙ্গাচোরা টুকরা দিয়ে সাজাতে হবে। তলানির অতিরিক্ত পানি ধরে রাখার জন্য মস বা শেওলা উপরে দেয়া যেতে পারে। বদ্ধ পরিবেশে দুর্গন্ধ দূর জন্য মসের ওপর কাঠকয়লার স্তর ছিটিয়ে দেয়া হয়। নুড়ি পাথরের পরিবর্তে কাঠকয়লার ১ থেকে ২ ইঞ্চি স্তর ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর দেড় থেকে ২ ইঞ্চি উর্বর মাটি দিয়ে গাছ লাগানোর উপযুক্ত করা হয়।

গাছ নির্বাচন :
গাছ নির্বাচনটাই টেরারিয়ামের সবচাইতে লক্ষনীয় বিষয়। সাধারণত ধীরগতিতে বৃদ্ধি পায় এমন গাছ নির্বাচন করা উচিত। স্বল্প আলোয় জন্মাতে পারে এমন গাছ পছন্দ করা যায়। বিভিন্ন আকার, আকৃতি, রংয়ের গাছের ব্যাবহারে মনের মত উদ্যান সাজানো যায়। এই বোতল বাগান বা টেরারিয়ামে সাকুলেন্ট জাতীয় গাছ যেগুলো কাণ্ড, শাখা-প্রশাখা,পাতা বা মূলে পানি জমিয়ে রাখে সে ধরনের গাছ ব্যাব হার করা যেতে পারে। তবে এ ব্যাপারে অতিরিক্ত আর্দ্রতার ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফার্ন, মস জাতীয় গাছও রাখা যায় অথবা সব ধরনের মিলিয়েও রাখা যায়। টেরারিয়ামে প্রয়োজন অনুযায়ী পানি স্প্রে করতে হবে। অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে কাঁচের গায়ে জলীয় বাষ্প জমলে ওপরের ঢাকনাটা খুলে দিতে হবে। বিভিন্ন পোকার সংক্রমণ থেকে গাছকে বাঁচাতে কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।

যত্ন :
টেরারিয়ামে মাটি শুকিয়ে গেলে সামান্য পরিমাণ পানি স্প্রে করতে হবে। আবার মাটি অত্যধিক আর্দ্র হলে কনটেইনারের মুখ খুলে দিতে হবে। সাধারণত জৈব সার টেরারিয়ামে ব্যবহার করা হয় তবে অজৈব সারও ব্যবহার করা যায়। যদি গাছের শাখা-প্রশাখা বেড়ে যায় তাহলে ছাঁটাই করে দিতে হবে। টেরারিয়াম পরিপূর্ণ অবস্থায় যাবার জন্যে কিছু সময় দিতে হবে, টেরারিয়াম সরাসরি রোদে রাখা যাবে না। যদি গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায় তবে পানিতে দ্রবীভূত হয় এমন সার প্রয়োগ করতে হবে।


কোথায় পাওয়া যাবে এই সাধের টেরারিয়াম?
টেরারিয়াম আমাদের দেশে এখনও তেমন পরিচিত নয় তবে অনেক বেশি না হলেও গাছের দোকানগুলোতে এবং ইউনিমার্টের মত কিছু শপে পাওয়া যাবে টেরারিয়াম তবে সব থেকে ভালো হয় নিজেই বানিয়ে ফেললে। আমি তো এমন কোনো শিল্পকর্ম বানানোর পরে নিজেই তার দিকে তাকিয়ে থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা। কে কি পছন্দ করলো কি বললো তা জানিনা তবে নিজের যে কোনো সৃজনশীল কাজের ভালো লাগা যে কতখানি হতে পারে তা মনে হয় আমার মত আরও কিছু পাগল ঠিকই বুঝবে । কাজেই আমাকে দেখে বা আমার এই লেখা পড়ে যারা যারা এই টেরারিয়াম বানাতে চান দেখে নিন কি কি লাগবে।:)


১। একটা কন্টেইনার( গ্লাস, পাথর, মাটি, কাঠ) যে কোনো কিছুর হতে পারে।
২। কিছু গাছ
৩।মাটি
৪। কয়লা
৫। পাথর
৬।মস
৭।বালু
৮।গাছের ছাল বাকল
৯। শামুক, ঝিনুক
১০। নুড়ি
১১। কাঠি
১২। অন্যান্য ডেকোরেশন


সব আয়োজন শেষ হলো এবার দেখি খুব সহজে পাঁচটা ধাপেই কিভাবে বানানো যায় মনের মত টেরারিয়াম! টেরারিয়াম আসলে ইনডোর গার্ডেন। এই আকর্ষনীয় মায়াবী এক টুকরো বাগান ঘরে নিয়ে আসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের ছোঁয়া। তাহলে মাত্র পাঁচটা ধাপেই বানিয়ে ফেলুক সবাই এই টেরারিয়াম বা আভ্যন্তরীন ক্ষুদ্র স্বর্গীয় উদ্যান।

১ম ধাপ জার নির্বাচন।

২য় ধাপ পাথর দিয়ে এই জারের কিছু অংশ ভর্তি করা।

তৃয় ধাপ কয়লার স্তর। (স্তরগুলি আলাদা হবে।সাথে মাটি।

৪র্থ ধাপ সবুজ মস এবং গাছ পাতা সাজানো।

শেষ বা ৫ম ধাপ কীট পত্ঙ্গ, খেলনা, মানুষ, প্রাণীর মূর্তী দিয়ে সাজিয়ে যে কোনো থিম সৃষ্টি করা।

টেরারিয়াম নিয়ে কাজ করা মানে কোনো এক অপার্থীব স্বর্গীয় জগতে চলে যাওয়া। যেখানে নিজের হাতেই প্রকৃতি উঠে আসে। কল্পনার তুলিতে যেন এঁকে যাওয়া ছবি! যেন সেই যাদু পেন্সিলে আঁকা দৃশ্য, আঁকলেই যা সত্যি হয়ে ধরা দেয় হাতের মুঠোয়।


সবাইকে এই অপার্থীব জগতের আমন্ত্রণ রইলো মানে সবাই নিজে নিজে এক একটা করে বানিয়ে ফেলুক নিজের হাতের স্বর্গদ্যান বা টেরারিয়াম!!!:) আর তারপর হারিয়ে যাক ঘরের মাঝেই এই অপরুপ সুন্দর স্বর্গদ্যানে আর বুকের মাঝার থেকে উঠে আসুক একটি শব্দ- আহঃ! --
প্লেস অব লাইফ...... আহা !!!!!!!!

এরপর আরও কিছু নতুন সংযোজন


বন বনান্তে




ইয়াহু!!!!!!!!!!!!!!!!!



সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৮:২১
২১৫টি মন্তব্য ১৯৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে মৈত্রী হতে পারে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০০


২০০১ সাল থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগের ওপর যে নির্যাতন চালিয়েছে, গত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ সুদে-আসলে সব উসুল করে নিয়েছে। গত ৫ আগস্ট পতন হয়েছে আওয়ামী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×