আজ ঈদ আড্ডা জমে উঠলো ...ক্রমান্বয়ে এই জমজমাট আড্ডার লাভা জমাট আড্ডাকে আরও স্ফুটনাঙ্কে নিয়ে গেল । আমার এক বন্ধুর প্রতিবেশী বৃদ্ধ যুগল তুমুল ঝগড়ায় লিপ্ত কে কারে হারাতে পারে যেন তারই প্রতিযোগিতা । ওরা ইতালিয়ান । বুড়োর বয়স ৯৩ , আর বুড়ি ৮৩ । পরের দিন বুড়ো খুব হাসি হাসি মুখ করে বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলো, “আমাদের ঝগড়া শুনেছ !” বন্ধু কিছুটা অবাক হয়ে বলল, “এতদিন তোমরা আমাদের প্রতিবেশি এরকম ঝগড়া আগে তো কখনো শুনিনি। বুড়ো মিটি মিটি হাসি মুখে বলল, “শোন তাহলে আমাদের ঝগড়ার রহস্যময় কাহিনী । আমি বউকে বললাম, “আমরা তো এক ঘেয়ে জীবন যাপন করছি অনেক দিন হোল । চল আমরা একদিনের জন্য আমাদের তরুন প্রেমিক জীবনে ফিরে যাই । আমরা পরস্পরকে উপহার দেয়া প্রথম পোশাক পরে সেই জায়গা যাব যেখানে চার্চ থেকে মন্ত্র পড়ে আমাদের যুগল জীবনের আদর সাথে টিউলিপ বিনিময় করেছি। আর পাশাপাশি আমাদের পুরান প্রেম একটু ঝালিয়ে নেয়া যাবে ।" যেই কথা সেই কাজ । বুড়ো খুবই গোপনে এক গোছা টিউলিপ কিনে লুকিয়ে রাখল পরের দিনের জন্য । প্রেমিক বুড়ো গুন গুন সুরে গান ভাঁজতে ভাঁজতে পরের দিনের স্বপ্নে বিভোর হোল । পরদিন কথামত পোশাক পরে সুঘ্রাণ মেখে পার্কের নির্দিষ্ট বেঞ্চে বসে ফুলসহ বুড়ো বুড়ির প্রতীক্ষায় গভীর আবেগে অপেক্ষায় থাকলো । দশটা বাজল এগারটা বেজে দুপুরে খাবার সময় পেরিয়ে গেল । বুড়ির টিকিটি নেই । দেজুনে ( ফ্রেঞ্চ এ লাঞ্চ কে déjeuner বলে) এর সময় পেরিয়ে ক্ষুধার্থ ক্ষুব্ধ বুড়ো বাড়ি ফিরে দেখল বুড়ি রান্নায় ভীষণ ব্যস্ত । রান্নার রেগুলার মেন্যু ছাড়াও দীর্ঘ মেন্যু দর্শনে হতবাক বুড়ো ক্ষেপে বুড়ির সাত গুষ্ঠি উদ্ধার করল ।
বুড়ি ততোধিক জোরে গলা চড়িয়ে বলল , “ দেখ, আমার মা এগুলো রান্না করতে বলেছে ! “ শুনে বুড়ো ভাবল বুড়ির এ এক ধরনের ফাজলামো । বুড়ি কথা অন্য দিকে ঘুরাতে চাইছে । বুড়ো গলা চড়াল সপ্তমে ! বুড়িও চেঁচিয়ে প্রতিউত্তর দিল “ আজ থেকে ৭০ বছর আগে আমার প্রেমিকের সাথে আমার ডেটিং ছিল । আমার মা জানতে পেরে আমাকে কৌশলে যেতে না দিয়ে তাঁকে রান্নায় হেল্প করতে বাধ্য করে । সেদিন যদি রান্নার প্যাঁচে না পড়ে আমি যেতে পারতাম তাহলে আজ তোমার ঘর করতে হত না !“
ঈদ এর দারুণ মজাদার রান্নার আকর্ষণীয় আইটেমের মত সবার জীবন যেন নির্ঝঞ্ঝাট, প্যাঁচ মুক্ত, সুস্বাদু, রসাল হয়, শুভ কামনা সব্বাইকে ।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:৫২