বাসের সামনে সিটে বসে আছে মেয়েটা, তুমুল হাওয়ায় খোলা চুল উড়ছে। ছেলেটা ঠিক পেছনে, সে জানে না, জগতের কোন সুগন্ধি এমন সুবাস ছড়ায়! ছেলেটা চোখ বন্ধ করে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। মেয়েটাকি জানে? কেউ একজন ডুবে যাচ্ছে মাতাল হাওয়ায়, কেউ একজন ডুবে যাচ্ছে অথৈ সুবাস সমুদ্রে!
মেয়েটা নেমে গেল পরের স্টপেজে। ছেলেটা চোখ বন্ধ করে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। সুবাসের আকণ্ঠ তেষ্টায় সে চোখ খুলে দেখল মেয়েটা নেই! কোথাও নেই! কিন্তু ছেলেটা ঠোঁট ফাঁক করে হাসল। মেয়েটা জানল না। দেখল না। সে বাসায় ফিরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে লম্বা এলো চুলে চিরুনি দিতেই টুপ করে খসে পড়ল সাদা এক টুকরো কাগজ, সেখানে লেখা ছিল,
‘এমন সুবাস যদি দাও-
এমন নির্জলা সাগরে ডুবাও-
তবে ডুবে রই
থাকুক হৃদয় কারো ঘ্রাণে, ডুবুক অথৈ।
এক জনমে মেয়েটার আর ঘুম হয় না, বুকের ভেতর হু হু করে উত্তুরে হাওয়া বয়ে যায়। বাসে, ট্রেনে, ফুটপাতে, মেলায় চুল এলো করে রাখে, কত কত সুগন্ধি সুবাস ছড়ায়। কিন্তু ছেলেটা আর আসে না, আসে না চিরকুটও।
জগতে কেউ কেউ বিধানচন্দ্র হয়
~কেউ কেউ বিধানচন্দ্র/ সাদাত হোসাইন
০৮/০৪/২০১৫
বিঃদ্রঃ বিধানচন্দ্র আসলে কে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে 'আরশিনগর' নামের উপন্যাসটি পড়া বাঞ্ছনীয়, না পড়লেও ক্ষতি নেই, সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে, জগতে কেউ কেউ এই ছেলেটার মত হয়।