গত বছর যখন রাস্তাটা প্রসস্ত করেছিল তখন অনেক গাছ কাটা পড়লেও তাল গাছটা রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। এবার রাস্তাটা আরো বড় করার পরিকল্পনা নিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। তাই আমার বাড়ির উল্টো পাশের তাল গাছটা এবার কাটা পড়বে নিশ্চিৎ। দুই বছর আগে যখন এক জোড়া মুনিয়া দম্পতি তাল গাছটায় বাসা বাধে তখন থেকেই আমি অবসরে তালগাছটা নিয়ে মেতে থাকি, বারে বারে ওড়ে ওড়ে ওদের আশা যাওয়া, বাসা বোনা, বাচ্চাদেরকে আদর করে খাবার খাওয়ানো, সবই ঘটছে আমার চোখের সামনে।
পাঁচ তলার পশ্চিম পাশের বারান্দায় দাঁড়ালে তাল গাছের মাথার উপরটা পরিস্কার দেখা যায়। ওখানে আরো একটা দম্পতি বছরে কিছু দিনের জন্য নিয়মিত আসে, ওরা হলো ভাট শালিক দম্পতি, তদের বাচ্চা বড় হলে ওনেক দিন ওরা নিখোজ থাকে, আবার ডিম পাড়ার সময় হলে কোথ্থেকে যেন এসে ঠিকই একটা কোটর খুঁজে নিয়ে বাসা বানিয়ে নেয়। এছাড়াও তাল গাছটার নিয়মিত বাসিন্দা রয়েছে কিছু খুদে পাখি, যারা তালের পাতার ফাঁকে থাকে এবং আশপাশে সব সময় কিচির মিচির করে ডেকে ডেকে উড়ে বেড়ায়।
ইতিমধ্যেই মুনিয়াগুলো আবারো সম্ভবত ডিম পেড়েছে, কারণ পালাক্রমে তাদের কেউ না কেউ বাসার ভেতরে অবস্থান করে। তালগাছটা কাটাতো পড়বে নিশ্চিৎ, আমার শুধু একটাই ভাবনা পাখিগুলোর ডিম কিংবা ছোট ছানা থাকা অবস্থায় যেন কোন ভাবেই এটা কাটা না পড়ে। আগের বার পাহাড়ি নিম গাছটা কাটার পর আমি হারিয়েছি ছোট্ট পাখি মৌটুসীকে, যাকে এখনো আমি খুজে বেড়াই। এবার মুনিয়া পাখিগুলোকে ও হারানোর প্রহর গুনছি। গাছটা কাটার পর ওরা হয়তো অন্য কোথাও আশ্রয় খুজে নেবে, কিন্তু আমার সাথে ওদের হয়তো আর কোন দিন দেখা হবেনা। এমনটা ভাবলে মনটা সত্যিই খুব খুব খারাপ হয়।
(২/৩) গত বছর পাহাড়ি নিম গাছটা কাটার ফলে আমার কাছ থেকে হারিয়ে গিয়েছিলো এই মৌটুসী পাখি।
(৪) তাল পাতার ফাকে ফাকে খেলা করছি তিলা মুনিয়া পাখিরা।
(৫/৬) খড় কুটো দিয়ে বাসা বুনছে ছোট্ট মুনিয়া পাখি
(৭/৮) ভাট শালিকটা পর্যবেক্ষণে আছে প্রতিবারের মতো এবারও বাসা বুনবে বলে।
(৯/১০) মুনিয়াদের বাসা বুনা প্রায় শেষ, ফিনিসিং টাচ দিচ্ছে পাখি দুটো.....তবে এই তিলা মুনিয়াদের কোনটা নারী আর কোনটা পুরুষ তা আমি বুঝতে পারিনি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১২