নামটা শুনে অনেকেরই খটকা লাগতে পারে। বান্দরবানের থানচি গেলে ওখান থেকে সাধারণত আমরা সাঙ্গু নদী ধরে চলে যাই রেমাক্রির দিকে। কিন্তু থানচির নৌকা ঘাটা থেকে বাম পাশের বিজিবি ক্যাম্প পার হলেই ছোট্ট একটা ঝিরি পথ, উল্টো দিক থেকে স্রোতের বেগে পানি এসে মিশছে সাঙ্গু নদীতে। এই ঝিরি পথ ধরে কিছুদূর ট্রলারে যাওয়া যায়, পরে আরো কিছুটা পথ পায়ে হাটতে হবে তবে পৌছানো যায় এই ডিম পাথর এলাকায়।
ওখানে পৌছলে দেখা যাবে পাথরের ফাঁকে ফাঁকে প্রবাহিত পানির স্রেতধারা সাঙ্গু অভিমুখে প্রবাহিত হচ্ছে। আর ছোট বড় প্রায় সবগুলো পাথরের আকৃতি অনেকটা ডিমের মতো। যতোই এগিয়ে যাবেন পাথরের সংখ্যাটা বেড়েই চলছে। এই ডিম্বাকৃতির পাথরগুলো ওখানে রয়েছে বলেই এই এলাকাটার হয়েছে নাম ডিম পাথর।
(২) চান্দের গাড়ি থেকে থানচি নেমেই পেলাম দুঃসংবাদটা। গত রাতে প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় সাঙ্গু নদীতে পানির উচ্চতা ও স্রোত অনেক বেড়ে গেছে, তাই পরবর্তি ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিজিবি। সুতরাং আমাদের কোন ভাবেই এই দিন আর রেমাক্রি যাওয়া হবেনা।
(৩/৪) সাঙ্গুর দিকে তাকিয়ে আমার কাছেও যেন সাঙ্গুকে কেমন অচেনা লাগলো। চিরচেনা সাঙ্গুর স্ফটিক স্বচ্ছ জল একেবারে ঘোলাটে আকার ধারণ করেছে, সেই সাথে সব সময় খড়স্রোতা সাঙ্গু আজ যেন রূদ্র রূপ ধারণ করেছে।
(৫) সিদ্ধান্ত বদল করে থানচি ট্রলার ঘাটে চললাম ডিম পাথর আর সেগুন ঝিরি দেখতে।
(৬) থানচি বাজার এবং বিজিবি ক্যাম্পকে বাঁয়ে রেখে ঝুলন্ত সেতুর নিচ দিয়া ট্রলার এবং গাইড নিয়ে ছুটে চললাম ডিম পাথর এলাকার দিকে।
(৭) দুই পাশে পাহাড়, মাঝ খানের ঝিরি পথটা ক্রমেই সরু হয়ে আসছে।
(৮) এক সময় ট্রলারের তলা পাথরে ঠেকে ঠেকে যচ্ছিল, সুতরাং হাটা ছাড়া আর কোন উপায় নাই।
(৯) শুকনো দিয়ে হাটার কোন উপায় ছিল না, আর পানি দিয়ে হাটাটাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কখন পাথরে কখন স্রোতে ভেসে আসা বাঁশ কিংবা অন্য কোন বস্তুর উপর পা পড়ছিলো তা বুঝা যাচ্ছিল না।
(১০) এক সময় পানি কমে আসছিল আর পাথরেরা মাথা বের করে তাদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছিল।
(১১) এই পাতাটাকে ভুলেই গিয়েছিলাম, ডিম পাথর ঝিরিতে প্রথম যখন দূর্গন্ধ পাচ্ছিলাম ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না ব্যপারটা কি? এক সময় বুঝলাম এই পাতাদের সাথে অনেক দিন পর সাক্ষাৎ হওয়ায় তাদেরকে আমি ভুলতেই বসেছি।
(১২/১৩) যতই সামনের দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি ততই ডিমের সংখ্যা, আরে না পাথরের সাখ্যা বাড়ছে। সব পাথরই যে গোল তেমন না, তবে ডিমও তো সব গোল হয়না, তাইনা?
(১৪) পিচ্ছিল পাথর দিয়ে হেটে যাওয়াটা বেশ ঝুকিপুর্ণ ছিল, বিশেষ করে আমার কাতে ক্যামেরা থাকায় ঝুকিটা ছিলো আরো বেশী। ক্যামেরার পিছনে থেকে যখন টায়ার্ড লাগছিল তখন দুটো বড় ডিম পেছনে নিয়ে ক্যামেরার সামনে এসে দাঁড়াইলাম
(১৫/১৬) ক্রমান্বয়ে পাথরের সংখ্যা বাড়ছে এবং বড় হচ্ছে।
(১৭/১৮) পাথরের সংখ্যাধিক্য এবং বড় হওয়ার কারণে এক সময় ঘোলা পানিগুলো পাথরের নিচ দিয়াই চলে যেতে দেখা গেল।
(১৯/২০) অবশেষে পথের পাথর শেষ হলো, সামনে দেখা গেল সেগুন ঝিরি থেকে আসা ঘোলা পানির স্রোত। সেগুন ঝিরি নিয়ে পরবর্তিতে কোন সময় আবার পোষ্ট দিবো।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৫৯