সাইবার ক্রাইম সর্বনাশ ডেকে এনেছে পল্লীবধূ মানসুরার সংসারে। স্বামী ও সংসারের সবাই এখন তাকে দেখছে সন্দেহের চোখে। লজ্জায় মুখ দেখাতে পারছেন না মানসুরা। এখন কি করবেন তিনি বলেন, এ মুখ আমি আর দেখাতে চাই না।
এ জীবনে বেঁচে থেকেই কি লাভ? মানসুরার নামে রয়েছে ই-মেইল একাউন্ট। আর সেখানে লেখা- হাই! আই এম কলগার্ল। অল সো উইথ মি। এভাবে ওপেন সেক্সের আহ্বান মানসুরার নামে। সঙ্গে দেয়া হয়েছে আকর্ষণীয় ছবি। ফোন নাম্বার দেয়া হয়েছে মানসুরার স্বামীর। আর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যে ফোন নাম্বারে দিন রাত আসছে ফোন। ফোন করে লোকজন জানতে চাচ্ছে, কোথায়, কিভাবে তাকে পাওয়া যাবে? এসব প্রশ্নে বিব্রত মানসুরার স্বামী কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। ঘটনা জানান মানসুরাকে। তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। পিরোজপুরের এক গ্রামের দরিদ্র ঘরের কন্যা মানসুরা। এসএসসি পাস করে একটি হাসপাতালে নার্সের চাকরি নেন। এক আনসার সদস্যের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ইতিমধ্যে তার ঘরে আসে দু’সন্তান। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু কে বা কারা মানসুরার ছবি সংগ্রহ করে ইয়াহু একাউন্টে ট্যাগ বন্ধুদের আহ্বান জানাচ্ছে ওপেন সেক্সের? মানসুরার বাড়িতে বিদ্যুৎ পর্যন্ত নেই। জানেন না ই-মেইল কি? অথচ তার নাম, মোবাইল ফোন নম্বর ও ছবি ব্যবহার করে একটি চক্র ওপেন সেক্সের আহ্বান জানিয়েছে। গড়ে তুলেছে মানসুরার নাম দিয়ে একটি সেক্স সার্ভিস। বরিশালের সহকারী পুলিশ কমিশনার এ ঘটনাকে অপরাধমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছেন। মানসুরার স্বামী আজাদ জানান, ১০/১২ দিন আগে তার মোবাইল ফোনে একটি ফোন আসে। জিজ্ঞাসা করা হয় মানসুরার কথা। একটু অস্বস্তি লাগলেও মানসুরাকে জানান তিনি। এরপর আসতে থাকে একের পর এক ফোন। আজাদ জানান, তারা ইন্টারনেট বা সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। মানসুরার ছবি দিয়ে কেউ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়ে প্রকাশ্যে সেক্সের আহ্বান করেছে; বিষয়টি জেনে মান ইজ্জতের কথা ভেবে এ দম্পতি এখন দিশেহারা। ইন্টারনেটে বিষয়টি এ প্রতিবেদকের নজরে আসে ৪/৫ দিন আগে। গ্রাম্য এক সরল বধূর ছবি ছবি দিয়ে ইয়াহুর ট্যাগে প্রকাশ্যে সেক্সের আহ্বান আর ছবি চমকে ওঠার মত ঘটনা। এখানে দেখা যায় ত্রিশোর্ধ্ব মানসুরার নিজের ও তার তিন বোনের পরিচয় দিয়ে সেক্স সার্ভিস খোলা হয়েছে। নাম দিয়েছে মানসুরা সেক্স সার্ভিস। ১০০০ টাকা ও ২ হাজার টাকা দিয়ে এক রাতের জন্য তার ট্যাগ বন্ধুদের আহ্বান জানাচ্ছে সে। মানসুরার পরিচয়ে লেখা হয়েছে- হাই এম নুরেস মানসুরা খানম। প্রযত্নে আবদুর রাজ্জাক। গ্রাম ও পোস্ট অফিসের নাম দিয়ে জেলা পিরোজপুর লেখা রয়েছে। আরও বলা হয়েছে- আই এম কলগার্ল। অল সো উইথ মি। আই হেভ থ্রি স্মল সিস্টার ১. মিস ডলি ২. মিস মিলি ৩. মিস শাহনাজ। তাদের বয়স উলেস্নখ করা হয়েছে ১৬ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। সেখানে তিনটি ফোন নাম্বারও দেয়া হয়েছে। এ ট্যাগ এরই মধ্যে এনেছে ব্যাপক সাড়া। সুদূর আমেরিকা কিংবা ঢাকার অনেকেই সান্নিধ্য পেতে এবং তার সঙ্গে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতে আগ্রহ জানিয়েছে। কিন্তু কোথায় মানসুরা? মানসুরার স্বামী জানান, এরই মধ্যে তাদের মোবাইল ফোনের দুটি নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। শুধুমাত্র তার নম্বরটি অব্যাহত রাখা হয়েছে। কেননা, চাকরির কারণে এ নম্বরটি বদল করা সম্ভব হচ্ছে না। কিভাবে এটি হয়েছে আর কিভাবে দুর্বৃত্তরা মানসুরার ছবি পেয়েছে তা নিয়ে তারাও ভেবে কূল পাচ্ছে না। তবে মানসুরার স্বামীর সন্দেহ তাদের এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় এখন বিদেশ থাকে। এটা তার কাজ হতে পারে। মানসুরা জানান, তাদের একটি লাগেজ ঢাকায় বাসে হারিয়ে যায়, যাতে তাদের ফটো এলবাম ও ডায়েরি ছিল। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, মানসুরাকে স্কুলজীবনে এক যুবক বিয়ে করতে চেয়েছিল। ব্যর্থ হয়ে সে এই কাজ করতে পারে। এ ব্যাপারে বরিশাল মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার জানান, বিষয়টি খুবই পরিষ্কার। গৃহবধূ যদি নিজে এর সঙ্গে জড়িত থাকত তবে তার বাড়ির ঠিকানা, বাবার নাম, স্বামীর নাম দিত না। এগুলো সাধারণত ব্যর্থ প্রেমিক বা পারিবারিক শত্রুরা করে। তবে যেই করুক ইন্টারনেটে তার দক্ষতা রয়েছে। তিনি জানান, এভাবে একটি পরিবারের মান সম্মান নিয়ে খেলা অপরাধ। মানসুরার বা তার স্বামী যদি পুলিশের সাহায্য চান তবে অবশ্যই দেয়া হবে
সম্পূর্ণটি এখান থেকে নেয়া।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১০:২০