হে ঐশ্বর্যবান
যা কিছু দিয়েছ সে তোমারি দান
গ্রহন করেছো যত ঋণী তত করেছো আমায় ।
সেদিনএকটি অটোগ্রাফ ও অসম্পর্কের ঋণ (বই রিভিউ) পোস্টটি পড়ে “অসম্পর্কের ঋণ” বইটির ভেতরের কথা সম্পর্কে যখন জানলাম,তখন আমি ছিলাম অফলাইনে। আমি বিস্মিত হলাম!শুধু বিস্মিত না, মহা বিস্মিত! আমার চোখ দিয়ে পানি পড়তে লাগলো। বুকের মধ্যে বেজে উঠলো,উপরের কথাগুলিই,
হে ঐশ্বর্যবান
যা কিছু দিয়েছ সে তোমারি দান
গ্রহন করেছো যত ঋণী তত করেছো আমায় ।
খুব অবাক হলাম! আমি নিজেই ঋণী যার কাছে, সে কিনা তার ঋণ স্বীকার করেছে আমার কাছে! তাও আবার চিরজীবনের মত, তার অমূল্য এক বই এর পাতায়, ছাপার অক্ষরে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছেন সেই ঋণ পাকাপাকিভাবে।
একদিন হয়তো আমি থাকবোনা, কিন্তু আমার কাছে মিছিমিছি এই ঋণ স্বীকার করে নেওয়া খলিলভাইয়ার বই এর পাতা খুব সযতনে ধরে রাখবে আমার নাম। যারা পড়বে তারা হয়তো ভাববে কে ছিলো এই শায়মা! কার কাছে ঋণী ছিলো এই কবি? আমি অতি নগন্য এক মানবী! যদিও অতি উৎসাহী কিছু মানুষ আমাকে অমানবী বানিয়ে দিয়েছে অলরেডী।
সে যাইহোক,
খলিলভাইয়া বা আমার প্রিয় কবিভাইয়া, যার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞতা পাশে বাঁধা, সেই কবিভাইয়ার এসব কবিতা যদিও লেখা হয়েছিলো আমার অপ্সরাবেলায়। তবুও ভাইয়া অপ্সরা নাম না দিয়ে শায়মা দিয়ে ভালোই করেছেন । নয়তো অনেকেই এই অতি কাব্যিক নামটাকে কবির কল্পনাই ধরে নিত হয়তো। ভাইয়া তোমার কাছে আমি ঋণ বলো, কৃতজ্ঞতা বলো, সে আমি স্বীকার করেছি বার বার কিন্তু তুমি আজ আমাকে আরও অনেক বেশিই ঋণী করে দিলে, চিরজীবনের মত।
জীবানানন্দের বনলতা, সুরঞ্জনা বা রবিঠাকুরের সাধারণ মেয়ের মত না হলেও প্রায় তাদের কাছেরই কেউ মনে হচ্ছে আজ নিজেকে। ভাইয়া, তোমার এই কবিতাগুলো লেখার পিছে যে আমি ছিলাম সেটা ভাবতেই আমি এইবার সত্যিকারের কবিতার মেয়ে হয়ে উঠেছি এমনটাই বোধ হচ্ছে আমার। কি বলে সে কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করবো জানা নেই আমার আসলেও।
তুমি নিজ হাতে লিখেছো-
শায়মা আপুর কাছে
কিছু ঋণ আছে!
তোমার কাছেও যে আমার কত ঋণ তা কি দিয়ে বুঝাবো তোমাকে ভাইয়া? সে যাই হোক তোমাকে চেনা আমার সেই অপ্সরাবেলাতে। কিংবা সেই বরুণাবেলায়। একদিন সকালে খুব অবাক হয়ে দেখেছিলাম আমার বরুনাবেলায় লেখা তোমার অহনার গল্প! সেই তোমাকে চেনা ! এরপর তোমার সাথে কত শত কবিতার খেলা, ছড়ার খেলা, আমার আবৃতিতে ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিক জুড়ে দেবার আনন্দ কত কত স্মৃতি। যদিও কবিতা বা ছড়া লেখায় তোমার কাছ দিয়ে কোনোদিক দিয়েই যাইনা আমি। তবুও তুমি জানোনা তোমার উৎসাহ আমাকে কত সাহস জুগিয়েছে, আমার লেখালিখিকে কতখানি এগিয়ে নিয়ে গেছে।
তোমার সাথে দেখা হয়নি কখনও হয়তো কিন্তু এই ব্লগে আসার অনেক আগে থেকেই তোমার নামের সাথে পরিচিত ছিলাম আমি। তখন ২০০৫। আমার কাজিনের সাথে বইমেলায় গিয়েছিলাম আমি। সেদিন ছিলো পহেলা ফাল্গুন তবুও ইদানীং যেমন এমন দিনগুলোয় ভীড়ের কারণে বই এর ধারে কাছে যাওয়া যায়না সেদিন তেমনটা ছিলোনা। আমার কাজিন কি ভেবে যেন একটা বই আমাকে উপহার দিলো। বইটার নাম আই- ফ্রেন্ড। আমি বুঝিনি আই-ফ্রেন্ড এটা আবার কি? ভেবেছিলাম আই মানে চোখ মানে নিশ্চয় চোখের মনি টাইপ কোনো কলিজার টুকরা বন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন এই লেখক। অনেকে হয়তো এ কথা শুনে হাসছে কিন্তু সত্যিই এমনটাই ভেবেছিলাম আমি। কিন্তু আমার বুয়েটে পড়া পন্ডিৎ কাজিন আমার ভুল ভাঙ্গিয়ে বললো, নারে গাধী এটা আই মানে ইন্টারনেট ফ্রেন্ডের কথা লিখেছে। বলা বাহুল্য আমার সেই কাজিন তখন ছিলো ১০০% ইন্টারনেট এ্যাডিকটেড। বাসায় এসে বইটা পড়ে শেষ করলাম এবং লেখকের নাম যথারীতি ভুলে গেলাম। তবে একটা কথা সত্যি আমি ভুলি ভুলি করে আসলে কিছুই ভুলিনা।
সে যাইহোক এরপর বেশ বছর তিনেক পরে একদিন এই ব্লগের বুকেই পড়লাম এক মজার ধারাবাহিক। ধারাবাহিকটির নাম ছিলো খ্যাতির লাগিয়া। খুব মজা পাচ্ছিলাম একজন লেখক কিভাবে বই ছাপাতে চাইছে এবং নাজেহাল হচ্ছে তার সরস বর্ণনায়। আমি তার ফ্যান হয়ে গেলাম। হঠাৎ মনের মাঝে ঝলকে উঠলো আরে এই রাইটার তো সেই রাইটার যার বই আমি আগেই পড়েছি। ভাইয়াকে জিগাসা করলাম সে কথা। জানলাম ইনিই সেই জন! আমার এক্সাইটমেন্ট তখন আরও আরও বেড়ে গেলো! আরে সেই ভাইয়াটাকে আমি এইখানে খুঁজে পেলাম যার লেখা আমি আগেই পড়েছি। এমন কত শত রাইটারের লেখাই তো আমরা পড়ি। কিন্তু এমন হঠাৎ সেই অজানা অচেনা রাইটার বা কবি যদি এখন ধরাছোঁয়ার মাঝে এসে যায়, সেটা যে কেমন মজা সে কেউ বুঝবে কিনা জানিনা কিন্তু আমি জানি। ঠিক একই অনুভুতি আমার হয়েছিলো আরও কিছু বছর পর আমার অনেক অনেক প্রিয় পরী গানের রচয়িতা নস্টাকজিককে এই ব্লগে খুঁজে পেয়ে।
এরপর ভাইয়ার ফ্যান হয়ে গেলাম আমি। ভাইয়ার প্রতিটা লেখাই আমাকে পড়তেই হবে এবং আমার অংবং লেখাগুলোও তাকে পড়তেই হবে এমনি মামাবাড়ির আবদার ছিলো আমার। যদিও ভাইয়া কখখনো বুঝতে দিতোনা আমাকে যে আমি কি পরিমান অংবং লিখি। যা লিখতাম তাই নাকি অনেক ভালো । হা হা হা! অনেকের মত ভাইয়াও যে আমার মাল্টি ট্যালেন্টের ফ্যান সে আমি জানি। নিজেকে মাল্টি ট্যালেন্টেড বলছি দেখে অনেকেই ঠোঁট বাকাচ্ছে সেটাও জানি কিন্তু সেটা ভাবার পরেও এই উপমা আমি না দিয়ে পারলাম না। কারণ অনেকের কাছে নিজের সম্পর্কে শুনি এই কথা তবে কতখানি ট্যালেন্ট বা সকল কাজের কাজী এই আমি (সবখানে লাফ দেওয়া বুঝে না বুঝে আর কি) সেতো আমি নিজেই জানি। ( থাক বাবা অন্যের চোখে ধুলো) । সে যাইহোক নিজেকে ট্যালেন্টেড বলায় আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই সবাই নিজেরাই দেখুক-
ভাইয়া নিজেই লিখেছেন-
বরুণা-
অপ্সরা-
শায়মা হক-একজন ট্যালেন্টেড কিন্তু অত্যন্ত অমায়িক ও বিনয়ী ব্লগার!হাসছি ভাইয়ার এই কথা পড়ে। একমাত্র এই ভাইয়াটাই জানে ভদ্রতা করে কত কিছু হজম করে লুকিয়ে ফেলি আমি কিন্তু রাগ হলে বা দুঃখ পেলে সোজা গিয়ে ভাইয়াকে ডাক দেই - ভাইয়া!!!!!!!!!!!!!!!!!!! দেখো দেখো ও এইটা ...... সে সেইটা বললো....... ইচ্ছা হচ্ছে ........ এক ....... মুন্ডু.........দেই হা হা হা ভাইয়া আমাকে থামিয়ে দেয়। এটা সেটা বলে কিন্তু সেই ভাইয়াই আবার আমাকে দেখে অমায়িক আর বিনয়ী হিসেবে!!! আমি জানি প্রিয় মানুষদের সাত খুন মাফই হয়ে যায়।
ভাইয়ার বইটির প্রথম কবিতা-
তুমি কি নজরুল হবে? কিংবা সুকান্ত?
কেন যেন চোখ বন্ধ করেও আমি জানি কথাগুলি বলেছিলো অহনা। অনেক অনেকদিন আগে।
এই কবিতার সবচেয়ে সুন্দর লাইন দুটি-
আমায় নিয়ে কবিতা লিখোনা, আর কোনোদিনও ---কি নিদারুণ অভিমান! কিংবা দুঃখ! কে জানে! ভাইয়াও কি তার খবর পেয়েছিলো?
এরপর ক্ষণজন্মা
এ কবিতায় ভাইয়ার মনের একান্ত কিছু অনুভুতি যা বেশিভাগই হাহাকার মনে হলেও এসবও যে ভাইয়ার দারুন উপভোগ্য বা সুন্দর কিছু সময়ের অনুভুতি তা বলে দেবার অপেক্ষা রাখেনা। এইভাবে এত গভীর অথচ সহজভাষায় অনুভুতিগুলো ঢুকে যায় হৃদপাজরের ভেতরে। ভাইয়া তুমি লেখায় কঠিন শব্দ এড়িয়ে চলতে বলেছিলে, আমি একবার আমার একটা লেখা পড়তে দিয়েছিলাম তোমাকে। আমি লিখেছিলাম দিঠি, তুমি তা কেটে চোখ করে দিতে বললে। । আমি জানি কঠিন বা যে শব্দগুলো অবোধ্য তা দিয়ে কখনও কারো হৃদয় ছোঁয়া যায়না।আর জেনেছিলাম সেটা তোমার থেকেই। ওহ আরও একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি, তুমি উপদেশ বা সাজেশন যাই দাও না কেনো নিজে হাতে কখনও কারো লেখায় কাঁচি চালাতে চাওনা। আমি বার বার বলেছি ভাইয়া কেটে কুটে ঠিক করে দাও কিন্তু তুমি কখনও আমার কোনো লেখায় হাত দাওনি শুধু বলেছো এমনটা ভালো, ওমনটা হতে হয়। ভাইয়া তোমার কাছে আমার ঋণের শেষ কি করে হয় বলো!
এরপর বইটিতে আছে, প্রেম ও দ্রোহের কবিতাবলী-
তাদের মাঝে সবচেয়ে সুন্দর
“তোমার জন্য”
সব কবিতারই কিছু মানে হবে
এ ভেবে কখনো কবিতা লিখি নি
সব ইশারায় সাড়া দেবে তুমি
এমন করেও কখনো ভাবি নি যখন যেভাবে শব্দরা আসে
ক্রোধ ও কান্না, প্রেম ও দ্রোহে
ওভাবেই ওরা ঠাঁই করে নেয়
আপন গুণ ও গন্ধ-আবহে যা কিছু লিখেছি প্রেমের জন্য
হয়তো সবই তা নিরেট বর্জ্য
অশ্রু ফেলো না, যেদিন বুঝবে
তোমার জন্য এসব অর্ঘ্য।
কিছু নাই নাই করেও যে সবকিছুই তার জন্য সেই কথাটাই লুকিয়ে আছে এই কবিতায়। কি অসাধারণ কথামালা! অবাক না হয়ে উপায় নেই। ভালোলাগা বা বিমুগ্ধতায় নিশ্চল হয়ে রইবেই যে কোনো পাঠক এ কবিতা পড়ে, সে আর বলে দিতে হবেনা।
“বুবুর কথা” এই কবিতা নিয়ে বলতে পারবোনা কিছুই । এখন আমার আর কষ্ট পেতে ইচ্ছে হচ্ছেনা । ভালো থাকুক বুবু যেখানে আছে সেই চির শান্তির দেশে।
অমর্ত্যবর্তিনী পড়ে বলে দিতে হয়না এ অহনাকে লেখা। এই কবিতা যে ভাইয়ার অনেক প্রিয় কবিতাগুলির মাঝে প্রিয়তর তা বোঝা যায় ভাইয়ার প্রফাইলে লেখা এই কথাগুলি সর্বদা ঝুলে থাকতে দেখেই-
বউকে দিব্যি প্রেম দেই, যার চেয়ে ঐশ্বর্য্য কিছুই নেই
তোকে দেই মুহুর্ত কবিতা, না চাইতেই-
“চলো আজ প্রেম করি” এই কবিতা তো অবশ্য অবশ্য ভাবীকে নিয়েই লিখেছেন আমার কবিভাইয়া এতে কোনো সন্দেহ নেই। যারাই পড়বে তারাই বুঝে যাবে। ভাইয়া একবার ছোট্ট একটা টুল বানালো বিছানার উপর তাতে ল্যাপটপ আর সাথে ঝালমুড়ি চানাচুর টুরের এক একটা বয়েম । আয়েশ করে এইবার ব্লগিং করতে চায় ভাইয়া আর তখনই নিশ্চয় লিখেছিলেন “শ্বেত পতাকা” । ভাইয়া তোমার “দেয়াল লেখন” আরও এক আশ্চর্য্য কবিতা। তোমার প্রতিটা কবিতার তুলনা প্রতিটা কবিতা। কোনটার কথা বলবো আর কোনটা যে বলবোনা!
নাহ সোজা এবার চলে যাই নাম না জানা ঘাসের ঘ্রান কবিতায়-
যে কবিতায় আমিই বনলতা, কিংবা ক্যামেলিয়া অথবা আমি সঞ্জীবনী সুধা যা থেকে মানুষ পায় বেঁচে থাকার মন্ত্রণা--- কি আশ্চর্য্য!! এমন করেও কাউকে আঁকা যায় কবিতায়! আর সেই সঞ্জীবনী সুধা স্বয়ং আমি! কি করে নিজেকেই ভাবি এমনটা!!! সে যাইহোক ভাইয়া তোমার এই কবিতা পড়ে মনে পড়ে গেলো আমার আরও একজনকে, সে আমার ফেরারী পাখি আপুনি। মানে শাপলা আপু। এখন আর আসেনা ব্লগে কিন্তু সেই আপুটা একদিন তার এক লেখায় আমাকে বলেছিলো সবুজ কলমীলতা আমি ভাবছিলাম এটা আবার কেমন উপমা! হীরা নয় , মতি নয় মুক্তা নয় আমাকে কলমীলতা বলা কেনো!!! হা হা হা এখন বুঝি আসলেই কলমীলতা বা দূর্বা ঘাসের সবুজ সজীবতায় যে প্রাণ লুকিয়ে আছে তার খবর তোমরা হয়তো পেয়েছিলে যা আমি নিজেই খুঁজে পাইনি। আবারও বলছি ভালোবাসায় পাথরও সোনা হয় হয়তোবা।যার খবর আমার জানা নেই।
তোমার কবিতা-
কিছু কিছু ঘাস আছে, তার ঘ্রান ফুলের ঘ্রানের মত নয়
অথচ সেই ঘ্রানের স্পর্শে---- এখন আমি নিজেই পাই সেই ঘাস বা ফুল কিংবা ঘাসফুলের ঘ্রান!
এই কবিতার সময়কাল ভাইয়া লিখেছো ৩ মে ২০১০ কিন্তু ঋণে শায়মার নাম থাকলেও হয়তো তা অপ্সরাতে লেখা হয়েছিলো, আমি খুঁজে পেলাম না। যদিও কবিতাটা মনে আছে!
“অধরা” আমার এই পোস্টে সে কবিতার জন্ম, ৪০ নম্বর কমেন্টের ঘরে-
http://www.somewhereinblog.net/blog/saimahq/29147024
হে দূরবতী বাতিসমগ্র, তোমরা জ্বলে ওঠো এবং আলো দাও, হাসো এবং আনন্দ ছড়াও, তোমরা একেকটা নিশানা মনোরম ঘোরের মতো যুগপৎ নিভে যাও
হে সুরঞ্জিতা, শত শত বিস্ময়প্রদীপের জননী, তোমার অজর আলোর কারুকাজ ইথারে জেগে থাকে, এমনকি তুমি ঘুমিয়ে গেলেও- যেমন এখন
হে শতরূপা, অভ্রচারিণী কুহেলিকা, তোমার অন্তর্ধানের পরও আমাদের বন্দনায় জেগে থাকে তোমার মোহিনীকুহক উদ্ভাস- যেমন এখন
হে অনামিকা, যতোদূর জানা যায়, তোমার নিজস্ব কোনো নাম নেই; অথচ সকল নামের গভীরে তোমার বাস; আমরা তোমার কোনো ঠিকানা জানি না, কিন্তু 'ঘরে ঘরে তোমার ঘর আছে' তবু;
হে অপ্সরীকন্যা, নভোনিবহের তারার ভিড়ে তোমাকে দেখি, সোঁদা ফুলের গনগনে গন্ধ তোমার নিরঞ্জন শরীরে; তুমি এক তুমুল বিপুল রূপস্বরা; সহজেই ছুঁয়ে দাও, অথচ আজন্ম দূরবর্তী, অনিশ্চিত, অধরা।
ভাইয়ার সেই পোস্টটির লিন্ক
http://www.somewhereinblog.net/blog/farihanmahmud/29148067
হা হা হা পোস্ট আর পোস্টটির কমেন্টগুলি পড়ে নস্টালজিক হলাম। কি যে পাগলামি আমি করতাম তখন!
শায়মা বলেছেন:
আমার ঐশ্বর্য্য নেই, রঙ নেই, নেই রোশনাই,
শুধুমাত্র ছন্দ আছে, তাই দিয়ে শুভেচ্ছা পাঠাই।
সুকান্ত
নিলাম সে শুভেচ্ছাটুকু দরকার নেই রঙ্গে
চাকচিক্য ঢাকা থাকুক নানা রকম ঢঙ্গে।
০৬ ই মে, ২০১০ রাত ৮:০৭ ০
লেখক বলেছেন:
চন্দ্রাবতী কন্যা তুমি
পরীর দেশে ঘর
তুমি আমার অনেক আপন
আমি তোমার পর
সত্যিই আমার সৌভাগ্য এমন কিছু ভাইয়াদের স্নেহধন্যা হয়েছি আমি।
সব কবিতা নিয়ে লিখতে গেলে রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে যাবে তবে আরও একটি কবিতা “খোঁজ” যদিও এই কবিতায় ভাইয়া আমার কাছে ঋণ লিখেনি এবং কবিতাতেও ভাবীজির ছবি ছিলো, তবুও ১৭ই আগস্ট আমার জন্মদিনে এ লেখা। এটা কি আমার না হয়ে যায়! তাই নিয়ে নিলাম আমি এ কবিতাটাও।
কেউ তোমাকে ভুল পথে দেয় ঠেলে
কেউ তোমাকে অন্য পথে ডাকে
তার ঠিকানা নিজেই কি সে জানে
তোমার ভেতর খুঁজছো তুমি যাকে?
তোমার ভেতর খুঁজছো তুমি কাকে?
সত্যি বলো, পাও নি কি তার দেখা?
হন্যি হয়ে সারা ভুবন খোঁজো
তোমার পাশে তোমার ছায়া একা
তোমার পাশে তোমার ছায়া নড়ে
তোমরা দুজন বাস করো এক ঘরে
তাই জিগাসা করলাম ভাইয়াকে---
অপ্সরা বলেছেন: কারা দুজন ভাইয়া????
কবিতা আর ছবিতা দুইটাই অনেক অনেক সুন্দর!!!
১৮ ই আগস্ট, ২০১১ রাত ১০:১২ ০
লেখক বলেছেন: তুমি, আর তোমার ছায়া
( এই তো আগেই জানতাম)
কবিতা আর ছবি দুটোই অনেক অনেক সুন্দর জেনে ভালো লাগলো আপু।
ভাইয়ার লেখা পড়ে সবচাইতে যে মন খারাপ হয় সেই লেখার নাম
“আমরা খুব গরীব ছিলাম।“খুব ইচ্ছে করে ভাইয়ার এই কষ্টটাকে ভুলিয়ে দিতে কিন্তু কেন যেন মনে হয় এই গরীববেলাটা ভাইয়ার এক সম্পদ! স্নেহময়ী লক্ষী মা, সেই অকৃত্রিম মায়া মমতার সংসার, সেই অঢেল ভালোবাসা ছাপিয়ে কোনো কষ্টই ছুতে পারেনা কাউকে আসলে কোনোদিন।
প্রমীলার সাথে দেখা হলে বা তোমার প্রেমিকের নাম বলো প্রমীলা----
কি যে মন ভুলিয়ে দেওয়া সব কবিতা! শুধু আমি নই যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য।
আবারও ভাইয়ার আরেকটি কবিতা ---
প্রমীলা এখন যে কোনো নারী! তার বুকে অচেনা গন্ধ! যে তার সত্যকারের প্রেমিক, জানিনা
প্রমীলা ঝিনুক খুড়ে ছিনিয়ে আনে আশ্চর্য্য বেদনা
পাগলা ষাড়ের মত বেদনারা তীব্র তেড়ে আসে----
আমি জানি নীল লোহিতের বরুনার বুকে অচেনা গন্ধ বা পাগলা ষাড়ের চোখে লাল কাপড়ের মত সাদৃশ্যপূর্ণ ভাইয়ার কবিতার শব্দগুলিতে সেই নীললোহিতের কবিতার মেয়ে বরুণা ছিলো। কিন্তু আমি তা মানছিনা । আমিও বরুণা । আমিও তো একদিন বরুনাই ছিলাম। আর তাই তো ভাইয়া ঋণ স্বীকার করে নিলো এ কবিতা বরুণার কাছে। নীললোহিতের কাছেও ভাইয়ার ঋণ স্বীকারক্তি কিন্তু কবি্তার ঐ বরুণাটা আমার আরেক সত্বা!
সবশেষে বলবো আমি কবিতার মত মেয়েটির কবিতার কথা-
ভাইয়ার এই অমর কবিতারও অংশ হয়ে আছি আমি-----
http://www.somewhereinblog.net/blog/farihanmahmud/30003166
সে যাইহোক--
ভাইয়া তুমি আমার চোখে শুধু একজন সেরা কবিই নও, তুমি একজন সেরা মানুষ, সেরা বাবা, সেরা প্রেমিক ও স্বামী। এমনকি একজন সেরাদের সেরা ভাই, একজন শ্রেষ্ঠ সন্তান। তোমার বড় ছেলেটার জন্য ভাবনা বা তার পরীক্ষার সময় সবকিছু বিসর্জন দিয়ে তার ঘরে আসন গড়ে নিয়ে তাকে সর্বশ্রেষ্ঠ ফলাফল করানোতে তোমার যে ভুমিকা ছিলো সে সময়ে বুঝেছি তোমার সেরা পিতৃত্বের কথা। তুমি সেরা প্রেমিক তোমার অহনা, শাহনাজ বা নার্গিসদের নিয়ে লেখা কবিতায়। তুমি একজন কতখানি মমতাময় স্বামী তার পরিচয় তোমার “ইলিশ” গল্পের ভাবীর অসাধারণ মমতা ঘেরা রান্নার বর্ণনায়। তোমার বুবুর জন্য লেখা কবিতায় জেনেছি তোমার শ্রেষ্ঠ ভাই এর মমতা। আর মায়ের জন্য ভালোবাসায় তুমি সেরাদের সেরা।
তখনও কেউ জানেনি আমিই যে সেই বসন্তদিনের বরুণা। এমনকি তোমাকেও বলিনি আমি সেই কথা। কি সব লিখতাম ছাইপাশ যদিও মানুষের ভালোবাসা সেটা পাওয়াও ছিলো এক অমূল্য সম্পদ তবুও সবকিছু ছাপিয়ে তুমি যেদিন বরুণার কবিতার ঠাই করে দিলে তোমার সবুজ অঙ্গনে হাজার কবির কবিতাদের ভীড়ে। সে যে আমার কি আনন্দের দিন ভাইয়া! ছোটবেলায় কলেজ ম্যাগাজিন বা আবোল তাবোল অনেকখানে নিজের লেখা দেখেছিলাম বটে তবে একটা রিতীমত কবিতার বই এর মাঝে নিজের লেখা কবিতা জ্বলজ্বল করছে এ অভাবনীয় ভালোলাগার অনুভুতি কোনো ভাষায় বা লেখনীতেই প্রকাশ করা যায়না আসলে। আমার সেই জলমোতী কবিতাটাই এক আজব মোতী হয়ে হৃদয়ে গেঁথে রইলো সারাজীবনের জন্য।
আর ভাইয়া তুমি আমার কাছে আরও একটা কারণে সেরা সেই সম্পর্কের নাম অসম্পর্ক আর সেই অসম্পর্কের ঋণে চিরঋণী করে রাখলে আমাকে আমৃত্যু। এমনকি মৃত্যুর পর পর্যন্ত। তুমি অনেকবার বলেছো তোমার প্রতি আমার যে কৃতজ্ঞতা তার ঋণ নাকি কি দিয়ে শোধ দেবে জানা নেই তোমার । তোমার হয়তো একটা কথা কখনও জানাই হবেনা, ঋণ শোধ দিতে গিয়ে কিছু মানুষ কাউকে কাউকে আরও বেশি ঋণী করে ফেলে।
আমার সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ***** ভাইয়া অনেক ভালো থেকো ভাইয়ামনি। অনেক অনেক ভালোবাসা তোমার জন্য।
কৃতজ্ঞতা- কাল্পনিক ভালোবাসা ভাইয়াকেও আমার এই চির স্মরণীয় বইটির এত সুন্দর একটা প্রচ্ছদ করে দেবার জন্য।
কৃতজ্ঞতা-নীলসাধু ভাইয়াকেও বইটি প্রকাশের জন্য।
কৃতজ্ঞতা- সেলিম আনোয়ার ভাইয়াকেও এই বইটি নিয়ে আমি জানবার আগেই পোস্টটি লেখার জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭