শিবপুর উপজেলা সদর থেকে উত্তর পূর্ব দিকের যে রাস্তাটা জয়নগরের দিকে গেছে সেই রাস্তার দুই পাশটা অত্যন্ত চমৎকার। বর্ষায় সব জমি যখন পানির তলায় লুকিয়ে থাকে তখন সেখানে শত সহস্র শাপলা ফুলেরা হেসে উঠে, কোনটা লাল, কোনটা বেগুনী আবার কোনটা সাদা। শুকনো মৌসুমের রূপটা যেন আরো অনন্য, দুইপাশে সবুজ ধানের ক্ষেতে কৃষকদের নিরন্তর কর্মযজ্ঞ, একেবারে আদিও আসল গ্রামের সুবাস।
রাস্তার দুই পাশ জুড়ে কাঠালের গাছগুলো রাস্তাটাকে দিয়াছে সুরঙ্গ এর আকৃতি, এই সুরঙ্গ ধরে পথ চলা আর ক্ষণে ক্ষণে বসে শাপলা শালুকদের সাথে কথা বলার জন্য কিংবা সোনালী ধানের পাগল করা ঘ্রান নিতে আমি বার বার ছুটে গিয়েছি ওদের পানে।
জয়নগর গ্রামের শুরুতেই একটা ছোট্ট বাজার, নাম জাল্লারা বাজার। তিন রাস্তার সংযোগ স্থল এই জাল্লারা বাজারটা আমার নিকট সব চেয়ে প্রিয় হবার কারণ হল, এখানে বেশ কয়েকটি বট ও অশথ্থ গাছ রয়েছে, আর এই সব গাছ গুলোতে বছরের প্রায় সব সময়ই ফল থাকে বলে পাখিদের পদচারণা এখানে খুব বেশী, এখানে আমি অনেক ব্যতিক্রমী পাখিদের দেখেছি, যা অন্য কোথাও সাধারণত দেখা যেয় না। গতকালকে (১৩/১০/২০১৬) আবার ওখানে গিয়েছিলাম দেখলাম বড় সাইজের বেশ কিছু পাখি ওখানে ফল খতে এসেছে। প্রথমে ভাবলাম ঘুঘু পাখি, কিন্তু একটু পরই আমার ভুল ভাঙ্গলো, না এতো দেখছি অন্য পাখি। পাখিদের ছবি যারা তুলেছেন একমাত্র তারাই জানেন গাছে থাকা পাখিদের ছবি তোলা কতোযে কষ্টকর। কষ্ট করে ছবি তুলছি হঠাৎ গাছে কেউ একটা ঢিল মারলো, নানা রকম শত শত পাখি হঠাৎই উড়াল দিলো।
একজনকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলাম ঢিল মারার কারণ, তিনি বললেন এই অরফুল পাখি খায়, তাই মারার চেষ্টা করে অনেকেই, ওদের আমি অনেক বুঝালাম পাখিদের না মারার জন্য। কতোটুকু বুঝলো আমি ঠিক বুঝলাম না। তবে ঢিল মারার আগে অরফুল (পাখিটির স্থানীয় নাম) পাখির কয়েকটি ছবি তুলতে পেরেছিলাম, এই অচেনা পাখিগুলোর নাম কারো জানা থাকলে বলবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৭:০৪