• এলাকার ভুমি অবক্ষয় ঘটবে
• অরন্য উচ্ছেদ হবে
• ভূমি অভ্যন্তরে ক্ষতিকারক ভিসুয়ালের অনুপ্রবেশ ঘটবে
• উচ্চশব্দের সৃষ্টি হবে
• সর্বোপরি মানব স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়বে।
চুনাপাথর খনি খনন পরবর্তী সময়ে চুনাপাথর উত্তোলনের জন্য খনি অভ্যন্তরে বিস্ফোরণ ঘটানো, খন্ডিত চুনাপাথর স্থানান্তর ও চূর্ণ করার ফলে-
• অনেক বেশী পরিমান বিভিন্নরকম ক্ষতিকারক বস্তুকণার সৃষ্টি হবে
• ক্ষতিকারক সালফার ডাই অক্সাইড, মনো-নাট্রোজেন অক্সাইড, কার্বণ ডাই অক্সাইড ও মনো কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হবে এবং
• বাতাসে প্রচুর ধূলিকণার সৃষ্টি হয়ে মারাত্বকভাবে বায়ূ দূষণ ঘটাবে।
পরিবেশের নেতিবাচক পরিবর্তনের ফলে উক্ত এলাকার স্থানীয় জনসাধারণ-
• ফুসফুস এবং শ্বাসনালীর ক্যান্সারসহ বিভিন্ন প্রকার মারাত্বক ব্যাধিতে আক্রান্ত হবে।;
• দম বন্ধ হওয়া, গলা ও চোখে জালা-পোড়া করা, হাঁপানি, এমফিসেমা, শ্বাসকষ্ট ও ব্রংকাইটিস মত রোগে ভুগতে থাকবে।
• কানে কম শোনা, চোখে কম দেখা, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেষ্টরেলের মত্রা বৃদ্ধি, হৃদরোগ বৃদ্ধি ও কিডনীরোগ এর মত মারাত্বক রোগে আক্রান্ত হবে।
স্থানীয় আবহাওয়া পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়ে-
• বৃষ্টিপাত কমে গিয়ে এলাকায় প্রচণ্ড- খড়া দেখা দিবে
• গরমকালে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে ও শীত কালে তাপমাত্রা কমে গিয়ে চরমভাবাপন্ন অবস্থার সৃষ্টি হবে
• বায়ু প্রবাহের গতি হ্রাস ও বাতাসের আদ্রতা কমে গিয়ে দমবন্ধকর একটি পরিবেশের সৃষ্টি হবে
• বাতাসে সালফার ডাই অক্সাইড এর প্রভাবে সূর্যালোকের পরিমান কমে যাবে
• বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের সঙ্গে ক্ষতিকারক বস্তুকণার সম্মিলনে অ্যাসিড বৃষ্টি হবে।
মাটি কনায় ক্ষত সৃষ্টি হওয়ায় বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে, বিশেষত-
• জমির লবনাক্ততা ও অম্লতা বৃদ্ধি পাবে
• বাফারিং পরিমান হ্রাস পাবে
• জমির পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাবে
• ভূঅভ্যন্তরের পানির লেভেল অনেক কমে যাবে ফলে জমির ফসল উৎপাদন কমে যাবে।
ভুঅভ্যন্তরে কম্পনের সৃষ্টি হওয়ায়-
• এলাকার কাঁচা-পাকা বাড়িঘর ভেঙ্গে পড়বে
• ফসলী জমি জমা ডেবে যাবে জমির পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাবে।
• ভূপৃষ্টের পানি দূষিত হয়ে পড়বে
• প্রাকৃতিক ফ্লোরা-ফোনা নষ্ট হবে
• বায়ু দূষণের ফলে এলাকার উদ্ভিদ ও প্রানিসম্পদের উপর মারত্বক প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।
আমরা যারা খনি এলার জন সাধারণ আমাদের কি হবে? শুধুমাত্র বারফালা, তাজপুর, নাজিরপুর, জোলাপাড়া, লক্ষ্মীপুর ও দৌলতপুর-এই ৬টি গ্রামের কমপক্ষে ১,৯৫৩ পরিবারের ৩,৯৬৯ জন মানুষ তাদের বসতবাড়ী, পুকুর, বাগান ও ফসলী জমি থেকে সম্পন্ন বা আংশিকভাবে উচ্ছেদ হবে। পাশাপাশি বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের ৭,৬৮৯ পরিবারের ২৬,৬৬৪ জন মানুষ আংশিকভাবে বসতবাড়ী, পুকুর, বাগান ও ফসলী জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া থেকে কোন না কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যদি বলা হয় জমির উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ করা হবে। আসলে এসব ক্ষেত্রে কি হয়- সরকারী যে রেট তার সাথে যৎসামান্য যুক্ত করে প্রদান করে যা জমির প্ররকৃত মুল্যের চেয়েও অনেক কম। আর সেই জমি বিক্রয় করে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে এলাকার জনগণ একটি ভাল রেস্টুরেন্টে এক মাসও খেতে পারবে না, মাথা গোঁজার ঠাঁই পাওয়া তো দূরের কথা। খনি এলাকার শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষের জীবিকা যেখানে কৃষি উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল, সেখানে এলাকার মানুষের জীবিকার কি হবে? পূনর্বাসনের কি হবে?
খনি এলাকার জনগণের ভবিষ্যত প্রজন্মের কি হবে? তবে কি উন্নয়নের জন্য এলাকার জনগণ জীবন কুরবানী দিয়ে উদ্বাস্তু হব? বাপ-দাদার ভিটে মাটি ছেড়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিবে? তবে কি উন্নয়নের নামে নরবলী হতে হবে? প্রতিবাদ করলে গণতান্ত্রিক স্বাধীন দেশে এলাকার জনগণ কি লাশে পরিনত হবে? ভীটে মাটির মায়া দেখালে হাতে হাতকড়া লাগবে?
তাই সরকারের উচিতই নয় এমন কোন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া, যাতে খনি এলাকায় বসবাসকারী মানুষ অথবা জীব বৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়।