ফাইজার মোবাইলটা হটাত করে ভাইব্রেশানে কাপিয়ে দিয়ে যায় বালিশটা, অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা এসএমএস-
ভোর সাড়ে ৬টায় মর্নিং ওয়াকে যাবো সিআরবি হিলের কাছে, অনেক দিন তোকে নিয়ে হাটতে বের হই না, যাবি?
নাহ ফাইজা চিনতে পারে না নাম্বারটা কার, নতুন হ্যান্ডসেট নিবার পর থেকে আগের ফোনের নাম্বারগুলো সেভ করা হয়নি, অপরিচিত নাম্বার থেকে এসএমএস আসলেও কথাগুলো মনে হচ্ছে কত কাছের কেউ পাঠালো। এরকম চিন্তা আসার কারনটা কি?
না এরকম তো হবার কথা না, ও তো আরো ৬ বছর আগেই চলে গিয়েছে, লাইফের হিসাব নিকাশ না চুকিয়ে। এভাবে কোনদিন আমাকে এসএমএস দিবে-হতেই পারে না আশাও করি না। আবার এসএমএস টা দেখে ভাবে গিয়ে দেখবো কি সকালে কে সে? ভাবছে এসএমএস এর উত্তর কি দিব? বলবো নাকি- বল কই আসবো, নাকি সিআরবিতেই থাকবো? কিসব চিন্তা ধুর এর চেয়ে ঘুমিয়ে নি, সাজ সকালে নামাজে উঠলে দেখবো নে।
নামাজের জন্যে উঠে দেখে আরেকটা এসএমএস!!
একই নাম্বার।
ভোরেই ঘর থেকে বের হয় একটা চাদর নিয়ে, কুয়াশাও কম না। ঠান্ডাও পড়ছে অনেক। রাস্তার ধারে মানুষজন কিভাবে ঘুমায় দেখে নিয়ে মনের অজান্তেই ভাবে আল্লাহ আমাকে আর কিছু না দিক ২ জন মানুষ দিয়েছেন, বাবা আর মা। শুকরিয়া।
ফাইজাঃ তুমি?
আমারো সেই প্রশ্ন তুমি কেন?¬
ফাইজাঃ এসএমএস কি তুমিই দিয়েছো?
নাহ কিসের এসএমএস? ৬ বছর পর এভাবে সাজ সকালে দেখা হবে ভাবিনি, তো এসএমএস এর কথা বলছিলে কিসের এসএমএস?
ফাইজাঃ নাহ এমনি।
তুমি এত সকালে এখানে কি করছ?
ফাইজাঃ কিছুই না, এমনেই বের হলাম হাটতে, তোমাকে এসব আমি বলছি কেন?
আমি কি জানি।
ফাইজাঃ তুমি কেন বের হলে এত সকালে? কোনদিন তো ১২টার আগে ঘুম ভাংগ তো না তোমার?
তুমি দেখি অনেক কিছুই মনে রেখেছো? জিজ্ঞেস করলে না আমি কেন চট্রগ্রাম এলাম? আগে তো সব সময় জিজ্ঞেস করতে।
ফাইজাঃ হুম। কেন এসেছো?
সেটা জেনে কি আর করবা?
ফাইজাঃ আমি বাসায় যাবো।
তুমি এখনো সেই আগের মতই আছো। সেই আগের মতই আমাকে বুঝাতে চাইলে তোমাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে আসি।
ফাইজাঃ কেন? আমি এমন কোন চিন্তা করি নাই, আমি অনেক বদলে গিয়েছি, আগের ফাইজা এখন আর সেই ফাইজা নেই। চলে তো গিয়েছিলে, এতবার নক করলাম, ফোন ধরনি একটিবার, এতবার এসএমএস দিলাম একটা এসএমএস এর উত্তর দিলে না ফেইসবুকে মেসেজ বক্সটা চেক করো, টাইমলাইনে দেখো কত বার তোমাকে খুঁজে পেতে মেসেজ দিয়েছি, একটাবার কোন খবর নিলে না বেঁচে আছি নাকি মরে গিয়েছি? কতবার নক করলে তোমাকে পাওয়া যাবে সেই চিন্তায় দিন গুনেছি, অনেক ঘৃণা কর আমাকে তাই বুঝি এতই ঘৃণা করো জানতাম না? তোমাকে সেই সময় ডিস্টার্ব করতাম কারন আমার হিসাব নিকাশ মিলে নাই তখন।
এক নাগারে কথা গুলো শুনলাম। তাকিয়ে রইলাম তার দিকে। রেগে গেলে ফাইজাকে অন্যরকম সুন্দর লাগে সেটা আসলেই অনেকদিন মিস করেছি।
আর কিছু
চল পরোটা দিয়ে ভিজিয়ে চা খাবো।
এই ফাইজা উঠ, ফাইজার মা ডেকে বলে, আজ এত বেলা করে ঘুমালে চলবে নাকি?
আজ সন্ধ্যায় ফাইজার বিয়ে।