এইখানে তোর দাদীর ব্লগ, নাম হলো তার সামু;
কত দিন যে করেছে ব্লগিং সেইটা কি আর কমু!
এতটুকু হতে, ব্লগেনু হেতে, ক্ষুধা পেটে নিয়ে ভুখ;
একটা পোস্ট তার হিট না হইলে পেত যে কতই দুখ!
এখানে ওখানে কত দিক হতে তথ্য আনিয়া ঘেটে,
তারপর সেটা সাঁজিয়ে গুছিয়ে পোস্ট করিত নেটে।
অনেক সময় পোস্ট দিতে গিয়ে এমবি হইতো শেষ,
তখন আবার আমি ছুটিতাম দোকানের দিকে বেশ।
একজিবি নেট কিনিতে গিয়া নাজেহাল হইতাম কত,
এইটা দেখিয়া শাশুমা আমার তামাশা করিত শত।
এমনই করিয়া, ব্লগাইতে গিয়া, কত স্মৃতি গেছে মিশে;
ছোট খাটো তার দাবি মিটাইতে হারা হয়ে গেনু দিশে।
বাপের বাড়িতে যাইবার কালে শাসাইয়া যাইতো মোরে,
সপ্তাহে যদি লোড করে না দাও, থাকিতে দিবো না ঘরে!
ঝন্টুর হাটে কদবেল বেচি যা কিছু হইতো পুঁজি,
লোড দিতে মোর হইতো না দেরি, কষ্টে দোকান খুঁজি।
শুধুই কি লোড? আরো কত নোট, লইয়া নিজের গাঁটে;
হুটপাট করে ছুটিয়া যাইতাম শশুর বাড়ির বাটে।
কেঁদো না কেঁদো না শোন দাদু সেই লোড-নোট গুলি পেয়ে,
দাদী যে তোমার কত ঝাঁড়ি দিতো দেখতিস যদি চেয়ে!
আঙুল তুলিয়া, ভেংচি কাটিয়া, কহিতো আমারে 'বুদ্দ',
আর একদিন দেরি করিলেই লাগাইয়া দিতাম যুদ্ধ।
ঝুঁটি নেড়ে নেড়ে, আসিতো সে তেড়ে, আমারই মুখের পানে;
ভয় পেয়ে আমি লুকাইয়া যাইতাম হয়তো ঘরের কোনে।
ঊরে-ঊরে-ঊরে, কেমনে সে মারে, দুড়ুম দাড়াম কিল;
মাঝে মাঝে তার হাত ব্যাথা হলে খুলিয়া আনিতো খিল।
কেমনে তোমারে বলিযে সে কথা, তুমি তো এখনো ছোট,
শীতের রাতে বাহিরে রাখিতো করিতো সে খটোমটো।
যেই সামু নিয়া, আমারে রাখিয়া, করিতো কতযে ছল;
সেইখানে তুই আইডি খুলবি, সাহস দিছে কে বল?
নিশ্চই সেই ডাইনি বুড়িটা লেগেছে তোর ঐ পিছে,
একদম তুই শুনবিনা কথা এখানে সব যে মিছে।
আমি মরিয়াছি তাই বলে তোরে মারিবোনা অথৈ জলে,
দরকার হলে দুইজন মিলে ডুবিয়া মরিবো খালে।
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়;
সামুতে যেন, কোন কালে মোর আইডি খুলিতে না হয়!
কবিতা রচনার পেক্ষাপটঃ-
সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন ব্লগিংয়ের অঙ্গিকারকে সামনে রেখে গত ১১ ই ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত আনুমানিক ১০:৪৫ মিনিটে সামহোয়্যার ইন ব্লগে "দ্যা রয়েল বেঙ্গল টাইগার" নামে আমার প্রথম পদ যাত্রা শুরু হয়। এবং কোন রকমের বিরতি ছাড়াই আমি আমার পদযাত্রাকে অব্যাহত রেখে দীপ্ত পদক্ষেপে সম্মুখ পানে এগিয়ে যেতে থাকি। যার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাত আনুমানিক ১২:০৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে সামহোয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষের বিশেষ অনুগ্রহে আমি প্রথম পাতায় পোস্ট প্রকাশের অনুমতি পাই।
ঠিক সেই সময়ে আমার অনুভুতির কথাটা আর আমি আপনাদেরকে না বলি। তবে আমি এতটাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলাম যে, সাথে সাথে আমি মুখে 'কি আছে জীবনে আমার........' গাইতে গাইতে ডান হাতে খাতা-কলম এবং বাম পাশে পল্লীকবি জসিম উদ্দীনের 'কবর' কবিতার পুস্তক খানা নিয়ে 'ইয়া আলী........' বলে কবিতা রচনায় মনোনিবেশ করিলাম। এবং প্রায় সুদীর্ঘ সাড়ে দেড় ঘন্টার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং ধস্তাধস্তির পরে আমি উপরে উল্লেখিত কবিতাটি রচনা করতে সক্ষম হইলাম। আর কবিতাটি রচনা করার পর আমার মনে মনে যেন বলিতে ইচ্ছা হলো- "আমি পাইলাম, সামহোয়্যার ইন ব্লগের প্রথম পাতায় পোস্ট প্রকাশের অনুমতি পাইলাম........."।
কবিতাটি লেখার পরে আমার মনে হলো, যদি জসিম ভাই বেঁচে থাকতে আমার এই কবিতা খানা পড়তেন। তাহলে নিশ্চিত তিনি তার সুনামধন্য "কবর" কবিতার এমন জগাখিচুড়ি জেরক্সকপি ভাব দেখে, আত্মহত্যা করার জন্য আমার সকল সহ ব্লগারদের কাছে তার কৌশল সম্পর্কে জানতে চাইতেন। আর পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করতো একজন নিরাপরাধ মানুষকে আত্মহত্যার দিকে উদ্ভুদ্ধ করার দ্বায়ে। কিন্তু কি আর করবো, ব্লগার যখন হয়েছি তখন লিখতে তো হবেই। তাই সকল দুস্ককে মাটিচাপা দিয়ে অবশেষে কবিতা খানা প্রকাশই করে দিলাম। পল্লীকবির ভক্তরা দয়া করে আমাকে কেউ গালি দিবেন না! আমি নিরুপায়!
যাহোক, সামহোয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে আমার পক্ষথেকে আন্তরিক ধন্যবাদ আমাকে প্রথম পাতায় এক্সেস দেওয়ার জন্য। এবং সেই সাথে সাথে আমার সকল সহ ব্লগার ভাইয়ুউউউউউউউ এবং আপুনিইইইইইইই দেরকে জানাচ্ছি হ্যাপি ব্লগিং। সবাইকে মিষ্টির দাওয়াত ও দিলাম। যে যেখানে আছেন সেখানের কোন একটা পরিচিত মিষ্টির দোকান/হোটেলে গিয়ে আমার নাম করে আপনারা কোন রকম দ্বিধা দ্বন্দ ছাড়াই যত খুশি তত মিষ্টি খেতে পারেন। নো প্রবলেম!
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ- মিষ্টি খেয়ে বেরিয়ে আসার সময় দয়া করে বিলটা পরিশোধ করে আসবেন। কারণ বিল পরিশোধিত না হলে যদি দোকানদার আপনাদের সাথে কোন ধরনের খারাপ ব্যবহার করে, তাহলে সেক্ষেত্রে লেখক কোন ক্রমেই দ্বায়ী থাকবে না।
ধন্যবাদ সবাইকে! হ্যাপি ব্লগিং.........
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১