সাইদুর রহমান
এতটুকু সময়ে কম দেখিনি। সম্মুখিন হয়েছি অনেক কণ্টকাকীর্ন পথের। ঢুকেছি অনেক বাঁধার জালে। কিন্ত কখনো মন বিগড়ে যায়নি। মনকে সবসময় সাহসের জালে আটকা রেখেছি। ফন্দি এটেছি বিভিন্ন কৌশলের। বীরের বেশে পেড়িয়েছি বহুত কন্টকময় পথ। গ্রামের সেই বন্দিশালায় পড়ার মুহুর্তেও মনকে জানালা দিয়ে বাতাসের নিমন্তনে মিশতে দিয়েছি। সুযোগ দেয়েছি বাধন গড়ার। আসলে ঠিক তাই হযেছে। বাঁধান গড়েেছে তবে সেটা আমারে দিক থেকে ভাসাই রেখেছি। জন্মেছিলুম সেই লোমহর্ষক বন্যার অনেক পর। সে ব্ন্যা আমার নিজ দর্পনে দেখিনি। তবে মায়ের মুখের শোনা কথা পুষেছি অন্তরে। আর আজ সরল রেখায় বক্রব্যাথা আমার হৃদয়ের মাঝে শোরগোল বাঁধাচ্ছে। তবে সে শোরগোল কাউকে সঁপে দেবার নয়। মনের মাঝে বার বার শেলের মত আগাধ হানছে। ধ্বংস করছে ছিড়ছে বুক। ঝড়ছে নয়নাশ্রু। কি যে হয়েছে কোন উত্তর খুজে পাচ্ছি না।
তবে প্রশ্ন আছে। এ কেন? ক্লাস সিক্স থেকে জীবনটা ছিল প্রাইভেটময়। সূর্যকে ফাঁকি দিযে ঘুম থেকে জাগ্রত হতাম। মনটা বেশ প্রফূল্ল থাকত। তখন বয়স তেমন একটা বেশি না হলেও বটগাছের তলায় যাওয়া শিখেছি। গোলাপের ফুলকে পছন্দ করতে শিখেছি। ভালবাসতে শিখেছি আপন হৃদয়ে। সময়টা দুর্বার গতিতে মিতালীর আভাসে ভালই লাগত। জীবনের মধ্যে কারও অঙ্কুরোদগম ঘটতেছে। আমিও সেই সূচনালগ্নকে ভালবাসার আস্তরণে বেড়ে উঠতে দিয়েছি। অস্তে অস্তে বড় হয়ে পাঁপড়ি ছড়াতে লাগল। আমিও সে পাপড়ির মাঝে নিজেকে জড়িয়ে নিলাম। জীবনের নয়া অতিথীকে স্বাগত জানাতে ভালই তো লাগল। একেক দিনকে মনে হতে লাগল স্বল্প সময়। পৃথিবীর সব কিছুই তখন ভাল লাগতে শুরু হল। মনে হয় সবই আপন কুটিরের অধিবাসী। তাইতো কবিতার ছন্দে বলে বেড়াই....
নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটলে
সব কিছু হয় রঙ্গিন
জীবনে তখন বেজে ওঠে ঢেউ
হয়ে যায় সৌখিন
তাই এহেন মূহুর্ত আমার জন্য আনন্দের বান নিয়ে আসল। আমিও সে বানে সাতার কেটে সময়গুলো ভালই অতিবাহিত করতে লাগলাম। সময়ের চলন্ত মশাল ধরে সামনে এগুতে থাকি। গোলাপ দিন দিন তার রঙ্গিন পাপড়ির মায়াবী সতেজ পাতায় আকর্ষণের বাধনে আটকাতে লাগল। তবে সে মূহুর্তটাও ছিল আকর্ষনে আটকে যাবার। কিন্তু আমার মতে একটু ভিন্নতা রেখেছি। অবশ্য বুঝতে দে্ইনি। মনে ঘাটতি থাকলেও উপস্থিত ভালবাসায় পাপড়ি তার সতেজতা ফিরে পেত। পরে এমন একটা সময় অাসতে লাগল যে, পাপড়ি ঝরে যাবার উপক্রম হতে চলেছে। সে সতেজতা হারিয়ে শিকরবিহীন তরুর মত ঢলে পড়তে শুরু করেছিল কিন্তু আমি পরিনি। আমি বিগড়ে যাইনি। আমি মনকে পাষাণ রাখতে সক্ষম হয়ছিলাম। কিন্তু আজ একি! পিপাসার তৃষ্ণায় শত শত ক্রোশ মাইল অতিক্রম করে গঞ্জ ছেড়ে এসেছি শহুরে হতে। গোলাপের পাপড়ি খুবই পরিচিত। তবে এ পাপড়ি কেন জানি আলাদা রং ছড়ায়। তাই এই অল্প পরিচয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি সহস্র পথের চৌমাথায় । তবে ভাবিনি যে, এ পাপড়ি শিকল বিহীন পা বাধা, অন্যের বাগানে সুবাস ছড়ায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪