somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার জীবনের ঘটে যাওয়া একটা আস্বাভাবিক ঘটনা..........

১৯ শে অক্টোবর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কোথায় যেন পড়েছিলাম একজন মানুষ তার জীবনে নাকি অনন্ত একবার আস্বাভাবিক ঘটনার সন্মুখিন হয়। আমিও একবার এমন একটা ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। আবশ্যই এর পিছনে কোন যুক্তি সংগত কারণ ছিল, যা তখন বুঝিনি, এখনও বুঝিনা। ঘটনাটা বলেই ফেলি, আবশ্য এর আগে যত জনকে বলে ছিলাম কেউই বিশ্বাস করেনি, উল্টা হাসাহাসি করেছে। এবারো তাই হবে মনে হয়।:|

সময়টা ছিল ২০০০ এর মাঝামাঝি, আমরা প্রথমবর্ষের মাঠকর্মের অংশ হিসেবে গিয়েছিলাম গাজীপুরের কাপাসীয়ায়।পাঁচ দিনের ট্যুর, তাই থাকার জায়গা হিসেবে নির্দিস্ট করা হয়েছিল গাজীপুর ধান গবেষনা ইনিস্টিটিউটের ডর্মেটরি। তৃতীয় তলায় স্যারদের রুম মাঝ খানে, দুই পাশে ছেলে মেয়েদের জন্য দুটি করে রুম নেয়া হয়েছিল। এখানেই আমি সেই আস্বস্স্থিকর ঘটনার সন্মুখিন হয়েছিলাম।

সময়টা সম্ভবত সেপ্টম্বরের শেষ দিক, ডর্মেটরিরতে পৌছতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। তাই একটু ঘুরা ঘুরি করে আমারা সবাই স্যারদের রুমে এক সাথে বসলাম। পরদিন ভোর বেলার যাত্রা শুরু করতে হবে, তার আগে স্যারদের ছোটখাট ব্রিফিং, গ্রুপ ভাগ করা, কাজ নির্দিস্ট করা ইত্যাদি হাবিজাবি করতে করতে নয়টা বেজে গেল।

আমাদের মাঠকর্মে কায়িক পরিশ্রম বেশি তাই তারাতারি ডিনার করে ঘুম দেবার নিয়ম। একারণে দশটার দিকে যার যার রুমে সাবই চলে গেলাম।
একটা একটা রুমে পাঁচটি করে বেড ছিল। টুকটাক কথা বলতে বলতে রাত প্রায় এগারোটার দিকে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম।
কি কারণে যেন ঘুমাটা ভেঙ্গে গেল, ঘড়িতে তে দেখলাম ১টা বাজে। আমার বিছানাটা ছিল জানালার পাশে। জানালা গলে সুন্দর জোস্না ছড়িয়ে পড়ছিল বিছানা আর মেঝেতে, থেমে থেমে ঝি ঝি পোকা ঢাকছে। ঘুম আসছিলনা, এমন সময় হঠাৎ করে মনে হলো ঘুংগুরের শব্দ বেজে উঠলো দরজার কাছ থেকে। আপেক্ষা করে রইলাম আবার হয় কিনা শোনার জন্য, ৫/৬ মিনিট কোন শব্দ নেই, ঝি ঝি পোকা গুলোও ডাকছে না। তারপর আবার সেই শব্দ শুরু হলো, এবার মনে হলো কেউ হেটে হেটে বারান্দার এমাথা থেকে ও মাথায় যাচ্ছে। এক মূহুর্তের জন্যও থামছে না, সেই মূহু্র্ত গুলোর কথা আমি সারা জীবনেও ভুলবোনা। এত ভয় পেয়েছিলাম মনে হচ্ছিল ভয়ংকর কোন কিছু দরজার ভেদ করে এই পাশে চলে আসবে। গলা শুকিয়ে কাঠ, বিছানার চাদর তুলে সারা গা মাথা ঢেকে শুয়ে আছি, কাউকে ডাকতেও পারছিনা। মনে হচ্ছিল আমি কোন শব্দ করলেই ঘুংগুরের মালিক শব্দের উৎস খুজতে চলে আসবে। এভাবে বেশ কিছুক্ষন থাকার পর পাশের বেডে বন্ধু নুপূরকে ফিস ফিস করে বলালম, তুই কি কোন কিছু শুনছিস? উত্তরে সে ধর মর করে আমার বিছানায় চলে আসলো। সে ও নাকি শুরু থেকেই শুনছিল।আর ওদিকে সারা রাত জুড়ে চললো বারান্দায় ঘুংগুর পরা পায়ের পায়চারি। আমরা ভয়ে আবসন্ন হয়ে সারা রাত জেগে কাটালাম।

পরদিন সকাল বেলা রাতের ঘটনা বললাম সবাইকে এবং বলে হাস্যস্পদ হলাম।সারাদিন চললো কাজের ফাকে ফাকে শব্দের নানা রকম ব্যাখ্যা, এত রাগ লাগছিল। সেদিন কাজ সেরে ফিরতে রাত হয়ে গেল। সারা দিন ঘুংগুড়ওয়ালীর কথা ভুলে থাকলেও, দূর থেকে আন্ধকার ডর্মেটরিটাকে দেখে গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো।
গোসল করে খেয়ে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে সারা দিন কি কি কাজ হোল, কি কি পাওয়া গেল এসব বিশ্লেষণ করতে করতে আনেক রাত হয়ে গেল। এবার রুমে আমরা পাঁচ জন সেই সাথে আমাদের আরো দুই বন্ধু ছিল। সাবাই মিলে কথা বলছি, এমন সময় আবার সেই শব্দ, দূরে যাচ্ছে আবার কাছে আসছে। সাবাই যে আমরা ঘুংগুরের শব্দটা শুনছি, তা সবার ফ্যাকাসে মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছিল।
অনেকক্ষণ আমরা স্থানুর মতো বসে রইলাম। তারপর আমদের মধ্যে সাহসী দুজন দরজা খুলে বারান্দায় উঁকি দিল, সাথে সাথে শব্দ ব্ন্ধ, বারান্দায় কেউ নেই।
সেই রাত টাও আমাদের নির্ঘুম কাটলো। এর পরে আমারা চার দিন ছিলাম প্রতি রাতেই একই ঘটনা ঘটেছে, আর আমাদের রূমে যারা থেকেছে তারাই শুধু শুনতে পেয়েছে। পরের দিকে আর তেমন ভ্য় লাগতোনা, নেশার মতো আমরা আপেক্ষা করতাম কখন শব্দটা শুরু হয়।
জানি না কিসের শব্দ ছিল ওটা, আমরা নিজেরা এটা নিয়ে আর কখনো কোন আলোচনা করিনি/:)/:)/:)
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১:৩৪
৬১টি মন্তব্য ৬১টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×