আট)
১৪ মার্চ শেখ মুজিব ঘোষণা করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা করতে প্রস্তুত। অতপর ১৫ মার্চই ইয়াহিয়া খান ঢাকা চলে আসেন এবং ১৬ মার্চ ১১টায় জেনারেল ইয়াহিয়া ও শেখ মুজিব দেড় ঘন্টা কোন সাহায্যকারী ছাড়া 'রুদ্ধদ্বার' বৈঠক করেন। ১৭ মার্চ একই ভাবে একান্ত বৈঠক হয়- সাহায্যকারী ছাড়া। মুজিব- ইয়াহিয়া তৃতীয় দফা 'রুদ্ধদ্বার' বৈঠক হয় ১৯ মার্চ শুক্রবার। এ দিন রাতে দুই পক্ষের ৩ জন করে উপদেষ্টা আলাদা বৈঠকে মিলিত হন। পরদিন অথ্যাৎ ২০ মার্চ শনিবার আওয়ামীলীগের ৬ জন শীর্ষস্থানীয় সহকর্মী নিয়ে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে ১৩০ মিনিট আলোচনা করেন এবং পরে তাঁর বাসভবনে সাংবাদিকদের শেখ মুজিব বলেন, "আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।" তিনি বলেন, "রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পথে তিনি এগুচ্ছেন।" ২১ মার্চ ভুট্টো ঢাকা আসেন ১২ জন উপদেষ্টা নিয়ে। জেনারেল ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা শেষে সাবংবাদিকদের তিনি বলেন, "সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।" ২২ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ২৫ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষনা করেন। এ সংক্রান্ত দৈনিক পূর্বদেশের প্রতিবেদনটি লক্ষণীয়:
'গতকাল সোমবার ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে মুজিব-ভুট্টো-ইয়াহিয়া বৈঠক চলাকালে প্রেসিডেন্ট জনসংযোগ অফিসার বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে প্রেসিডেন্টের উপরোক্ত ঘোষণা প্রকাশ করেন।'
অর্থটা পরিষ্কার। আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং মুজিব-ভুট্টো-ইয়াহিয়ার সমঝোতার ভিত্তিতেই জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে। লক্ষনীয়, গোলমালটা কিন্তি লেগেছিলো জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা নিয়েই। প্রথমবার স্থগিতে ছিল আপত্তি। এবার সম্মতি। একই দিনে জেনারেল ইয়াহিয়ার উপদেষ্টা হিশাবে আগত বিশিষ্ট আইনজীবী এ কে ব্রোহী লিখিতভাবে মতামত দেন যে, সামরিক আইন প্রত্যাহার ও ক্ষমতা হস্তান্তরে কোন আইনগত বাধা নেই।
---
সচলায়তন
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০০৭ দুপুর ২:৩৭