মানিব্যাগ চেক করে দেখলাম টাকা আছে শ’তিনেক! ফারাহ একবার অভিযোগ করছিলো বিয়ের সময় তাকে একটা হাত ঘড়ি পর্যন্ত দেইনি! অনেকদিন ধরে ভাবতেছি একটা হাত ঘড়ি কিনে দিবো। এই ভ্যালেন্টাইনস ডে ভালো একটা সুযোগ। কিন্তু টাকা-পয়সা বেশি নাই। অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে দেয়া যায়, কিন্তু সেটি করলে মাসের বাকি দিনগুলা চলার জন্য ফারাহ’র বাপের শরনাপন্ন হতে হবে। ফারাহও রেগে যাবে- মাস চলার টাকা নাই, ঘড়ি কিনতে কে বলছিলো!
সন্ধ্যায় ফুলের দোকানে গিয়ে গোলাপ আর অন্যান্য ফুল দিয়ে একটা ষ্টিক বানিয়ে নিলাম। আহ্, ভালোবাসা!
ষ্টিকটা ফারাহ না দেখে মতো লুকিয়ে রেখে বাসায় ঢুকলাম। বাথরুমে হাত-মুখ ধুতে ধুতে মিন্টুর খোঁজ নিলাম। মিন্টু ওর নতুন গার্লফ্রেন্ডকে হীরার লকেট কিনে দিছে।
ফারাহ রুম থেকে বললো, “জানো, আমার কাজিনকে ওর হাসবেন্ড ভ্যালেন্টাইনস ডে উপলক্ষ্যে গোল্ড এর নেকলেস কিনে দিছে!”
আমার মাথায় ঝিম ধরলো। সে বলে যাচ্ছে তার কাজিন, বান্ধবী এদের জামাইরা বিভিন্ন ওকেশন কি কি গিফট দেয়! তারপর সে বললো, “আর কতোগুলা টল্টু হাসবেন্ড আছে বউকে একটা-দুইটা গোলাপ ধরিয়ে দিয়ে ভালোবাসার আঁতলামি করে, তারচেয়ে তোমার মতো কিছু না দিয়ে ভালোবাসি বলা অনেক ভালো”!
দমবন্ধ হয়ে যাওয়া সময় কাটতে কিছুক্ষন লাগলো। জ্যাকেটের ভেতর থেকে ষ্টিকটা বের করে কি করবো চিন্তা করতে করতে বাথরুমের ছোট্ট জানালা দিয়ে ষ্টিকটা ফেলে দিলাম। মিন্টুর গার্লফ্রেন্ড তার বান্ধবীদের হীরার লকেট দেখাচ্ছে। আমি মনে মনে বললাম- হায় ভালোবাসা!
বাথরুম থেকে বের হয়ে ফারাহকে বললাম গ্রামের বাড়ি যাবো। দুই একদিন থেকে আসি।
(হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে)