somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফিরিঙ্গি বধের আগে পরে - ফেসবুক থেকে বলছি

১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফিরিঙ্গি বধের আগে ও পরে ফেসবুকে দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেটা ব্লগে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলামনা।

ফিরিঙ্গি বধের আগে:
আজই বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড ম্যাচের টিকেট কিনলাম অনলাইনে, সাথে আনিস ভাই ভাবি ও নোমান ভাই ভাবি। আমাদের পয়সার সুদ আইসিসি রে খাইতে দিবনা এইজন্যে গত এক বছর ধরে টিকেট না কিনে একেবারে শেষ মুহুর্তে কিনলাম। দুষ্টু লোকেরা টিকেট না পাওয়ার জন্যে বদ দোয়া দিচ্ছিল, কাজ হয়নি (হে হে টিকেট না পাইলে ঠ্যালা বুঝতাম)। যাই হোক দেশমাতৃকার ডাকে সাড়া না দিয়ে পারা গেলনা। এবার আর বাংলাদেশের জয় আটকায় কে, পোলাপাইন গুলি খেলা বাদ দিয়া গ্যালারির দিকে মনোযোগ না দিলেই হয়। গ্যালারির কেউ প্রেম বা বিয়ের প্রস্তাব খেলার মাঝখানে দিয়ে না বসলেই হয়, হাজার হইলেও ইয়াং পোলাপাইন।

ম্যাচ পূর্ব মিটিংও সেরে ফেললাম, সাথে সেইরাম খানাপিনা। কালকের গেমপ্ল্যান, স্ট্রাটেজি, ব্যাটিং অর্ডার, ফিল্ডিং সব বিষয়ে আলোচনা হল। খেলার একটা ফারা ছিল, সেটাও কেটে গেল আমাদের গাড়ির উপর দিয়ে। মানে মিটিং শেষে বাসায় আসার পথে ছোট খাট গরু সাইজের ক্যাঙারু ১০০ কিলো স্পিডের রাস্তায় গাড়ির উপর লং জাম্প প্র্যাকটিস করতে গিয়ে গাড়ির সামনের দিক পুরা বসকায় দিল। যাক খেলার ফারাত কাটল।

এক বড় ভাইয়ের টিম জার্সি কিনে দেয়ার কথা ছিল, দেয় নাই। ব্যাপার না, ইংল্যান্ডের সাথে খেলা, চেহারাতেই লেখা আছে বাংলাদেশের খেলোয়াড় থুক্কু সাপোর্টার। ভাবতাছি লুঙ্গি পইরা খেলা দেখতে যামু। সঙ্গী সাথি পাইতাছিনা, কেউ থাকলে আওয়াজ দিয়েন।

এট লাস্ট নট লিস্ট, ম্যাচ নিয়া টেনশন নেয়ার কিছু নাই, আমরা জিততেছি। তো দেখা হবে এডিলেড ওভালে দুপুর দুইটায়।

ফিরিঙ্গি বধের পরে:
খেলা দেখার সময় যেহেতু খেলা আর গ্যালারি দেখায় ব্যস্ত ছিলাম, তাই সেলফি তুলা হয়নি, স্ট্যাটাসও দেয়া হয়নি। এখন খেলা শেষে একটু গপ শপতো করতেই পারি। তার উপর যেভাবে ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশরে জিতাইলাম। জ্বি, একেবারে ওপেন ডিক্লেয়ার দিয়ে। যারা বিশ্বাস করতেছেননা তাদের জন্য গতকালের স্ট্যাটাস প্রথম কমেন্টে দিয়া দিলাম। ইনিশিয়াল ভাব মারা এখানেই শেষ।

সকালে বউরে কইলাম, একটু সাজ গোজ করে পালিশ টালিশ করে যাও, তাইলে যদি টিভিতে মুখ খান দেখানো যায়, বউ কি আর কথা শুনে। সারা দিন খেলা দেখেও টিভিতে মুখ দেখানো গেলনা। না, আমার বউ এর ক্যামেরা ফেস সুবিধার না। বুঝতে বেশ দেরি হয়ে গেল।

বাংলাদেশ সাপোর্টার জোনে ছোট্ট এক টুকরো বাংলাদেশে বসে খেলা দেখলাম। টিকেটের দামও ছিল হাতের নাগালে। কিন্তু হাতের নাগালের বাইরে থাকা টিকেট কেটে একটু আরামের জন্য যারা ভিআইপি বা এ জাতীয় জোনে বসে খেলা দেখল সেসব বন্ধুকে মিস করেছি। তবে তাদের কেউ কেউ লাস্টের দিকে এসে আমাদের সাথে যোগ দিল আরাম আয়েশের মায়েরে বাপ বইলা (স্ট্যাটাসের এই অংশ টুকু সবার বুঝার দরকার নাই)।

সব সময় দেখি আমরা অন্যান্য দেশের হয়ে গলা ফাটাই। আজ কিছু ভিনদেশিকে আমাদের হয়ে গলা ফাটাতে দেখে ভালই লাগতেছিল, খুব বেশি ফটো না খিঁচলেও এরকম কিছু ফটো নিয়েছি। গ্যালারিতে হুট করে কোন এক পাকি দেখি পাকিস্তান আর ইংল্যান্ডের ফ্ল্যাগ নিয়ে চক্কর দিতেছে, আমরাও তারে এমন আদর ভালবাসা দিলাম যেন সামনে টিক্কা খানরে পাইছি।

ও হ্যা ভালো খবর, আজ কেউ রুবেল বা কাউরে বিয়ে শাদির কথা বলেনাই (অবশ্য গ্যালারিতেই হ্যান্ডসাম পোলাপাইন ছিল)। প্লেয়াররাও খেলায় মনোযোগি ছিল, এদিক ওদিক তাকায় নাই। গুড জব বয়েস। খালি তামিম মনে হয় ভায়রা ভাইদের আর রুবেলের বউ বা প্রেমিকা ভাগ্য নিয়ে আফসোস করতে করতে ক্যাচটা ফেলে দিল।

আমার পোলারে নিয়া ভয়ে ছিলাম, দেখা যাবে খেলা শুরু হওয়ার আধা ঘন্টা পরেই বাসায় চলে যাওয়ার বায়না ধরবে। এরকম পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। আজ দেখা গেল সেও ডিস্টার্ব দেয়নাই, শুধু মাঝে মইধ্যে ক্রিকেট খেলারে বোরিং বলা ছাড়া। সেও বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিত্কার করলো আর যারে পায় তারেই জানান দেয়, আই এম ফ্রম বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ কত সুন্দর সে সম্পর্কে তার মনের মাধুরি মিশানো গল্প। যদিও তার বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছু মনে থাকার কথা না। আর অজি বুড়া বুড়ি গুলিও মনোযোগ দিয়ে তার গল্প শুনে।

একটা গোপন কথা বলে দেই। লাস্টের দিকে যেই রান আউটটা খুব ভাইটাল ছিল, বিশ্বাস করুন উইকেটটা আমরা নিছি। টিভি রিপ্লে যখন দেখা হচ্ছিল আমরা তখন এমন ভাবে থার্ড আম্পায়ারদের দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে আউট বলে চিত্কার করছিলাম তাদের পক্ষে বেনিফিট অফ ডাউট দেয়ার মত ফাজলামি করা সম্ভব ছিলনা। পুরো খেলা জুড়ে এমন ভাবে বাংলাদেশ বাংলাদেশ বলে চিল্লাচ্ছিলাম পারলে ইংল্যান্ডের প্লেয়াররা এসে ম্যাচটা দিয়ে দেয়। ইংলিশরাতো তালি দেয়ার সময় গুনে গুনে তিনবার দেয়, ভুলে চারবার হয়ে গেলে লাজুক ভাবে এদিক ওদিক তাকায়।

সবশেষে একটু সিরিয়াস, বাংলাদেশের কিন্তু এখন ক্রিকেট ট্যুরিজম, ক্রিকেট মার্কেটিং, ক্রিকেট ডিপ্লোমেসি এসব নিয়ে ভালোভাবে চিন্তা শুরু করা উচিত। ক্রিকেটাররা সেই পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছে, বাকি কাজ আমাদের। হিন্দি সিরিয়াল আর ধর্ষণের ক্ষেত্রে ফলো না করে এই ব্যাপারে ভারতকে ফলো করলে মন্দ হয়না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সত্যি বলছি, চাইবো না

লিখেছেন নওরিন হোসেন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০৮



সত্যি বলছি, এভাবে আর চাইবো না।
ধূসর মরুর বুকের তপ্ত বালির শপথ ,
বালির গভীরে অবহেলায় লুকানো মৃত পথিকের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা কি 'কিংস পার্টি' গঠনের চেষ্টা করছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:১০


শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নামক সংগঠন টি রাজনৈতিক দল গঠন করবে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছেই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্থান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্থান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×