আমার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা-
"সাভার ট্রাজেডি" রানা প্লাজা ভবন ধ্বংসের ১৭ দিন পর রেশমার জীবিত উদ্ধার? এই ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও অবাস্তব এবং মিথ্যা ও ধোঁকাবাজি। এই ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্দিষ্ট ১টা গ্রুপ বা কিছু অসৎ কর্মকর্তা সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে অপমান করেছে। ধোঁকা দিয়ে এদেশের সকল মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে। এই ঘটনার মাধ্যমে রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় আহত, নিহত, ক্ষতিগ্রস্ত সকল শ্রমিক এবং রানা প্লাজার উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণকারী সকল সাধারণ মানুষকে হেয় করা হয়েছে। বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষদের "ইমোশনালই ব্ল্যাকমেল" করা হয়েছে এবং আল্লাহর মহান বন্ধু যুগের ইমাম বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃআঃ) হুজুরের অলৌকিক কারামত জাতির নিকট আড়াল করা হয়েছে।
আমি কিছু সূত্র বা প্রমাণ দিচ্ছি- যা পর্যালোচনা করলে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হবে, রেশমা উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও অবাস্তব এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোঁকাবাজি।
১ম সূত্রঃ ২৪শে এপ্রিল বুধবার ২০১৩ খ্রিঃ সকাল ৯টার পূর্বে ৯তলা রানা প্লাজা ভবনটি হঠাৎ কাপনি দিয়ে বিকট শব্দে ১০-১২ সেকেন্ডের ভিতর ধ্বসে পরে। রানা প্লাজার গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে প্রবেশের প্রধান গেট সাধারণত সকাল ৮টার পূর্বে খোলা হতো। কারণ সকাল ৮টা থেকে রানা প্লাজার গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের কাজ শুরু করার সময় নির্ধারিত। রানা প্লাজার গার্মেন্টসগুলোতে শ্রমিকদের যাতায়াতের সিঁড়ি পূর্ব দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। রানা প্লাজার মার্কেটে যাতায়াতের সিঁড়ি আলাদা, রানা প্লাজার গার্মেন্টসগুলোতে যাতায়াতের সিঁড়ি আলাদা এবং রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশের পথও আলাদা। আর রানা প্লাজার মার্কেটে যাতায়াতের প্রধান গেট যা পশ্চিম পাশে অবস্থিত, সেটি বন্ধের দিন ছাড়া প্রতিদিন খোলা হতো সকাল ১০টায়। তাই রানা প্লাজার মার্কেটের দোকানগুলো সকাল ১০টার পরে খোলা হয়। রানা প্লাজার মার্কেটের অপর গেটটি মার্কেটের পিছন দিকে পূর্ব পাশে অবস্থিত, যেটি সর্বসাধারণের ব্যাবহারের জন্য নয়, যেটি অধিকাংশ সময় তালা লাগানো থাকতো। সুতরাং রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশের ৩টি পথ যা উপরের সিঁড়ির সাথে সংযুক্ত, সকাল ৯টার পূর্বে তখন খোলা রাখার প্রশ্নই আসে না। আর এখানে তো সর্ব সাধারণের প্রবেশাধিকারই নেই। তাহলে রেশমা কি করে ৩য় তলা থেকে ওখানে আসলো? আসুন আরেকটু গভীরে যাই......... (রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশের মোট ৪টি পথ আছে, ১ম টি প্রধান গেট যা রানা প্লাজার সামনে পশ্চিম দক্ষিণ পাশে অবস্থিত, সেই পথ দিয়ে গাড়ী পার্কিং করা হয়। অন্য ৩টি পথ সিঁড়ির সাথে সংযুক্ত, যা প্রায় সময় কেচিগেটে তালা লাগানো থাকে। কারণ রানার হেড অফিস, তার দেহরক্ষী, তার দলীয় ক্যাডার, পুল জোন, দামী গাড়ী ইত্যাদি সব এখানেই। এখানে সর্ব সাধারণের প্রবেশাধিকার নেই। শুধু পশ্চিম পাশে সামনের দিকে কিছু জায়গা ছিল নামাজের জন্য। যা শুধুমাত্র দোকান মালিকদের জন্য। ৩টি পথের ২টি পূর্ব পাশে সিঁড়ির সাথে সংযুক্ত, ১টি পূর্ব দক্ষিণ পাশে সিঁড়ির সাথে সংযুক্ত, অপরটি পূর্ব উত্তর পাশে সিঁড়ির সাথে সংযুক্ত। ৩য় পথটি রানা প্লাজার মাঝের দিকে উত্তর পাশে সিঁড়ির সাথে সংযুক্ত।)
রানা প্লাজার মার্কেটে যাতায়াতের সিঁড়ির সাথে, রানা প্লাজার গার্মেন্টসগুলোতে যাতায়াতের সিঁড়ির কোন সম্পর্ক নাই। অর্থাৎ রানা প্লাজার মার্কেটে যাতায়াতের সিঁড়ি আলাদা, রানা প্লাজার গার্মেন্টসগুলোতে যাতায়াতের সিঁড়ি আলাদা। রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশের পথও আলাদা। আর রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশাধিকার তো সর্ব সাধারণের নেই। রানার দলীয় ক্যাডারদের ভয়ে কোন শ্রমিক ভুলেও ওখানে প্রবেশ করতে চাইতো না। রানা প্লাজার ৩য় তলা থেকে ৮ম তলা পর্যন্ত গার্মেন্টস কারখানা। রানা প্লাজার গার্মেন্টস কারখানা থেকে নিচে নামার সিঁড়ি মোট ৩টি। দুর্ঘটনার দিন এই ৩টি সিঁড়ির যেকোনো ১টি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসলেই তো আপনি নিরাপদ? আবার কোন দুঃখে রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশ করবেন? রানা প্লাজার গার্মেন্টসগুলোতে শ্রমিকদের যাতায়াতের সিঁড়ি পূর্ব দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। প্রতিদিন এই সিঁড়িটি গার্মেন্টস শ্রমিকরা ব্যবহার করতো। পূর্ব উত্তর পাশের অপর সিঁড়িটি মাঝেমাঝে গার্মেন্টস শ্রমিকরা ব্যবহার করতে পারতো। (যেমনঃ যখন ফায়ার ট্রেনিং হতো) শুধু শনিবার গার্মেন্টস মালিকরাও এই ২টি সিঁড়ি ব্যবহার করতে বাধ্য ছিল। কারণ শনিবার রানা প্লাজার মার্কেটগুলোর সাপ্তাহিক বন্ধের দিন।
রানা প্লাজার গার্মেন্টস মালিকরা, বায়ার ও শুধুমাত্র অফিসাররা মাঝের দিকে উত্তর পাশের সিঁড়ি ও ভি আই পি গেট দিয়ে যাতায়াত করতো এবং এই সিঁড়িটি দিয়ে বের হলে রানা প্লাজার মার্কেটের ভিতর দিয়ে প্রধান সিঁড়ি বা গেট দিয়ে বের হয়ে নিচে আসা যায়। (যদিও সকাল ১০টার আগে রানা প্লাজার মার্কেটে প্রবেশের প্রধান গেট খোলা হয় না। তার পাশে ছোট ১টা গেট খোলা হয়, যা দিয়ে একসাথে ২জন বের হওয়া যায়।) নিচে আসলেই তো আপনি মুক্ত? আবার কেন রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশ করবেন? রানা প্লাজার ৩য় তলার গার্মেন্টসের ভি আই পি গেটে সবসময় কড়া গার্ড দেয়া হতো। এই গেট দিয়ে শ্রমিকদের যাতায়াতের কোন অধিকার নেই। নিউ ওয়েভ বটমস লিঃ গার্মেন্টসের সিকিউরিটি গার্ডদের লাশ ৩য় তলার এই গেটের কাছ থেকেই পাওয়া গেছে। তো যা হোক... আপনি সিকিউরিটি গার্ডদের দৃষ্টি এড়িয়ে নিচে আসলেন, এসে আপনি মার্কেটের ভিতর দিয়ে বাইরে বের না হয়ে, "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশ করবেন কিভাবে? কেচিগেট তো তালা লাগানো। দূর্ঘটনার দিন সকাল ৯টার পূর্বে শুধু আপনার জন্য কি কেচিগেট খুলে রাখা হবে?
২য় সুত্রঃ রানা প্লাজা মাত্র ১০-১২ সেকেন্ডের ভিতরে সম্পূর্ণ ৯তলা ভবন ধ্বসে পরে। আমি ৩য় তলার নিউ ওয়েভ বটমস লিঃ গার্মেন্টস কারখানার সুইং সেকশনের এ লাইনের কিউ সি হিসেবে আউটপুট ইন্সপেকশন টেবিলে কাজে ব্যাস্ত ছিলাম। হঠাৎ কম্পন অনুভব করলাম এবং ভয় পেয়ে এ ও বি লাইনের মাঝ দিয়ে দৌড় দিলাম। ১০-১২ সেকেন্ড দৌড়ানোর পর আমার চোখের সামনে মাত্র ৩-৫ সেকেন্ডের ভিতর চোখের পলকে ৪র্থ তলার ছাদ ৩য় তলার মেঝের সাথে মিশে যায়। ৩য় তলার সুইং সেকশন থেকে সাভাবিকভাবে দৌড় দিয়ে নিচে নামতে (যদি সিঁড়িতে ও গেটে শ্রমিকদের প্রচণ্ড ভিড় না থাকে) প্রায় ২ মিনিট সময় লাগে। সম্পূর্ণ ৯তলা ভবনটি মাত্র ১০-১২ সেকেন্ডের ভিতরে ধ্বসে পড়েছে। রানা প্লাজার গার্মেন্টস কারখানা থেকে নিচে নামার সিঁড়ি মোট ৩টি এবং দুর্ঘটনার দিন সিঁড়িগুলোতে তো প্রচণ্ড ভিড়। এই ৩টি সিঁড়ির যেকোনো ১টি সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসলেই তো আপনি নিরাপদ ও মুক্ত? আবার কোন স্বার্থে রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশ করবেন? সকল শ্রমিকরা যেখানে নিচে নামার পর্যাপ্ত সময় পায়নি, সেখানে আপনি ভিড় ঠেলে দ্রুত নিচে নেমে নিরাপদ স্থানে না যেয়ে, "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টের" তালা ভেঙে প্রবেশ করে আশ্রয় নিলেন একদম সামনের দিকে পশ্চিম পাশের কোনায় নামাজ পড়ার স্থানে! যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও অবাস্তব। যেখানে রানার দলীয় ক্যাডারদের ভয়ে কোন শ্রমিক ভুলেও ওখানে প্রবেশ করতে চাইতো না। দুর্ঘটনার দিন সকল শ্রমিকদের ভিতরে প্রচণ্ড আতঙ্ক ও ভয়, কিভাবে তারা নিরাপদ স্থানে যাবে? সেখানে আপনি সকল ভয়কে জয় করে "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টের" তালা ভেঙে ওখানে প্রবেশ করবেন কেন? আচ্ছা আপনার জন্য তালা খুলেই রাখলাম! আপনি যেখানে নিচে নামতে পেরেছেন, আপনি নিরাপদ ও মুক্ত। আপনি নিজেকে নিরাপদ স্থানে না নিয়ে, কেন "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" প্রবেশ করবেন? কেন? এটা কি বাস্তব? জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন? আপনিই বলুন?
(দুঃখে মীরের ১টি গান মনে পরে- ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে? আগে তো নিয়ে আয় তালা? "অছম ছালা" "অছম ছালা" "অছম ছালা")
সুতরাং কখন? কোন সময়? কতো সেকেন্ডের ভিতরে সম্পূর্ণ ৯তলা ভবনটি ধ্বসে পরে? এবং রানা প্লাজার গার্মেন্টস কারখানার আয়তন কতো? কখন খোলে? গার্মেন্টস কারখানা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে কতো মিনিট লাগে? কোন কোন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামা যায়? কোন সিঁড়ি দিয়ে নামতে কতো সময় লাগে? কোন সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আবার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" কি নামা যায়? রানা প্লাজার মার্কেটের প্রধান গেট কখন খোলে? "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" কি কোন ফিটিং থ্রি পিসের দোকান ছিল? "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" কি কোন ফাস্টফুডের দোকান ছিল? "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" নামাজ পরার স্থানে কি ফিটিং থ্রি পিসের দোকান থাকে? "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টে" নামাজ পরার স্থানে কি ফাস্টফুডের দোকান থাকে? রেশমাকে কোন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়? আসলে রেশমাকে যে স্থান থেকে উদ্ধার করা হয়, তার আশেপাশে ও উপর নিচে ৩০ গজের ভিতরে কি কোন ফিটিং থ্রি পিস বা ফাস্টফুডের দোকান ছিল?
রানা প্লাজার "আন্ডার গ্রাউন্ডের বেজমেন্টের" ফ্লোরের বিন্যাস, রানা প্লাজার মার্কেটের ১ম তলা ও ২য় তলার ফ্লোরের বিন্যাস, রানা প্লাজার ৩য় তলার গার্মেন্টস কারখানার ফ্লোরের বিন্যাস, রানা প্লাজার সিঁড়িগুলোর বিন্যাস পর্যালোচনা করলে নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয়, ১৭ দিন পর রেশমা উদ্ধার অভিযান সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও অবাস্তব এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ধোঁকাবাজি।
৩য় সুত্রঃ আমি ১৫ই মে বুধবার সাভার সি এম এইচে যেয়ে, সাভার সি এম এইচ প্রধান লেঃ কর্নেলঃ শরীফ স্যারের সাথে দেখা করে, তার অনুমতি নিয়ে আই সি ইউতে যেয়ে রেশমার সাথে দেখা করি। তিনি ঐখানে আমাকে ১টি হুইল চেয়ারে বসার ব্যাবস্থা করে দেন। (যেহেতু আমার ডান পায়ের ৪টি হাড় ভেঙে গেছে, পায়ের বেইজের হাড় বাঁকা হয়ে গেছে, ডান পায়ে তখন প্লাস্টার করা ছিল।) শরীফ স্যারও আমাদের সাথে ছিলেন। আই সি ইউতে ভিতরে যেয়ে দেখি শুধু আর্মি আর আর্মি। শরীফ স্যার ভিতরে যেয়ে রেশমাকে ডাক দিলেন, রেশমা সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় হেঁটে হেঁটে আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালো। আর আমি হুইল চেয়ারে বসা। সেখানে স্যারের নির্দেশে আরেক আর্মি রেশমার সাথে আমাদের কিছু ছবি তোলে। রেশমার সাথে কথা বললাম। তাকে দেখে আমার নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। কারণ মাত্র ৫ দিনে আমার নিজের শরীরে যে পরিবর্তন দেখেছি, তার মাঝে আমি তা দেখিনি। আমার পায়ের তলা থেকে মাথার চান্দি পর্যন্ত সমস্ত শরীরের চামড়া মরে গিয়ে নতুন চামড়া উঠেছে। সে ১৭ দিন পর বের হয়েছে, ১০ই মে শুক্রবার বিকালে। সেদিন ছিল ১৫ই মে বুধবার দুপুরে তার সাথে দেখা করি। তার মুখ ও হাতের চামড়া সজীব ও টানটান। মাত্র ৫ দিনে আমার মাথার চুল, দাঁড়ি, হাতের নখ এত বড় হয়ে ছিল যে, নিজের ছবি দেখে নিজেকে চিনতে আমারই কষ্ট হচ্ছিলো। মাত্র ৫ দিনে আমার হাতের নখ প্রায় ১ সি এম লম্বা হয়েছিল ও নখের ভিতরে প্রচুর বালি, ময়লা ছিল। অথচ ১৭ দিন পরও রেশমার হাতের নখ কাঁটা ও পরিষ্কার ছিল, যা মিডিয়ার কল্যাণে আপনারা সবাই তা দেখেছেন। এতে কি প্রমাণিত হয় না, রেশমা ১৭ দিন ধ্বংস স্তূপের নিচে ছিল না!
৪র্থ সুত্রঃ আমার দুঃখ আমি সারাজীবন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সমর্থন করতাম। যখন সাভার কলেজে পরতাম ছাত্রলীগের মিছিল করতাম। যা হোক... আমাকে ৫ দিন বা ১০০ ঘণ্টা পর ২৮শে এপ্রিল রবিবার ২০১৩ খ্রিঃ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উদ্ধার করা হয় এবং সর্বশেষ জীবিত ব্যাক্তির উদ্ধারের সংবাদ তাৎক্ষণিক ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে প্রচার করা হয়। অতঃপর আমাকে আম্বুলেন্সে করে সাভার সি এম এইচে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে আই সি ইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ১২টার পর ৩য় তলার সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়। বাকী ২ দিন এখানেই ছিলাম। ২৯শে এপ্রিল সোমবার দেশের প্রায় সকল সংবাদপত্র ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে সর্বশেষ জীবিত ব্যাক্তির উদ্ধারের সংবাদ প্রচার করা হয়, যা ১৬ দিন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এই ১৬ দিন কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোন সংবাদই দেখেননি? আর ২৯শে এপ্রিল সোমবার সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার সি এম এইচে আসেন। আমিও তখন সাভার সি এম এইচেই ছিলাম। কই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তো আমার সাথে দেখা করলেন না! কেনই বা করবেন? আমি তো আর উদ্ধার হওয়ার পর, "শেখ হাসিনা" "শেখ হাসিনা" জপতে পারি নাই। আমাকে ৩০শে এপ্রিল মঙ্গলবার বিকালে সাভার সি এম এইচ থেকে একপ্রকার জোর করেই রিলিজ করে দেয়া হয়। রানা প্লাজার ভবন ধবসের পর মোট ২৪৩৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আমিই হতভাগ্য সর্বশেষ ২৪৩৭তম ব্যাক্তি। ১৬ দিন পর্যন্ত তো সর্বশেষ জীবিত ব্যাক্তি ছিলাম। না কি? কই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ দিনের মধ্যে ১বারও সর্বশেষ জীবিত ব্যাক্তির খোঁজ নেন নাই। আজ অবধি আমার খোঁজ নেন নাই। এতে কি কিছুই প্রমাণিত হয় না? হায় বাংলাদেশ! হায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী! হায় জাতির জনকের সম্মানিত কন্যা! হায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা! হায় বাংলাদেশের জাগ্রত বিবেক ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদপত্রের সাংবাদিকগণ! আজকে এদেশে ৪২ বছর আগের স্বাধীনতা যুদ্ধাপরাধী নিয়ে কত কি ঘটছে? বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে ধোঁকা দেয়া, ১৭ দিনের মিথ্যা নাটক বানানো কি অপরাধ নয়? এই ঘটনার মাধ্যমে রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় আহত, নিহত, ক্ষতিগ্রস্ত সকল শ্রমিক এবং রানা প্লাজার উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণকারী সকল সাধারণ মানুষকে হেয় করা হয়েছে। সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে অপমান করা হয়েছে এবং ধোঁকা দিয়ে এদেশের সকল মানুষকে বোকা বানানো হয়েছে। সারাবিশ্ব থেকে বাংলাদেশে বিপুল অর্থ সাহায্য এসেছে অথচ ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকরা কি তা পেয়েছে? আমি নিজেই পাইনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনা বাহিনীর মাধ্যমে সি এম এইচে থাকা অবস্থায় আমাকে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় কষ্ট করলাম আমরা আর পুরস্কার, সম্মান, টাকা, চাকরি ইত্যাদি সবকিছু দেয়া হল শুধু একজনকে! কেন? কোথায় মানবাধিকার? প্রতিষ্ঠিত করা হল শুধু রেশমাকে? কেন? সম্মানিত করা হল শুধু রেশমাকে? কেন? কোথায় জাতির জাগ্রত বিবেক? রাজাকাররা দেশের জাতীয় পতাকা গাড়ীতে লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়, রাজাকাররা দেশের মন্ত্রী, প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি, ধর্মীয় আলেম, এটা যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্ট দেয়! ১৭ দিনের রেশমার নাটক আমাদের তেমন কষ্ট দেয়? একবুক জ্বালা নিয়ে, শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈইতিক কষ্ট নিয়ে না মরে কোন রকমে বেঁচে আছি। ভালো একটা চাকরিরও ব্যাবস্থা করতে পারতেছি না। আগেরমত গাধার পরিশ্রমতো আর করতে পারি না। জন্ম যখন নিয়েছি, মরতে তো হবেই। সত্য কথা প্রকাশ করে যদি মরতে হয়, আলহামদুলিল্লহা! আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, জাতির জাগ্রত বিবেক, আমাদের প্রতি সুবিচার করুণ!
সম্পূর্ণ লেখা না পরে, কেউ কোন কমেন্ট বা মন্তব্য করবেন না। ১৭ দিনের ঘটনার সাথে সাথে বাংলাদেশের সকল ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদপত্রের সাংবাদিকগণ হুমড়ি খেয়ে মিথ্যা ঘটনাকে সত্য মনে করে "মিরাকেল" বলে প্রচার করলো। ১৬ দিন পর্যন্ত ১০০ ঘণ্টা নিয়ে মোটামুটি আলোচনা ছিল। ১৭ দিনের ঘটনার পর তারা আর কখনো ভুলেও আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। কারণ ১৬ দিনের মধ্যে যত ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদপত্রের সাংবাদিকগণ আমার অভিজ্ঞতার কথা জানতে এসেছে, সবাইকে আমি আমার মহান মুর্শিদের দয়ার কথা বলেছি। অনুরোধ করে বলেছি, বাবাজানের কথা যেন তারা প্রচার করে! সংবাদ প্রচারের সময় তারা বাবাজানের কথা বাদ দিয়ে প্রচার করেছে এবং পত্রিকায় ছেপেছে। তাই আমি ১৭ দিন পর এইসব কথা বলার আর কোন সুযোগ পাই নাই। অসুস্থ থাকার কারনে লিখতেও পারি নাই। আর তখন কোনা ভাবে যদি প্রচারও করতে পারতাম, হয়তো তারা আমাকে মেরে ফেলত বা গুম করে ফেলত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এসেছে অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেনা বাহিনীর মাধ্যমে সি এম এইচে থাকা অবস্থায় আমাকে মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। গত ৬ মাস আমাদের সংসার কিভাবে চলেছে কোনদিন কি খোঁজ নিয়েছেন? সমাজের উচ্চস্তরের মানুষরা অভাব কি বুঝেন? আপনারা গায়ে সুন্দর সুন্দর পোশাক পড়তে পারেন, আর এই পোশাক যারা রাত্রদিন পরিশ্রম করে বানায়, তাদেরকেই আপনারা ঘৃণা করেন? তরুণ প্রজন্মরা ৪২ বছর আগের স্বাধীনতা যুদ্ধাপরাধী নিয়ে কত কিছু করেন? স্বাধীনতা যুদ্ধ কি নিজ চোখে দেখেছেন? আর মাত্র ৬ মাস আগে হাজার হাজার শ্রমিক মারা গেল, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে নিশ্চয়ই আপনারা তা দেখেছেন, এত দ্রুত সব ভুলে গেলেন? অসহায় মানুষদের জীবন যুদ্ধ কি চোখে দেখেছেন? এভাবে শিয়াল কুকুরের মত বেঁচে থাকার চেয়ে আমাদের একবারে মেরে ফেলাই ভালো।
এই ঘাটনার মাধ্যমে সরকারের কি লাভ? কি ক্ষতি? তা আমার ক্ষুদ্র মাথায় সম্পূর্ণ আসবে না। আমার মনে হয়, সম্ভবত আওয়ামীলীগ সরকার ও সেনাবাহিনী তাদের উদ্ধার কাজের ব্যর্থতা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য, হেফাজতের ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহের জন্য, বাংলাদেশের সহজ সরল মানুষদের "ইমোশনালই ব্ল্যাকমেল" করার জন্য এবং আল্লাহর মহান বন্ধু যুগের ইমাম বীর মুক্তিযোদ্ধা সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী (মাঃআঃ) হুজুরের অলৌকিক কারামত জাতির নিকট আড়াল করার জন্যই মূলতো ১৭ দিনের রেশমার নাটক তৈরি করেছে। আমার পিসির ফন্ট সমস্যার কারণে বেশ কিছু শব্দ ভুল হয়েছে এবং বেশকিছু শব্দ লিখতেই পারিনি। সম্মানিত পাঠকরা, আশা করি বিষয়টি আপনারা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:০৯