somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপেক্ষার আক্ষেপ

১১ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনুরিমা,

তোমার বুকসেলফ এ থাকা বইয়ের কাভার পেজের পরের পাতাগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছো কখনো? চিলেকোঠার সেপাই এর কাভার পেজের পরের পাতা। খুব আলতো করে “কষ্টিপাথরে’'র” পাতা গুলোতে হাত বুলিয়েছো কখনও। কিংবা নোট দেওয়া অংশগুলো পড়েছো। আচ্ছা কখনো কি “রেহেনুমা বিনতে আনিসের” বইয়ের নামটা নিয়ে ভেবেছো। কেন এই বই তোমার হস্তগত হয়েছে?

এখনও কি মধ্যে রাতে ভয় পেয়ে ঘুম ভেঙ্গে গেলে, শহর থেকে শহরে সাহসের বাণিজ্য চলে?

আচ্ছা, সেই ডানা কাটা মুরগির খবর কি? ধানমাড়াই এর মেশিনে একটা ডানা কেটে গেল। তোমার সেই কি কান্না। এক ডানা ছাড়াই যাকে পেলে পুষে বড় করছিলে।

তোমার বাসার পাশের মসজিদের সামনের ধানক্ষেতের ওপারের আকাশ গোধূলির জন্য যে অনিন্দ্য আয়োজন করতো, তা কি আকাশ এখনও করে?

আচ্ছা, তোমার কি সেই সাদা ফুলের আলোচনার বিকেলের কথা মনে আছে? বিশেষত বন বেলি। কোন এক বৃষ্টিস্নাত সকালে হাতে হাত ধরে তোমার আমার বন বেলি তুলতে যাবার পরিকল্পনার কথা!

মনে আছে মহাদেব সাহার কবিতার সেই বৃহস্পতিবার কিংবা একসাথে কয়েক আলোক বর্ষ একসাথে হেটে যাওয়া পরিকল্পনার কথা?

তোমার কি মনে আছে তপ্ত দুপুরে লেকের ওপারে বসে পিঠা খাবার সেই সময়টা কিংবা ভিসি চত্বরের আমলকি কুড়ানোর সেই মধ্যে দুপুর?

তোমার হ্যান্ড ব্যাগে রাখা আমার সেই চিঠি, যেটা তোমার জীবনের প্রথম কোন চিঠি, সেটা কি আজও আছে নাকি পুড়িয়ে ফেলেছো?

আচ্ছা, রাতে পানি তুলে রেখে সকালে বাসি পানি খাবার যে অভ্যাস ছিল, সেটা কি এখন আছে?

আমার শহর ছেড়ে যে দিন তুমি চলে গেলে, ডিসেম্বরের সেই সকালের কথা কি তোমার মনে আছে? বাস কাউন্টারে বসে তোমার সাথে কত কথা…

তোমার শহরে আমার আগমন উপলক্ষে সবুজ একটা হিজাব কিনে তুলে রেখেছিলে। আমি আসলে পরবে বলে, আচ্ছা, সেটা কি আজও তুলে রেখেছো?

তোমাদের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম কোণের ঘরটা আমাকে স্থায়ী ভাবে ভাড়া দিতে চেয়েছিলে। খুব জানতে ইচ্ছে করে, ঘরটা কি দামে ভাড়া দিয়েছো।

নভেম্বরের আচমকা বৃষ্টির কোন এক সকালে শাল গায়ে জড়িয়ে ধোঁয়া উঠা কফির মগ হাতে বারান্দায় বসে দুজন মোটা ফ্রেমের চশমা চোখে মুখোমুখি বসে বিভূতিভূষণ কিংবা মানিক নিয়ে আলোচনার যে পরিকল্পনা ছিল, সেটা মনে পড়ে তোমার?

তোমার কি মনে পড়ে সোহরাওয়ার্দী কিংবা শের-ই-বাংলার সেই সকাল?

মনে পড়ে তপ্ত দুপুরে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের ফুটপাত ধরে হেঁটে যাওয়া, মালিবাগের সেই দুপুর,
কিংবা জাহাঙ্গীর গেটের সেই সন্ধ্যা? হাত ধরে যখন রাস্তা পার করে দিই, ক্ষণিকের জন্য কি তোমার হৃদ স্পন্দন অস্বাভাবিক হয়েছিল?

টিএসসি কিংবা বই মেলার সেই মধ্যে দুপুর, কিংবা টং’এর ধোঁয়া উঠা চায়ের কাপের গল্পগুলো কি মনে আছে তোমার ? সেদিনের সেই ফুসকা বিলাসের কথা মনে পড়ে?

রিক্সা থেকে নামতে গিয়ে যে তোমার গোড়ালির উপরে কেটে গেলো। সিনড্রেলাকে দিয়ে তুমি গজ আনালে। নিজেই বাধলে। খুব কান্না করেছিলে কাটার দাগ হয়ে গেছে তাই। যে দাগের অস্ত্বিত্ব আমি ছাড়া কোন পুরুষের জানার কথা ছিল না। আচ্ছা, সেই দাগটা কি মিলিয়ে গেছে?

তোমাকে বাড়ি ফেরার বাসে তুলে দিয়ে, তোমার বাস দৃষ্টিসীমার বাইরে যাওয়া পর্যন্ত যে তাকিয়ে থেকেছি, কখনও কি ফিরে দেখেছো?

পূর্ণিমার রাতে মেডিকেল কলেজের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা নভেম্বরের সেই রাতের কথা কি মনে পড়ে তোমার?

সেই হলুদ জবার গাছটার কি খবর? কোথায় লাগিয়েছো? ফুল এসেছে?

আচ্ছা, তোমার সেই সাদা রেইনকোটটার কি খবর? ব্যবহার করো এখনো? ওই যে সেই ঘড়িটা, হাতে দাও এখনও?

খুব জানতে ইচ্ছে করে, জনাব বলে এখন কাকে সম্বোধন করো?

এখনও কি কুমড়োর বড়ি দেবার জন্য তোমার মায়ের সাথে রাত জেগে কুমড়ো কোটো?

আচ্ছা, তোমার মাথার সামনের দিকের কিছু চুল পেকেছিল, সেটা নিয়ে খুব ভাবতে । তোমার সেই ভাবনায় ছেদ পড়েছে কি?

তোমার ঘাড়ের পিছনের অংশে যে একটা সিস্ট হয়েছিল, যেটা তুমি আমার উপস্থিতি ছাড়া অপারেশন করবে না বলে পণ করেছিলে, সেটা কি এখনও আছেই, নাকি অপারেশন করিয়েছো?

আচ্ছা, তোমার কাছে আমার জন্য ধন্যবাদের একটা খাতা ছিল, আমাকে দেওয়া ধন্যবাদগুলো তুমি সেখানে জমিয়ে রাখতে। খাতাটা দিন দিন লম্বা হচ্ছে বলে আমাকে জানিয়েছিলে। যেটা তোমার দামে আমার সাথে বিনিময় করার কথা ছিল। সেটা কি এখনও আছে, নাকি বাতাসে মিলিয়ে দিয়েছো?

তোমাকে একটা গল্প বলি,
হলে আমার পাশের রুমে থাকতেন রাহাত ভাই। আমি যখন ভর্তি হই, ভাই তখন থার্ড ইয়ারে। ধীরস্থির , ঠান্ডা মাথার মানুষ। হলের সবাই সবাইকে না চিনলেও রাহাত ভাইকে সবাই চিনতো, তার অমায়িক ব্যবহারের কারণে। আমাদের কারো অসুবিধা থাকলে ভাইকে আগে জানাতাম। ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকদের সাথেও ছিল ভাইয়ের খুব ভাল সম্পর্ক। মার্স্টাসের পরপরই ভাইয়ের একটা সরকারি চাকরি হয়ে গেলো। রাহাত ভাই হল থেকেই অফিস করতেন। একদিন রাতে ছাদে গিয়ে দেখি রাহাত ভাই আবছা আলো-আঁধারীতে অনুজ্জ্বল চাঁদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি গিয়ে তার পাশে বসলাম। এতটা চঞ্চল মানুষ, যে দূর থেকে আমাকে দেখলেও ডাক দিতেন। কথা না বলে, চা না খাইয়ে আমাকে ছাড়তেন না। আমার সরব উপস্থিতিতে ভাই নির্লিপ্ত। বেশ কিছুক্ষণ পর ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করলো, আমি কেমন আছি। সচারচার ভাই এই প্রশ্ন করেন না। তার প্রশ্নের ধরণ বরাবরই অন্য রকম। এই যেমন, গত সপ্তাহে আমার গায়ে জ্বর ছিল, এখনও জ্বর আছে কি না; কিংবা, বাড়িতে আব্বা অসুস্থ ছিলেন, এখন কেমন আছেন; গত সেমিস্টারের তুলনায় এই সেমিস্টারের সিজি কেমন; কোনটায় কতটা কমেছে বা বেড়েছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমার বুঝতে বাকি রইলো না , কোন একটা বড়সড় ঝামেলা হয়েছে। আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে, আমি জিজ্ঞেস করলাম , ভাইয়া কি হয়েছে? আড়ষ্ট কণ্ঠে ভাইয়ের উত্তর ছিল- না কিছুই না। আমার এই তিন বছরের হল জীবনে এই প্রথম রাহাত ভাইয়ের আড়ষ্ট কন্ঠ আমার কানে বাজলো। আকাশে জমে থাকা কালো মেঘ যেমন দিগন্ত ছাপিয়ে বৃষ্টি নামায়, ঠিক তেমনি রাহাত ভাই আস্তে আস্তে কথা বলা শুরু করলেন।
ইয়াসমিন। তোদের এক সেশন আগে। ওর সাথে আমার শেষ যেদিন কথা হয় তার আগের দিন সন্ধ্যায় আমি বেশ বড় রকমের একটা বিপদের সম্মুখীন হই। অভ্যাসবশত টেক্স করে ওকে জানাই। পরদিন সকাল পর্যন্ত ওর কোন রেসপন্স পাইনি। আমার মেসেজ সিন করে রেখে দেয়। আমি ভেবেছিলাম কোন বিপদ হল কি না। সকালে কল দিই। বলে কোন বিপদ-আপদ নেই৷ ভালো আছে। টেক্স এর কথা জিজ্ঞাসা করলে বলে বিয়ে নিয়ে ঝামেলায় আছে। তাই রিপ্লে দিতে পারে নি। আমি আকাশ থেকে পড়ি। ছেলের সাথে নাকি তার বেশ কিছুদিন যাবত কথা হচ্ছে। “নন ক্যাডার, শিক্ষক পদে সুপারিশ প্রাপ্ত, ছেলেটা ভালো” - এই কথাটা শোনার পর আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। আমার শরীর অবশ হয়ে আসে। আমি আর কথা বলতে পারি না। লাইনটা কেটে দিই। এরপর আর কথা হয়নি।

রাহাত ভাই একদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, মনে কর, তোর শরীরটা কাঁদামাটির একটা ভূমি। চার বছর ধরে সেখানে একটা গাছ বড় হলো। হঠাৎই একদিন একটানে গাছটা উপড়ে ফেলা হলো, সেই শরীরের যে কষ্ট হয়, এই কষ্ট তার চেয়ে তীব্র।

শেষ যেদিন ওর সাথে আমার কথা হলো, সেদিন পর্যন্ত ওর সাথে আমার ৪ বছর ২ মাস ২ দিনের জানাশোনা। এই চার বছরে ওর আচরণে কখন প্রকাশ পায় নি যে, সে আমাকে পছন্দ করে না। আমার সাহিত্যের প্রতি ঝোঁক ছিল। বাংলা সাহিত্যের দিকপালদের কথা পড়লে দেখবি, ভালোবাসার কথা কাউকে বলে বোঝাতে হলে তাকে ভালোবাসা বলে না। একটা মানুষের প্রতি তোর আচরণ, কথাবার্তা এগুলোতেই ভালোবাসার ব্যাপারটা প্রকাশ পায়। ব্যক্তিভদে ভালোবাসার ব্যাপারাটা আলাদা হলেও ভালোবাসার বং একই। যেমন, মা-বাবা, ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব এর প্রতি ভালোবাসা।

মেয়েদের এই ব্যাপারে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রখর। ওর প্রতিটা কাজ, প্রতিটা কথায়, আচরণে এই ব্যাপারটা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ পেতো। এই যেমন ধর, ওর মা-বাবা আমাকে খুবই পছন্দ করতেন। সেটা আমাকে বেশ কয়েকবার বলেছে। ওর এক চাচার সাথে আমার মেডিকেলে পরিচয় হয়েছিলো। তিনি ও নাকি আমাকে খুবই পছন্দ করতেন, সেটাও শুনেছি কয়েকবার।

হল ছেড়ে কোচিং এর জন্য বাসা নিলো। ঐ বাসার উপরের ফ্লোরে একবার আগুন লাগে। তখন আমাকে কল দেই। আমি খেয়াল করি নি। মিনিট ৩/৪ পর কল ব্যাক করলে বলে, “মানুষ মারা যাবার আগে কারো সাথে কথা বলতে চাইলে তো সে সুযোগ পাবে না।” ওর যখন চাকরি হলো, তখন বলেছিলো, চাকরি হয়েছে। এবার সম্ভাবনাময় একজন বেকার দেখে বিয়ে করে ফেলবো৷ ওর চেনা জানা মানুষের ভেতর তখনও পর্যন্ত আমিই একজন, যে চাকরির চেষ্টা করে যাচ্ছে।

ও প্রায়ই বলতো, তার আজকের দিন পর্যন্ত যে পরিবর্তন (ধর্মীয়, ব্যক্তিত্ব, চাকরি) সেগুলোর প্রায় পুরো অবদানই আমার। গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে এক পশলা বৃষ্টি যেমন জনজীবনের প্রাণের স্বস্তি দেয়, আমার সাথে কথা হলে নাকি তারও একই অনুভুতি হতো।

ও যখন গ্রাম থেকে আসতো, গাবতলী উত্তরবঙ্গের বাস কাউন্টার থেকে ওর বাসা পর্যন্ত আমি রিক্সা করে রেখে আসতাম। যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্বেও, তাকে একবার ছুঁয়ে দেখার অদম্য ইচ্ছা সংবরণ করে গেছি প্রতিনিয়ত।

আমার সাথে শেষ যেদিন ওর কথা হল, এর মাস খানেক আগে ওর একটা ট্রেইনিং ছিলো। ওখানেই ছেলেটার সাথে পরিচয়। ঠান্ডা মাথায়, খুব সুচিন্তিত ভাবে এই সিদ্ধান্ত সে নিয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অন্যায়গুলো মানুষ ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করেই করে। না বুঝে মানুষ কখনো অন্যায় করে না, করে ভুল।
আমার আরো বেশি খারাপ লেগেছিল, একজন মানুষকে আমি চার বছরের বেশি সময় ধরে চিনি। তার ভালো লাগা খারাপ লাগা সব আমাকে জানাচ্ছে। জানাচ্ছে তার সুস্থতা, অসুস্থতা। অসুস্থ হলে রাতে নিয়মিত বিরতিতে কথা হচ্ছে। সারাদিনে বেশ কয়েকবার কথা হয়৷ তার অফিস যাওয়া, অফিসের সমস্যা, মন খারাপ সব কিছুই জানাচ্ছে আমাকে। এমনও হয়েছে, ভাবীর কথায় কষ্ট পেয়ে আমাকে বেশ করেকবার বলেছে, আপনার চাকরি পেতে আর কত দিন, এই বাড়িতে আর থাকা যাচ্ছে না। সে বাড়ির বড় বউ হতে চেয়েছিলো। তিন ভাই বোনের মধ্যে আমি বাড়ির বড়। যার সাথে সে বিয়ে করেছে সে বাড়ির ছোট ছেলে। সে শিক্ষকতা করে এমন ছেলে পছন্দ করে না, বিয়ে করেছে, শিক্ষকতা করে এমন একজন ছেলেকে। আমি ওর নিঃশ্বাসের শব্দ শুনলেই বুঝতে পারতাম, ও ভালো আছে নাকি খারাপ, ওর মন খারাপ নাকি মন ভালো, ও সুস্থ নাকি অসুস্থ।

মেয়েরা ছেলেদের চোখ দেখেই বলতে পারে তাদের চাহনি ভালো নাকি খারাপ বা কি চায়। আর, ৪ বছর ধরে একটা মানুষ কি চাই সেটাই বুঝল না! এটা কি বিশ্বাস যোগ্য! তার উপর দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ থেকে আউটস্ট্যান্ডিং রেজাল্ট নিয়ে বের হয়েছে।

কিছু মেয়েদের ব্যাপারটা এমনই। রাত বিরাতে কল দিয়ে বলবে, ওষুধ বা অন্য কিছু দরকার। ব্যাপার টা খুব গুরুত্বপূর্ণ না হলেও তুই ব্যাপারটা খুব গুরুত্ব দিবি। হয়তো বলবি, সমস্যা নাই। যে ভাবেই হোক তুই পৌঁছাবি। তারা চায় তাদের চারপাশে আলফা মেইল’রা ঘুরঘুর করুক এবং দিন শেষে ঠিকই তোর চেয়ে ভালো কাউকে বিয়ে করবে। তোকে হয়তো কাঁদো কাঁদো গলায় বলবে, আমার কিছুই করার ছিল না, বাবার জোরাজুরিতে বিয়ে করতে হলো। আমি তোমাকেই চেয়েছিলাম। এর সবই অভিনয়।

ওর বিয়ের ঠিক ২১ দিন পর আমি চাকরিতে যোগদান করি। জীবন নাটকের চেয়ে নাটকীয়।

রাহাত ভাই এখন সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। দ্বিঘাত সমীকরণের জাল থেকে বেরিয়ে এখন তার জীবন এখন সরল সমীকরণে প্রবাহমান।

অনুরিমা, খুব জানতে ইচ্ছে করে, আমার অপরাধ কি ছিল! খুব জানতে ইচ্ছে করে, এত ভালো অভিনয় মানুষ কিভাবে পারে! রাহাত ভাইয়ের শেষের কথাগুলো এখন খুব কানে বাজে।

পুনশ্চঃ প্রিয় অনিকেত, তোমার কথাগুলো শব্দে আটকানোর সামান্য চেষ্টা করেছি মাত্র। যে কষ্টের ভেতর দিয়ে তুমি গেছো বা যাচ্ছো সেটা কমানোর বিন্দুমাত্র সাধ্য আমার নেই। ধৈর্য ধরো। সবারই হয়তো সময় আসে। সময়ের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে পারলে সময় ঠিকই সঠিক সময় এবং সঠিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়। তোমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, পৃথিবীর সৃষ্টিলগ্ন থেকে মানুষ এই কষ্ট লালন করে আসছে। কষ্টের ধরণ একই হলেও অনুভূতির ভিন্নতা রয়ে যায়। তোমার জায়গা থেকে তুমি যদি নিজের সাথে, অন্যের সাথে সৎ থেকে থাকো, তোমার জীবদ্দশায় তুমি তার ফলাফল দেখে যাবে। দোয়া রাখি, সময় তোমার সব কষ্ট মিলিয়ে দিক। জীবন সুন্দর। নিজেকে নিয়ে বাঁচো। নিজের জন্য বাঁচো।

অপেক্ষার আক্ষেপ।
নাজমুল ইসলাম সাদ্দাম
২০ বৈশাখ, ১৪৩১।
শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা।



৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানব সভ্যতা চিরতরে ধ্বংস হবে কি করে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৬



সে এক বড় অদ্ভুত বিষয়।
চিন্তা করে দেখুন এত দিনের চেনা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। বিশাল বিশাল ইমারত ভেঙ্গে যাবে, গুড়িয়ে যাবে। মানুষ গুহা থেকে বেরিয়ে আজকের আধুনিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×