ওয়ারিদ তার নাম বদলে হচ্ছে এয়ারটেল। উল্লেখ্য, এ বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের ওয়ারিদ টেলিকমের শতকরা ৭০ ভাগ শেয়ার কিনে নেয় ভারতী এয়ারটেল। বাংলাদেশে ওয়ারিদ এর বদলে ‘এয়ারটেল’ হওয়ার আনুষ্ঠানিকতার এখানেই শুরু।
এরই মধ্যে বাংলাদেশে এয়ারটেল তার নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারিগরি প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। বিশ্বের মোবাইল ফোনভিত্তিক সর্বাধুনিক এবং গতিসম্পন্ন ব্লেড নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নে বাংলাদেশে এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক স্থাপনে কাজ করছে এরিকসন এবং হুয়াউয়ে।
এরিকসন সূত্র জানিয়েছে, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির একটি ব্লেড নেটওয়ার্কে ১০ লাখ ব্যবহারকারীকে একই সঙ্গে দ্রুত গতিসম্পন্ন ভয়েস এবং নন-ভয়েস সুবিধা দেওয়া সম্ভব।
উল্লেখ্য, বিশ্বজুড়ে মোবাইল ফোনভিত্তিক নেটওয়ার্ক স্থাপনে এরিকসন এবং হুয়াউয়ের সুখ্যাতি আছে। আর এ অত্যাধুনিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এয়ারটেল তার বাংলাদেশি ভোক্তাদের উপহার দেবে সুস্পষ্ট এবং নিরবিচ্ছিন্ন কথা বলার সুবিধা।
অন্যদিকে দেবে মোবাইল ফোনে দ্রুতগতিসম্পন্ন এবং অবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট ব্যবহারের নতুন অভিজ্ঞতা। হুয়াউয়ে এবং এরিকসন এ দু’সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এয়ারটেলের চুক্তির আওতায় থাকছে মাইক্রোওয়েভ মোবাইল ব্ল্যাকহোল, পরিবেশবান্ধব নেটওয়ার্ক ডিজাইন, সার্ভিস প্ল্যানিং, ইমপ্লিমেন্টেশন এবং প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট।
এছাড়াও অত্যাধুনিক বিজনেস অ্যাপলিকেশনের ব্যবহার বাড়ানো, আরও বেশি বিনোদন উপকরণ ছাড়াও গ্রামাঞ্চলের পুরো এলাকাজুড়ে মোবাইল ফোন সেবার সার্বিক সুবিধা নিশ্চিত করতেই এয়ারটেল এরই মধ্যে কারিগরি প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে।
আর সে কারণেই অতুল বিন্দালের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো, আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি। তবে ঠিক এ মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে আনুষ্ঠানিক উন্মোচনের কথা বলতে পারছি না। তবে এ সময়টা খুব বেশি হলে ক’সপ্তাহ হতে পারে।
বাংলানিউজকে অতুল বিন্দাল জানান, বাংলাদেশে প্রকৃত মোবাইল ফোন ভোক্তাদের জন্য বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির থ্রিজি (থার্ড জেনারেশন) নেটওয়ার্ক স্থাপনে তারা কাজ শুরু করেছে।
বাংলাদেশে ওয়ারিদ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও ক্রিস টবিট জানান, বাংলাদেশে ভয়েস এবং নন-ভয়েস সেবার সর্বাধুনিক সুবিধা নিশ্চিত করতে তারা বিখ্যাত মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠাকারী প্রতিষ্ঠান এরিকসন এবং হুয়াউয়ের সঙ্গে কারিগরি চুক্তি করেছে। গত আট মাসজুড়ে তারা দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক স্থাপনে কাজ করেছে।
এরই মধ্যে দেশের অন্য পাঁচ অপারেটরের মধ্যে চারটি মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে আন্তঃচুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে টবিক জানান।
অন্যদিকে হুয়াউয়ের সিইও ম্যাক্স ইয়াং বলেন, বিশ্বমানের একটি মোবাইল ফোনভিত্তিক নেটওয়ার্ক গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে সত্যিকারের ভোক্তা পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে যাচ্ছে তারা। তবে এয়ারটেল, এরিকসন আর হুয়াউয়ের সমন্বয়ে বাংলাদেশ একটি অত্যাধুনিক মোবাইল ফোন সেবাভুক্ত দেশের কাতারে চলে আসবে। ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রাপথে এ সম্ভাবনা নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।
উল্লেখ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার ১৯টি দেশে টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ভারতী এয়ারটেল ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় সফলভাবে এ অত্যাধুনিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করছে। ভারতী এয়ারটেল বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোন, ফিক্সড লাইন, ব্রডব্যান্ড, আইপিটিভি, ডিটিএইচভিত্তিক সেবা দিয়ে থাকে। এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত এর গ্রাহক সংখ্যা ১৮ কোটি ৮০ লাখ ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশে বিশ্বের সর্বাধুনিক মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা নিয়ে ভারতের জনপ্রিয় মোবাইল অপারেটর অচিরেই তার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে বলে জানালেন বাংলাদেশে সফরকারী এয়ারটেল মোবাইল সার্ভিসেস এর প্রেসিডেন্ট অতুল মোহন বিন্দাল। ফলে ভারতী এয়ারটেল বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং অপেক্ষাকৃত স্বল্প খরচে সেবা নিশ্চিত করতে সামর্থ্য হবে বলে তারা বিশ্বাস করেন।
এ মুহূর্তে দেশজুড়ে বিশ্বমানের মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনে এরিকসন এবং হুয়াউয়ের সঙ্গে ভারতীর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এয়ারটেলের চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। আর এ অত্যাধুনিক মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজও এরই মধ্যে প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এ সূত্রে অচিরেই বাংলাদেশে ওয়ারিদ তার ব্র্যান্ড নেম বদলে ‘এয়ারটেল’ নামে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে এয়ারটেলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হলে এ সংখ্যা দ্রুতই বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এ মুর্হূতে বাংলাদেশে ওয়ারিদের ৩৫ লাখ গ্রাহক আছে।
ঢাকায় ৭ অক্টোবর সাংবাদিক সম্মেলনে এ মোবাইল নেটওয়ার্ক চুক্তির কথা জানান ওয়ারিদ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও ক্রিস টবিট। এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হুয়াউইয়ের সিইও ম্যাক্স ইয়াং, এরিকসন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও কান্ট্রি ম্যানেজার হেনরিক নেলসন এবং ভারতী এয়ারটেলের সাউথ এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের প্রধান অরুণ বানসাল উপস্থিত ছিলেন
সুত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি