চাকরী হয়েছে এ খবর শোনার পর থেকে একবার দেখা করার জন্য পাগল হয়ে যায় লিলি। ফোনে তার একটাই আবদার, কালই দেখা করবে? খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোমাকে? দুদিন পরেই যোগদান। নিজের একটা প্রস্তুতির ব্যাপার আছে। কিন্তু মহারানী মানবেন না!! নিজের ব্যাগটা পর্যন্ত গোছাতে পারলাম না। একেবারে সকালে ঘুম থেকে উঠে দু-চারটে কাপড় ব্যাগে ভরে সোজা বাসস্ট্যান্ড। বাবাকে পর্যন্ত বলা হয়নি বাড়ি আসছি। বাসে উঠে বাবাকে একটা ফোন, বাবা আমি বাড়ি আসছি। শুনে বাবা তো অগ্নিশর্মা !!?? আবার বাড়ি আসার কি দরকার? অনেকটা কাচুমাচু করে ভয়ে বললাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ফেলে এসেছি। শুনে রাগে বাবা ফোন রেখে দেয়। আমার রুমে গিয়ে তসনস করে খুঁজতে থাকে। এরই মধ্যে ঘণ্টা ছয় পার হয়। আবার বাবা ফোন করে, কই? তোমার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি তো কোথাও খুঁজে পেলাম না? শুনে আমিতো ভ্যাবাচ্যাকা!!! বললাম, সরি বাবা জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি খানা ব্যাগের ভেতরেই একপাশে ছিলো। আমার সানগ্লাসটা ব্যাগ থেকে বের করতে গিয়ে পেলাম। বাবা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে!!! শুধু বলল, এখন কোথায়? বললাম, বাবা আমি এখন রংপুর পার্ক মোড়ের কাছাকাছি।
এদিকে কাউনিয়া জংশনের রেলিং ধরে লিলি আমার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে। আমি এক অদম্য অস্থিরতায় চলন্ত বাসের ভেতর শুধু লিলির গন্তব্যের দিকে তাকিয়ে থাকি। বাস থেকে নেমে দৌড়ে চলি স্টেশনের দিকে। গিয়ে লিলির দিকে চোখ পড়তেই অস্থিরতায় বিরক্ত লিলি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে মুহূর্তেই প্রশান্তির উন্মাদনায় ভরে ওঠে। আমার উসকো খুসকো চুল আর হাঁপানো দেখে একটা মিষ্টি ধমক দিয়ে বলে , সার্টের বোতাম ঠিক করো? এরপর একটা মুখটেপা হাসি দিয়ে বলে, পাগল একটা!!! তারপর লিলির নরম কোমল হাতটা ধরে রেলের লাইন দিয়ে কেবলই হাঁটতে থাকি।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৯