গ্রামের নাম মাওলিনং। ঝর্ণার দেশ মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ের কোলে আকাশে ছড়ানো মেঘের কাছাকাছি ছোট্ট এই গ্রামটি। মেঘালয়ের পশ্চিম খাসি পার্বত্য জেলার এই ছোট্ট গ্রামটিতে বসতি মাত্র ৬০০ জন মানুষের। ডিস্কভার ইন্ডিয়া ম্যাগাজিনের মতে এটাই এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রাম। মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মাওলিনং। বাংলাদেশের তামাবিল সীমান্ত থেকে গাড়িতে করে যেতে এক ঘন্টারও কম সময় লাগে, বলা যায় এটা বাংলাদেশের প্রতিবেশী গ্রাম। এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পৃথক পরিচ্ছন্ন টয়লেট আছে। টয়লেটের ময়লা লেক বা খালের পানিতে পড়তে দেয়া হয় না।
এই গ্রামে বাঁশের তৈরি ডাস্টবিনে সব আবর্জনা সংগ্রহ করা হয়। একটি বড় গর্ত (পিট)-এ এসব আবর্জনা সংগ্রহ করে ভবিষ্যত জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। স্বেচ্ছাসেবীরা নিয়মিত সড়ক ঝাড়ু দেন। রাস্তায় কেউ কখনো ভুলেও আর্বজনা ফেলে না। গ্রামটিতে প্লাস্টিকের যেকোনো সামগ্রী নিষিদ্ধ।
এই পরিচ্ছন্নতার ধারণা এ গ্রামে কবে এলো। এ বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারেনা। তবে একটা ধারণা প্রচলিত আছে, ১৩০ বছর আগে গ্রামে কলেরা দেখা দিয়েছিলো। আর কলেরার বিস্তার ঠেঁকাতে শুরু হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। সেই থেকে শুর, আজো বহমান এই ধারা। এ গ্রামের বাসিন্দারা খাসিয়া নৃগোষ্ঠির মানুষ। এখানে এখনো মাতৃতান্ত্রিক সমাজ।
(২) নির্জন এমন পাহাড়ি সরু পথ ধরে শিলং থেকে যেতে মাওলিনং এর দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। অবশ্য বাংলাদেশের তামাবিল থেকে গেলে দূরত্বটা আমার মনে হয় ২৫ কিলোমিটারের বেশী হবে না।
(৩) মাওলিনং গ্রামে প্রবেশের মুহুর্তেই চোখে পড়বে গাছের উপর এমন মাচা, এখানে উঠে পোরো গ্রামটা পর্যবেক্ষণ করা যায়।
(৪) ২০০৩ সালের পর থেকে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হওয়ার পর ওরা গাড়ি রাখার জন্য একটা পার্কিংও তৈরী করে গ্রামে।
(৫/৬) গ্রামে কোন কাঁচা রাস্তা নাই, পায়ে চলা পথগুলোও সিমেন্টের স্লাব বসানো, আর গাড়ি চলার রাস্তায় কার্পেটিং কিংবা আরসিসি দ্বারা নির্মিত।
(৭) রাস্তার পাশে ময়লা ফেলার জন্য বাঁশের তৈরি ডাস্টবিন রয়েছে অনেক।
(৮) এখানে মাতৃতান্ত্রিক পরিবার বলে পুরুষরাই শিশুদের সামলায়।
(৯/১০) এটাকে গ্রাম না বলে ফুলের বাগান বললেও বেশী বলা হবেনা, প্রতিটা বাড়ির সিমানা বেড়াগুলো সাধারত ফুল গাছ দিয়েই তৈরী।
(১১/১২) বাড়ি ঘরগুলো আলাদা কোন বিশেষত্ব নেই, শুধু পরিচ্ছন্নতার জন্যই ইচ্ছে করবে একটা দিন এখানে থেকে যাই।
(১৩) পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারটা ছোট থাকতেই ওদের মনে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়।
(১৪/১৫) চেনা অচেনা নানা ফুল ফুটে রয়েছে পুরো গ্রাম জুড়ে।
(১৬) খেলায় রত পরিচ্ছন্ন গ্রামের শিশুরা।
(১৭) গ্রামটা ঘুরে দেখে ক্ষিদে লেগে গেলেও সমস্যা নেই, এমন কয়েকটা খাওয়ার হোটেলও এখানে রয়েছে।
(১৮) অর্ডার দিলে আধা ঘন্টার মধ্যেই খাবার রেডি হয়ে যাবে।
(১৯/২০) মাওলিনং গেলে ব্যালেন্সিং রক আর শেকড় ব্রীজটা না দেখে ফেরাটা অবশ্যই ভুল হবে। শেকড় ব্রীজ নিয়া অবশ্য আমার আলাদা একটা পোষ্ট আছে।
(২১) সব শেষে আমি যে মাওলিনংএ গিয়েছি তার প্রমান
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৮:০৬