"দেখিতে গিয়াছি পর্বতমালা,
দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু,
দেখা হয়নাই দু চোখ মেলিয়া,
ঘর হতে শুধু দু পা ফেলিয়া,
একটি ধানের শীষের উপর, একটি শিশির বিন্দু।"
রবি ঠাকুর এর এই কথা মাথায় রেখেই সিন্ধু বা পর্বতমালা দেখার আগে কাছাকাছি জিনিসগুলি দেখার চেষ্টা করলাম।
কাছাকাছি তো ধানের শিশও নাই, তার উপর গরমকাল!! শিশিরই বা কই পাব??
যাই হোক, বেড়াতে গেছিলাম দাদাবাড়ী। গ্রাম এর নাম "মধুরদিয়া"। শুনলাম শেখানে নাকি একটা জাদুঘর তৈরি করেছেন এর ডাক্তার সাহেব নিজ উদ্যোগে। অমন মফস্বলে এতো রীতিমতো অভিনব ব্যাপার। দেখতে হয়।
তাই চলে গেলাম একদিন দলবল নিয়ে। যাওয়ার পথে "অন্তারমোড়" নামক একটা জায়গা দিয়ে যেতে হয়। যেহেতু গ্রাম এলাকা, যেতে যেতে প্রকৃতিকে খুব কাছ থেকে দেখলাম। একটি ফাঁকা জায়গা, গাছপালা কিছু ছিল না তাই দূরে একটা নদী দেখতে পেলাম।পাত্তা দিলাম না তেমন। নদী তো আর দেখতে যাচ্ছি না, দেখতে জাচ্ছি যাদুঘর। অবশেষে পৌঁছালাম। দেখলাম অমন গ্রাম অঞ্চল এর তুলনায় বেশ ভাল একটা জায়গা।
ভাই বলল নদী দেখব। ঐখানেরই একজন রাস্তা বলে দিল। মাটির উঁচু নিচু রাস্তা। ২ পাশে প্রচুর গাছপালা। কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে পা এমন ব্যাথা হয়ে গেল যে, গাছপালা আর আমাকে মুগ্ধ করতে পারল না।
মনে হল যেন কয়েক যুগ পরে পৌঁছালাম।
সামনে একটা নদী। তেমন কন ব্যাপার না। কিন্তু বিশ্বাস করেন আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল!!! এ কোথায় এলাম?? এতো নিরঘাত স্বর্গের একটা টুকরা যেন পৃথিবীতে ফেলে দেয়া হয়েছে!! সেই পানি এত্ত নীল, এত্ত নীল, এতো নীল পানি আমার আমার এই জীবনে দেখিনি।
কার কাছে যেন শুনেছিলাম, মন খারাপ থাকলে নাকি নদীর কাছে আসলে মন ভাল হয়ে যায়। আমার মন খারাপ ছিল না। তাহলে বঝেন আমার অবস্থা কি!!
সেখান থেকে তোলা কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। ক্যামেরা অত উন্নত মানের ছিলনা।তাই সেই অস্বাভাবিক নীল রঙটা ধরে রাখতে পারিনি। নিজ গুনে ক্ষমা করে দেবেন। আর পারলে একটু কষ্ট করে কল্পনা করে নিয়েন। কেউ একজন বলেছিলেন, মানুষের কল্পনার নাকি কোন সীমা নেই। কে বলেছিল তা মনে হয় আর বলে দিতে হবে না।
১। ঝাউ গাছে ফুল এই প্রথম দেখলাম।
২। নদীতে চর পরেছিল, কিন্তু তার সৌন্দর্যে কিন্তু একটুও চর পড়েনি।
৩। ফটোগ্রাফির একটি বৃথা চেষ্টা।
৪। নৌকা
৫। জীবিকার সন্ধানে
৬। মরার আগে এই দৃশ্য আর দেখতে পাবো কিনা কে জানে!!
৭।
৮। মাছ ধরছিল জেলেরা।
৯। নৌকা - ২
ছবি কেমন তুললাম একটু বইলেন।
ওহ শিট, নদীর নাম বলতেই টো ভুলে গেলাম!!
নদীটির নাম ছিল "পদ্মা"