মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে অবস্থিত নোহকালিকাই জলপ্রপাতটি ভারতের বৃহত্তর জলপ্রপাতগুলোর মধ্যে একটি। উচ্চতায় ১১৭০ ফুট। এটি ধাপে ধাপে না পড়ে একবারে সোজাসুজি পাহাড় থেকে নিচে পড়ছে। এই জলধারা নিচে একটি জলাশয়ের সৃষ্টি করেছে, যার রং পান্নার মতো সবুজ ও স্বচ্ছ। দিনের রোদে সব সময় এর জলে খেলা করে বেড়ায় রংধনুর সাতটি রং। জলপ্রপাতটির বিশালতা আর ঝরে পড়ার ঐশ্বরিক সৌন্দর্যে অভিভূত হতে হয়। এই জলপ্রপাতটি এশিয়ার দ্বিতীয় উচ্চতম বলে দাবি করা হয়। চেরাপুঞ্জির জলপ্রপাতগুলোর যৌবন দেখতে হলে অবশ্যই বর্ষাকালে যাওয়া উচিৎ, কিন্তু আমি গিয়েছিলাম বসন্তকালে। বসন্তে ঝর্ণাগুলোতে পানি প্রায় থাকেনা বললেই চলে।
চেরাপুঞ্জির বৃষ্টিভেজা রূপ দেখতে হলে সেখানে যেতে হবে ভরা বর্ষায়। পাইনগাছ শোভিত অনুচ্চ পাহাড়শ্রেণির ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় চোখে পড়বে ছোট ছোট গ্রাম, খণ্ড খণ্ড কৃষিজমি আর ফলের বাগান। এছাড়া দেখা যাবে পাথর এবং কয়লার খোলোমুখ খনি। শিলং থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরবর্তী চেরাপুঞ্জি (উচ্চতা ৪,২৬৭ ফুট) যাওয়ার পথেই খাসি পাহাড়ের নয়নভিরাম শোভা দেখে মন ভরে যাবে।
(২/৩) শিলং থেকে যখন পাহাড়চূড়ার আঁকাবাঁকা পথে চলতে থাকবেন তখন মনে হবে এই দূরত্ব আরও বেশি হলেই বোধহয় ভালো ছিল। চলার পথে সঙ্গ দেবে চারপাশের অসাধারণ সুন্দর সব পাহাড়।
(৪) এক সময় রাস্তা কিছুটা সরু হয়ে এলো, রাস্তার পাশে কিছু বাড়িঘরও দেখা গেল আর মাঝে মাঝেই এমন কিছু গরু-ছাগলের পাল এসে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছিলো।
(৫) এক সময় আমরা চলে এলাম কাঙ্খিত সেই নোহকালিকাই জলপ্রপাতের কাছে।
(৬) নোহকালিকায় মানুষ প্রবেশ করতে লাগে ১০ রুপী, ক্যামেরা প্রবেশ করতে লাগে বিশ রুপী। আমরা তিন জনও এক ক্যামেরায় লাগলো পঞ্চাশ রুপী।
(৭) টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকেই সেই কাঙ্খিত ঝর্ণা, শুকনো মৌসুম বলে ঝর্ণায় পানি কম ছিলো, কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ছিল অফুরন্ত।
(৮) পড়ন্ত জলপ্রপাতের একটা অংশে সুর্য্য কিরণ লেগে চমৎকার রংধনু সৃষ্টি করছিলো অপ্রার্থিব একটা আভা।
(৯) প্রপাতের পানি পড়ে নিচে সৃষ্ট জলাধারটিতে যে পানি জমা হচ্ছিল তা স্বচ্ছ সবুজাব।
(১০) পাহাড়ে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য দেওয়া হয়েছে লোহার রেলিং।
(১১) নিচে ঝর্ণার কাছাকাছি যাওয়ার জন্য পাহাড়ের গা ঘেষে তৈরি করা হয়েছে সিড়ি।
(১২/১৩) বসন্ত কাল বলে ছোট বড় প্রায় সব গাছেই ফুল ফুটছিলো।
(১৪) পাহাড়ের উপরের অংশটা প্টায় পাথুরে এবং সমতল, সেখানেই বসার জন্য তৈরি করা হয়েছে এমন পাথুরে চেয়ার টেবিল।
(১৫) এমন চমৎকার জায়গায় কিছু স্মৃতিতো থাকাই উচিৎ।
(১৬/১৭) কয়েকটা টিনের ছাপড়ায় খাসিয়াদের বাড়িঘরগুলোই স্যুভেনিরের দোকান ও খোলা হয়েছে, এই সময়ে পর্যটক কম থাকায় অনেকটা অলস সময় কাটাচ্ছে দোকানীরা।
(১৮) খাসিয়া মহিলারাই সাধারণত পরিবারের প্রধান কাজগুলো করে, পুরুষরা শিশু সামলাতে ব্যস্ত থাকে।
(১৯/২০) ফেরার আগে কিছু খেয়ে নেওয়া যাক, কালি মুখে কতো আর ঘুরা যায়
গুগুল মামুর কাছ থেকে ধার নেওয়া নোহকালিকার বর্ষাকালিন ছবি
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১