ভু-স্বর্গ কাশ্মীর ভ্রমণটা আনন্দের হলেও সব সময় আমাদের মনে কাশ্মীর নিয়া একটা ভয় কাজ করে। আর এবার আমরা যখন কাশ্মীর ভ্রমণ শুরু করলাম তখন ভারতে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে কাশ্মীরে একজন ট্রাক ড্রাইভারকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে এবং যেদিন জম্মুতে নামলাম সেদিন ওখানে চলছে অবরোধ। এ যেনো ভয়ের ষোলকলা পূর্ণ হলো। তবে সেটাই হয়েছিলো আমাদের জন্য শাপে বর, আমাদের ড্রাইভার সাহিল জম্মু শ্রীনগর হাইওয়ের বদলে এমন এক রাস্তা ধরে আমাদেরকে পেহেলগাম নিয়ে গিয়েছিলো তাকে বিনা দ্বিধায় বলা চলে স্বর্গের পথ। কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি দৃষ্টি নন্দন মোগল গার্ডেন রয়েছে, তিনটি গার্ডেন দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। আগে আমি পোষ্ট দিয়েছিলাম মোগল গার্ডেন চশমেশাহীকে নিয়ে। আজকের পোষ্ট মোঘল গার্ডেন নিশাতবাগকে নিয়ে।
কাশ্মীরের বিখ্যাত ডাল লেকের পূর্ব পাড়ে পীর পাঞ্জাল রেঞ্জের জাবারওয়ান পর্বতের পাদদেশে মোগলদের একটি বিখ্যাত গার্ডেন হলো নিশাত বাগ। মোগল গার্ডেনগুলো দেখলে চমৎকৃত হবেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুস্কর। এই মোগল গার্ডেন গুলো সবই পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে, ক্রমান্বয়ে পিছনের দিকটা উঁচুতে উঠে গেছে, আর সেখান থেকে পাহাড়ি ঝর্ণাকে গার্ডেনের ভেতর দিয়ে প্রবাহমান রাখা হয়েছে। নিশাত বাগ ডাল লেকের পাড়ে হওয়ার এর সর্বশেষ পানিগুলো ডাল লেককে অবিরত পানির জোগান দিয়ে যাচ্ছে।
তো এবার আমার ক্যামেরায় দেখে নেই সেই বিখ্যাত মোগল গার্ডেন নিশাতবাগ কে।
(২) নিশাতবাগে ঢোকার আগে ডাল লেকের পাড়ের রাস্তায় দাড়িয়ে গার্ডেনটাকে এমনই দেখায়।
(৩) মোগল গার্ডেন গুলো সবই পাহাড়ের ঢালে তৈরি করা হয়েছে, ক্রমান্বয়ে পিছনের দিকটা উঁচুতে উঠে গেছে, আর সেখান থেকে পাহাড়ি ঝর্ণাকে গার্ডেনের ভেতর দিয়ে প্রবাহমান রাখা হয়েছে। তাই প্রথমেই সিড়ি বেয়ে আমাদেরকে উপরের দিকে উঠতে হচ্ছে।
(৪/৫) গার্ডেনে ঢুকে প্রথমেই প্রিয়াংকার রূপ দেখে মুগ্ধ হতেই হবে।
(৬) আর সদ্য বৃষ্টিস্নাত কাশ্মীরি গোলাপের কথাটা নাইবা বললাম।
(৭) রয়েছে আমাদের দেশী ফুল ডালিয়াও।
(৮) প্রত্যেকটা মোগল গার্ডেনেই এই গাছগুলো রয়েছে, নাম জানিনা, দেখতে অনেকটা বনসাইয়ের মতো।
(৯/১০) সরু লনগুলোর দুই পাশেই নাম জানা অজানা নানা রঙের ফুলের বাহার দেখে নিজের অজান্তেই মোগলদের প্রশংসা করতেই হয়।
(১১) এমন সুন্দর স্মৃতি কার না ধরে রাখতে ইচ্ছে করে।
(১২) নিশাতবাগের মাঝখানে দাড়িয়ে পূর্ব দিকে ক্যামেরা তাক করলে ক্রমান্বয়ে উঁচু হয়ে যাওয়া বাগানের শেষটা দেখা যায় মেঘে ঢাকা জাবারওয়ান পর্বতের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়েছে।
(১৩) আর পশ্চিম দিকে ঘুরে গেলে দেখা যাবে বাগানের শেষ মাথায় দেখা যাচ্ছে চমৎকার ডাল লেক, যার টলটলে জলে পর্যটকরা শিকারা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
(১৪) নিশাতবাগে একটু জিরিয়ে নিতে চাইলে পর্যটকদের জন্য রয়েছে এমন সুন্দর ব্যবস্থা।
(১৫) উদয়পদ্ম গাছটা নিশাতবাগেই আমি প্রথম দেখেছি, কিন্তু ফুল দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
(১৬) তবে উদয়পদ্মের ফলটা ঠিকই দেখা হয়েছে।
(১৭/১৮) ম্যাপল গাছগুলো থেকে ঝড়ে যাওয়া লাল পাতাগুলো সবুজ ঘাসের উপর বিছিয়ে থাকায় যেন একটা অপ্রার্থিব সৌন্দর্য্যের সৃষ্টি হয়েছিলো নিশাতবাগে।
(১৯) নিশাতবাগ থেকে যখন বের হই তখন সন্ধ্যার আঁধার প্রায় ঘনিয়ে এসেছে, ডাল লেকের পড়ে একটা পাহাড় চুড়ায় দেখা যাচ্ছে মোগলদের একটা দূর্ঘ, যা এখন কারাগার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
(২০) ডাল লেকের পাড়ের ফুটপাতের এই দোকানী থেকে কিছু বাদাম কিনে ড্রাইভার সাহিলকে নিয়ে ছুটলাম পরবর্তি গন্তব্যে........
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৩৭